অনলাইন ডেস্ক : ক’দিন আগেও ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় পাওয়া যেত ১ কেজি কাঁচা মরিচ। কিন্তু এখন আর পাওয়া যায় না সেই মূল্যে। দিন বদলেছে, দাম বেড়েছে রান্নার এই অনুষঙ্গের। রান্নার কাজে ব্যবহৃত এই নিত্যপণ্যটি পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া গেলেও লঙ্কাকাণ্ড চলছে খুচরা বাজারে।
১২০ থেকে ১৬০ টাকার কাঁচা মরিচের দাম ক’দিনের ব্যবধানে বেড়ে ১২০০ টাকা ছুঁয়েছে। ক্রেতাদের মতে— যত দিন যাচ্ছে ঝাল বাড়ছে কাঁচা মরিচের। বিক্রেতাদের দাবি, বৃষ্টির কারণে বাজারে জোগান কম পণ্যটির। তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
শনিবার (১ জুলাই) খুলনার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার সোনাডাঙ্গা ট্রাক স্ট্যান্ড পাইকারি বাজার, খুচরা নিরালা বাজার এবং গল্লামারী বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতাদের দাবি— সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে সান্ত্বনা হিসেবে ক্রেতাদের ‘খোঁড়া’ যুক্তি দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এটা সব সময়ের পুরনো যুক্তি ‘জোগান কম’। এবার তার সঙ্গে যুক্ত করেছেন অতিবৃষ্টি।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, বর্ষা মৌসুমে পানির কারণে মরিচের গাছ মরে গেছে। ফলে প্রতি বছর এই সময়ে কাঁচা মরিচের দাম একটু বৃদ্ধি পায়। তবে এত বেশি দাম এর আগে কখনো দেখেননি ক্রেতারা।
গল্লামারী বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মামুন বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে মরিচের জোগান কম, সরবরাহও কমে গেছে। তাই দামও বেড়েছে। এছাড়া ১৩ দিন আগেও যে মরিচের দাম ছিল ১২৯ থেকে ১৬০ টাকা ছিল, তা এখন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
মরিচভেদে দামে কিছুটা হেরফের আছে জানিয়ে মো. মামুন বলেন, ঝাল বেশি হওয়ায় কারেন্ট মরিচের চাহিদা বেশি। তাই দামও বেশি। এই মরিচ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। আর সবচেয়ে ঝাল এবং দাম বেশি হচ্ছে বড়জের মরিচ, বড়জের মরিচ প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি করছি।
এদিকে একই ভাষ্য গল্লামারীর সবজি বিক্রেতা সাদেক হোসেন হেলালের। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি থাকায় বাজারে কাঁচা মরিচ কম এসেছে। এর জন্য অবশ্য বৃষ্টিও কিছুটা দায়ী।
কিন্তু তাই বলে কাঁচা মরিচের এত দাম! বিষয়টি যেন মানতেই পারছেন না গল্লামারী বাজারে সবজি কিনতে আসা বাংলালিংকে কর্মরত অফিসার ইমতিয়াজ উদ্দিন।
একরাশ হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, কি বলব বলেন? জীবনেও শুনিনি কাঁচা মরিচের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা। বড়জের মরিচ ১ হাজার ২০০ টাকা, কারেন্ট মরিচ ৮০০। তবে একটু নরমগুলো ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গল্লামারি বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন গৃহিণী আফসানা বেগম। কাঁচা মরিচের এমন লাগাম ছাড়া দামে ভীষণ ক্ষুব্ধ তিনি। তার মতে— অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে কাঁচা মরিচ। এমন অস্বাভাবিক দাম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
দামের সঙ্গে ঝালের তুলনা করে আফসানা বেগম ঢাকা মেইলকে বললেন, আপনি লিখেন- মরিচের দাম নয়, ঝাল বেড়েছে। কারণ ঝাল বাড়লে যেমন কম খেতে হয় তেমনি দাম বাড়ায় কম কিনতে হচ্ছে।