আহসান রাজীব বুলবুল, কানাডা : কানাডায় বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে পণ্য এবং সেবাখাতে ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড’-কে জনপ্রিয় করে তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেজন্য পণ্য এবং সেবার গুণগত মানোন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। কানাডার বাজারে টিকে থাকতে হলে গুনে মানে কানাডার স্ট্যান্ডার্ডে নিজেদের উন্নীত করতে হবে। ‘কানাডায় বাংলাদেশী ব্র্যান্ড, কেন নয়’-শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় সংশ্লিষ্টখাতের প্রতিনিধিরা এই মতামত দিয়েছেন।
কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ‘শওগাত আলী লাইভ’-এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বুধবার (২৬ মে) রাতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী ফায়েজ নুর ময়না, প্রকৌশলী রাশিদুল হাসান এবং আইনজীবি ব্যারিষ্টার ওমর হাসান আল জাহিদ।
ব্যবসায়ী ফায়েজ নুর ময়না কানাডায় ব্যবসায়ী এবং পেশাজীবীদের সেবার মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্বস্তিএবং অসন্তোষ আছে বলে জানান। তিনি বলেন, এই অস্বস্থি এবং অসন্তোষ দুর করা না গেলে বাংলাদেশি পণ্য বা সেবাকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।
তিনি আরও বলেন, কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটি বড় হচ্ছে, তারা নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরছে। ফলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। তিনি কানাডীয়ান নিয়ম কানুন সম্পর্কে পড়াশোনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা না থাকলে নিজের ব্যবসাকেই টিকিয়ে রাখা যাবে না।
প্রকৌশলী রাশিদুল হাসান পেশাদারিত্ব এবং গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নের তাগিদ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশিসহ এথনিক গ্রোসারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলোকে এখন ওয়ালমার্ট, নোফ্রিল, মেট্টোর মতো সুপারস্টোরগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে। পণ্যে এবং গ্রাহকসেবার মানোন্নয়ন না করা গেলে এই প্রতিযোগিতায় তারা টিকে থাকতে পারবে না।
আইনজীবী ব্যারিষ্টার ওমর হাসান আল জাহিদ বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটিকে কেবল চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসার দিকে মনোযোগী হওয়া উচিৎ। যে ব্যবসাগুলো এক সময় গ্রীক, ইতালীয়ানদের দখলে ছিলো সেগুলো এখন ভারতীয় এবং শ্রীলংকানদের আধিপত্য। বাংলাদেশিরা সেই ভাবে ব্যবসায় এগিয়ে আসেনি।
তিনি বাংলাদেশি ব্যবসা এবং পেশাজীবীদের গ্রাহক সেবা এবং পেশাদারিত্বের আরো উন্নয়নের সুযোগ আছে বলে মত দিয়ে বলেন, ভোক্তাদেরকেও পেশাদারিত্ব গ্রহণের মানসিকতা অর্জন করতে হবে। অন্য কমিউনিটিতে কিংবা সাদাদের কাছে গিয়ে তারা যে ব্যবহার করেন নিজ কমিউনিটিতে এসে তারা সেটি আর অনুসরণ করতে চান না।
‘নতুনদেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর আলোচনায় বলেন, কানাডায় প্রতিটি কমিউনিটির কোনো না কোনো পণ্য বা সেবা ব্র্যান্ড হিসেবে নানা কমিউনিটিতে জনপ্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশি কোনো পণ্য বা সেবা ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে পারেনি। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এবং পেশাজীবীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে কানাডায় ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ড’ এর পক্ষে নিয়মিত প্রচারনা চালাবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।