অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে আজ বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শনাক্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়াল। এ নিয়ে সারা দুনিয়াতে লাখের বেশি আক্রান্ত রোগী রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা হলো ১৮। গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহানে নতুন ধরনের একটি ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড ১৯ নামের এই ভাইরাসটির সংক্রমণকে বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে।
চীন থেকে ছড়ানো চীনের দুই প্রতিবেশী দেশে কোভিড মোকাবিলায় দুর্দান্ত সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। এর একটি ভিয়েতনাম। দেশটির সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি দেশটিতে প্রথম কোভিড রোগীর শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৩৬৫ জন। দেশটিতে কোভিড ১৯ এ একজনেরও মৃত্যু হয়নি।
চীনের আরেক সীমান্তবর্তী দেশ নেপাল, যদিও সে সীমান্ত অতি দুর্গম; তারপরও দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ১৭৭ জন। আর করোনায় মারা গেছেন মাত্র ২০ জন। এসব দেশের সরকার কঠোর বিধিনিষেধ পালন করতে দেশটির জনগণকে বাধ্য করেছে। করোনা সম্পর্কে নানান ধরনের প্রচার চালিয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি কার সংস্পর্শে এসেছিল তা শনাক্ত করতেও সমর্থ হয়েছে। সে কারণে দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও নেপালে রোগটি এখন পর্যন্ত বড় আকারে দাঁত বসাতে পারেনি। অন্যদিকে দুনিয়ার সব থেকে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র কোভিডের কাছে পুরোটাই পর্যুদস্ত। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্যমতে, কোভিড সংক্রমণের শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছে ২২ জানুয়ারি। ১ লাখ কোভিড আক্রান্ত হতে সময় লেগেছে দেশটির ৬৫ দিন।
সংক্রমণের দুই নম্বরে থাকা ব্রাজিলে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি। গত ৩ মে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ এ পর্যায় আসতে দেশটির সময় লেগেছে ৬৭ দিন। সংক্রমণের তৃতীয়স্থানে আছে রাশিয়া। ওই দেশে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয় ৩১ জানুয়ারিতে। গত ৩০ এপ্রিল দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ রাশিয়াতে সময় লেগেছে ৯০ দিন। সংক্রমণের চতুর্থস্থানে থাকা ভারতে এক লাখ আক্রান্ত রোগী শনাক্তে সময় লেগেছে ১০৯ দিন। আর যুক্তরাজ্য ও স্পেনে সময় লেগেছে যথাক্রমে ৭৬ ও ৬০ দিন। এ ছাড়া ইতালি (৬৮), পেরু (৭৫), ইরান (৫৫), ফ্রান্স (৭৯), জার্মানি (৩৮), চিলি (৯০), তুরস্ক (৪৩), মেক্সিকো (৯৬), পাকিস্তান (১০৩), সৌদি আরব (৯৫), কানাডা (১৩৯) আগেই আক্রান্তের সংখ্যায় লাখ ছাড়িয়েছে।
সংক্রমণের ১৮তম স্থানে থাকা বাংলাদেশে প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। বাংলাদেশে আজ ১৮ জুন বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। এ পর্যায় আসতে বাংলাদেশের সময় লেগেছে ১০৩ দিন।
করোনার গতি ইউরোপে দ্রুত, এশিয়াতে ধীরে
কোভিড ১৯ ভাইরাসটি ইউরোপে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। গড়ে ইউরোপের দেশগুলোতে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা লাখে পৌঁছাতে ৬০ থেকে ৯০ দিনের মত সময় লেগেছে। ইউরোপের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত তুরস্কে লেগেছে মাত্র ৪৩ দিন। ইউরোপে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়েছে জার্মানিতে। দেশটিতে মাত্র ৩৮ দিনের মাথায় সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যের ৭৬ দিন, স্পেনের ৬০ দিন আর রাশিয়ার লেগেছে ৯০ দিন।
এশিয়াতে সব থেকে কম সময় লাখের ঘরে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ইরানে। দেশটিতে ৫৫ দিনের মাথায় আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যায়। তবে দক্ষিণ এশিয়াতে এসে করোনা সংক্রমণের গতি অনেকটাই কমে যায়। ভারতে ১ লাখ ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণ হতে সময় নিয়েছে ১০৯ দিন, পাকিস্তানে ১০৩ দিন ও বাংলাদেশে লাখের ঘরে করোনা রোগী আসতে সময় নিয়েছে ১০৩ দিন।