মুরশাদ সুবহানী : মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া ইতোমধ্যে বহু মানুষের প্রাণ সংহারী করোনা-১৯ ভাইরাস নাকি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন গবেষণা। এখন পর্যন্ত এটি ভাইরাস হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা-১৯ ভাইরাস বিশ্বের ২১৩টি দেশে বহু মানুষের প্রাণ ছিনিয়ে নিয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে আছেন বহুজন। বিশেষ করে যাঁরা অন্যান্য রোগে ইতোপূর্বেই আক্রান্ত হয়ে ছিলেন, তাঁদের মৃত্যু ঝুঁকির মাত্রা বেশি।
জেনেটিক বিজ্ঞানীরা এবং অন্যান্য সংক্রমণ রোগ নিয়ে কাজ করছেন এই সকল শ্রদ্ধাস্পদ বিজ্ঞানীরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন করোনা-১৯ নির্মূলে। আশার কথা এখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ফাইজার, মর্ডানা প্রথম ভ্যাকসিন বাজারে এনেছে। যদি দূর অতীতের দিকে তাকানো যায়, দেখা যাবে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালের ভাইরাস /ব্যাক্টেরিয়াল ডিজিজ, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ও নির্মূলে টীকা, ওষুধ এসেছে অনেক পরে। ততদিনে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
“১৯১৮ সালের শেষের দিকে ভয়ঙ্কর এক মহামারি সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ওই মহামারির নাম ছিল স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষের। এই সংখ্যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত মানুষের সংখ্যার চাইতেও বেশি। সেসময় সারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশেরই মৃত্যু হয়েছিল এই ভাইরাসে।”
চলমান করোনা-১৯ এখনও মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। ৩০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যুর হার বাড়ছে। যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন;
তাঁদের বিদেহী আত্মার মঙ্গল কামনা করছি এবং পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ এবং আক্রান্তদের দ্রæত আরোগ্য কামনা করে ফিরে যাচ্ছি লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাস এ তথ্য রয়েছে। কিন্তু নতুন গবেষণা তথ্য দিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক। ঈড়ারফ-১৯ আসলে ব্যাকটেরিয়া!!
সিঙ্গাপুর বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা কোভিড-১৯ লাশের ময়না তদন্ত করতে সক্ষম হয়েছে। তদন্তের পরে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ ভাইরাস হিসেবে বিদ্যমান নয়, বরং এটি একটি ব্যাকটিরিয়াম যা বিকিরণের সংস্পর্শে এসে রক্তকে জমাট বাঁধিয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ওই ব্যক্তির পক্ষে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, কারণ মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না, ফলে মানুষ মারা যায় দ্রুত। শ্বাসযন্ত্রের শক্তির ঘাটতির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা হু-এর প্রটোকল মানেননি এবং মৃত কোভিড-১৯ রোগীর ময়না তদন্ত করেছেন।
চিকিৎসকরা করোনায় মৃত দেহের হাত-পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশগুলোর ব্যবচ্ছেদ করার পরে দেখেছেন, রক্তনালীগুলোতে একাধিক জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে, যার ফলে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। অক্সিজেনের ঘাটতির ফলে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছেন এবং পজেটিভ রোগীদের অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ দিতে শুরু করেছেন। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা কোভিড রোগীদের ১০০ মিলিগ্রাম ইম্রোমাক ওষুধ দেয়া শুরু করেন। ফল স্বরূপ, রোগীরা সুস্থ এবং তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে শুরু করে।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একদিনে ১৪ হাজারেরও বেশি রোগীকে সারিয়ে তাদের বাড়িতে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পরে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেছেন, কোভিড-১৯ ধরা পড়লে তাই রক্তনালীগুলোর ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধা আটকাতে দ্রæত চিকিৎসা শুরু করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং এসপিরিনের মতো অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট নিতে হবে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করলে ভেন্টিলেটর এবং আইসিইউ’র দরকার পড়বে না। এই চিকিৎসা পদ্ধতি ইতিমধ্যেই সিঙ্গাপুরে প্রকাশিত হয়েছে। চীন এটি আগে থেকেই জানে, কিন্তু তারা কখনো এই খবর প্রকাশ করেনি।
(সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সূত্র উদ্বৃত করে আব্দুস সালাম ফেসবুকে এই তথ্য দিয়েছেন)।
আমরা এই প্রতিবেদনে এ কথা বলতে চাইছি না যে, আপনরা ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন না। ভ্যাকসিন অন্যান্য ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের মানুষজন জানেন, সিঙ্গাপুর চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক উন্নত। অনেক দেশ থেকেই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের এই গবেষণা যদি সঠিক হয় তাহলে করোনা যদি ভাইরাল ডিজিজ না হয়ে ব্যাকটেরিয়াল ডিজিজ হয় তাহলে চিকিৎসা সহজ হয়ে যাবে কারণ হলো ব্যাকটেরিয়াকে চিহ্নিত করা সহজ।
লেখক : (শিল্প-সাহিত্যের সেবক ও বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক একজন রাইটার, অ্যাডভোকেট জজকোর্ট, পাবনা, বাংলাদেশ। ফ্লোরিডা ইউএস প্রবাসী)