অনলাইন ডেস্ক : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হলে যে কোনও অসুখের মোকাবিলা করা যায়। করোনা ঠেকাতেও এই পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকর। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে ভিটামিন সি ইনজেকশন দেওয়ায় আশাব্যঞ্জক ফল মিলেছে। এ কারণে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা খাবারে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে তারা ভিটামিন ই-ও যোগ করতে বলছেন। তাদের ভাষায়, এই দুই ভিটামিন মিলে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীর এক দিকে যেমন কাজ করার শক্তি দেয় তেমনি নিজেকে সুস্থ রাখতেও শরীর নিজেই কাজ করে। আর শরীরকে সুস্থ রাখতে যে সব পুষ্টিকর উপাদানের প্রয়োজন, তার মধ্যে অন্যতম ভিটামিন। বিশেষ করে ভিটামিন সি ও ই। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে প্রয়োজন অ্যান্টিবডি উৎপাদন । এই কাজটি সম্পন্ন করতে ভূমিকা রাখে ভিটামিন সি এবং ই। জেনে নিন, শরীরে এ দুটি ভিটামিনের ঘাটতি হলে কি হয় ও কীভাবে এই ঘাটতি পূরণ করবেন ।
১. প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মৌসুমি ফল রাখতে পারেন। বিশেষ করে মুসাম্বি, পেয়ারা, আনারস জাতীয় ফল খেতে পারেন। সেই সঙ্গে কলাও খেতে হবে।
২. নিয়মিত লেবুর রস খেতে হবে। তবে গরম পানিতে নয়। মনে রাখতে হবে, উচ্চ তাপমাত্রায় ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই রুম তাপমাত্রায় রেখেই তা খাওয়া ভালো।
৩ নিয়মিত খাদ্যতালিকায় আমলকি রাখতে পারেন। আমলকি কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
৪. ভিটামিন সি ও ই কো-এনজ়াইমের কাজও করে। তাই খাবার পরিপাকেও এদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
৫. ভিটামিন ই-র অভাবে রোগ প্রতিরোধ কমে যাওয়ার সঙ্গেই শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অন্য দিকে অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগ সারাতেও ভিটামিন ই কার্যকর।
৫. গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো ভিটামিন ই গ্রহণ না করলে গর্ভপাত পর্যন্ত হতে পারে। আর গর্ভাবস্থায় মায়ের যদি ভিটামিন ই-র অভাব থাকে, তা হলে সেই সন্তানের অ্যানিমিয়া হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
৬. ভিটামিন সি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসের জোগান দেয়। মানসিক চাপ থেকে শরীরকে দূরে রাখতে সাহায্য করে এই ভিটামিন। অন্য দিকে ভিটামিন সি-র এই কাজকে ত্বরান্বিত করে ভিটামিন ই। এই দুই ভিটামিন মিলে কোষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হয়। তখন শুধু করোনাই নয়, বাইরের কোনও ভাইরাসই সহজে শরীরকে আক্রমণ করতে পারে না।
৭.ভিটামিন সি খুব শরীর পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে। যেহেতু এই ভিটামিনে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকে, তাই শরীরের টক্সিন বার করে দেয় সহজেই। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও এই ভিটামিন বেশ উপকারী। তা ছাড়া ভিটামিন সি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। শরীরে এই ভিটামিন সঞ্চিত হয় না। বরং অতিরিক্ত ভিটামিন বেরিয়ে যায়।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিন ৭০-১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি শরীরের জন্য জরুরি। খাবারের মাধ্যমেই এই ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। না হলে ভিটামিন সির সাপ্লিমেন্ট নিলেও অনেকটা কাজ হয়। কিন্তু সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে ভিটামিন ই পরিমাণমতো পাওয়া যায় না। প্রত্যেক দিন একজন প্রাপ্তবয়স্কের ১৫ মিলিগ্রাম ও একজন শিশুর ৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই-র প্রয়োজন। এজন্য খাবারের তালিকায় সূর্যমুখীর বীজ, অলিভ অয়েল, আমন্ড, চীনাবাদাম, আখরোট, ডিম রাখতে হবে। তবে বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া ব্রকলি, বাঁধাকপি জাতীয় সবজিতেও প্রচুর ভিটামিন ই থাকে।