অনলাইন ডেস্ক : কানাডা কি ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দিতে পারে—বুধবার এই সম্ভাবনা কিছুটা কম কল্পনাপ্রসূত মনে হয়েছে, যখন ইইউর একজন মুখপাত্র উত্তর আমেরিকার এই দেশটির সদস্য পদ পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে না করেননি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ ও হুমকির ফলে কানাডা ও ইইউ আরো ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কিছু বিশ্লেষক আলোচনার ছলে এই ধারণা উত্থাপন করেছেন, কানাডার উচিত ব্রাসেলসের সঙ্গে যুক্ত হওয়া।
পোলস্টার অ্যাবাকাস ডাটা ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কানাডীয়দের কাছে এই প্রশ্ন রাখে, যেখানে ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, কানাডার ২৭ জাতির এই জোটে যোগ দেওয়া উচিত। অন্যদিকে এই সপ্তাহে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুযায়ী, দেড় হাজার জনের মধ্যে মাত্র ৩৪ শতাংশ এই ধারণার বিরোধিতা করেন, আর বাকিরা অনিশ্চিত ছিলেন।
ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র পাওলা পিনহো বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটি আশ্চর্যের কিছু নয়, কারণ ইইউ ও কানাডা একমনের অংশীদার, যারা বহু মূল্যবোধ ভাগ করে ও শক্তিশালী ঐতিহাসিক সংযোগও রয়েছে।’
কানাডা কি ইইউতে যোগদানের যোগ্য কি না—এমন প্রশ্নে তিনি ইইউ চুক্তিতে নির্ধারিত প্রবেশের মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেন, কিন্তু সরাসরি ‘না’ বলেননি। তিনি বলেন, ‘কোনো দেশের ইইউতে সদস্য পদ পেতে চুক্তিতে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড রয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের চুক্তির ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘যেকোনো ইউরোপীয় রাষ্ট্র’, যে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সাম্যের মতো মূল্যবোধ মেনে চলে, তারা সদস্য পদের জন্য আবেদন করতে পারে।
যেকোনো দেশকে ‘ইউরোপীয়’ হিসেবে গণ্য করা হবে কি না, সেটি সংজ্ঞায়িত নয়, তবে কানাডাকে ইউরোপের অংশ হিসেবে যুক্ত করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।
কানাডায় ইইউর প্রধান দুটি কাজের ভাষা—ইংরেজি ও ফরাসি ব্যবহৃত হয়। দেশটি গ্রিনল্যান্ডের প্রতিবেশী, যা একটি স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ অঞ্চল এবং ট্রাম্প কানাডার মতোই একসময় একে সংযুক্ত করার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে পুরনো মহাদেশের সঙ্গে কানাডার এখনো একটি সমুদ্র বিভাজন রয়েছে।
১৯৮৭ সালে মরক্কোর সদস্য পদ আবেদন এই যুক্তিতে বাতিল করা হয়েছিল যে এটি ইউরোপীয় রাষ্ট্র নয়। অন্যদিকে আলবেনিয়া, বসনিয়া, জর্জিয়া, মলদোভা, মন্টিনেগ্রো, উত্তর ম্যাসিডোনিয়া, সার্বিয়া, তুরস্ক ও ইউক্রেনের আবেদনের বিবেচনা গৃহীত হয়েছে।
কানাডার ইতিমধ্যে ইইউর সঙ্গে একটি মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে, যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পরই। ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়া উচিত। এর ফলে বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে ঘোষণা দিতে হয়, কানাডার অধিগ্রহণের বিষয়টি কুইবেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি৭ সম্মেলনের আলোচনার টেবিলে থাকবে না।