কানাডার শিল্পমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস-ফিলিপ শ্যাম্পেন কুইবেকের অর্থনীতি এবং উদ্ভাবন মন্ত্রী পিয়েরে ফিটজগিবনের সাথে হাত মেলাচ্ছেন

হাসান আমিন : কুইবেকে ৪০০ কোটি ডলার ব্যয়ে একটি সবুজ হাইড্রোজেন কারখানা তৈরি করতে যাচ্ছে কানাডা। প্রকল্পটি পেয়েছে বেলজিয়ামের কোম্পানি ট্রি এনার্জি সলিউশন (টিইএস)। এখানে সবুজ হাইড্রোজেনের সঙ্গে প্রাকৃতিক সিন্থেটিক গ্যাস উৎপাদন করা হবে। এ প্রকল্প ২০০টি স্থায়ী কর্মসংস্থানের যোগান দেবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রদেশের কার্বন নির্গমন ৩% হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে। টিইএস কানাডা ও দেশের শিল্পমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোইস-ফিলিপ শ্যাম্পেন যৌথভাবে গত ১০ নভেম্বর, শুক্রবার এই প্রকল্পের বিষয়ে একটি ঘোষণা দেয়।

টিইএস ২০২৮ সালের মধ্যে বছরে ৭০ হাজার টন সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন করবে। কুইবেকে কারখানাটি স্থাপন করা হবে। এটা এখন পর্যন্ত কানাডার সবচেয়ে বড় পরিবেশবান্ধব প্রকল্প। উৎপাদন কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে ‘বৈদ্যুতিক প্রাকৃতিক গ্যাস’। এটি দূষণমুক্ত ভবিষ্যতের জ্বালানি। এটি ঘন কার্বন ও সবুজ হাইড্রোজেনের মিশ্রণে তৈরি করা হয়।

টিইএসের প্রধান নির্বাহী মার্কো আলভেরা বলেন, ‘সস্তা জলবিদ্যুৎ, জ্বালানি চাহিদা ও কর রেয়াত কানাডাকে প্রকল্পের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। কানাডা সরকারের পরিকল্পিত কর রেয়াত সত্যি গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর রেয়াত করতে পারে না, যেটা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পারে। এ পদ্ধতি ব্যবসাবান্ধব।’ তবে কানাডিয়ান কর্মকর্তারাও স্বীকার করেন, দেশটি ২০৩০ সালে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নাও করতে পারে। কানাডার ফেডারেল সরকার কার্বন কর চালু করেছে। তবে দেশটি এখনো বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী হিসেবে রয়ে গেছে।

স¤প্রতি টোটাল এনার্জিস ও টিইএস যুক্তরাষ্ট্রে ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে প্রাকৃতিক সিন্থেটিক গ্যাস প্লান্ট স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। টিইএস আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী এক ডজন প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করে জল বিভক্ত করে উৎপাদন হয় সবুজ হাইড্রোজেন। ভারী শিল্পকে কার্বনশূন্য করার ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করা হয়। কানাডা স্বচ্ছ হাইড্রোজেনের ওপর বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। অর্ধশতাব্দীর মধ্যে ৩০ শতাংশ জ্বালানি হাইড্রোজেন থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।

প্রাকৃতিক সিন্থেটিক গ্যাস গঠনগতভাবে প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুরূপ। এটা বিদ্যমান অবকাঠামোয় ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও এটা উৎপাদনের খরচ নিয়ে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।

কার্বন ঘন করার প্রযুক্তি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। দীর্ঘকাল ধরে এটা শূন্য কার্বনের জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়েছে। একই সঙ্গে এটি ব্যয়বহুল। ভর্তুকি সত্তে¡ও সহজপ্রাপ্য হয়ে ওঠেনি।

টিইএস বিশ্বাস করে, জ্বালানি তেলচালিত ইঞ্জিনের ওপর ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের চাহিদা দিন দিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোম্পানিটির একটি লক্ষ্য হচ্ছে জ্বালানি তেলের চেয়ে সবুজ হাইড্রোজেনকে সস্তা করা। সূত্র : রয়টার্স