অনলাইন ডেস্ক : বন্ধ হয়ে গেছে মাঠের ক্রিকেট। ব্যাট-বল ব্যাগে ভরে ক্রিকেটাররা থাকছেন লকডাউনে। কবে মাঠে ক্রিকেট ফিরবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে এতে ক্রিকেটারদের মনোবল ভাঙ্গেনি। তারা শুরু করেছেন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই। অর্থ দিয়ে, মানুষকে সচেতন করে এগিয়ে এসেছেন দেশের বিপদে। ফিটনেস ধরে রাখার চিন্তা আপাতত ঘরেই থেকেই করতে হচ্ছে। বাড়ির সিঁড়িতে দৌড়ে নিজেদের মাঠের অভাব পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। যেমন টাইগার পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি নিজেকে ফিট রাখার জন্য বেছে নিয়েছেন ৮ তলা ভবনের সিঁড়িগুলোকে।
রাব্বি বলেন, ‘পেসারদের ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য দৌড়ানোর বিকল্প নেই। আমি যে বাড়িতে থাকি সেটি ৮ তলা। আমার বাসাটি ৬ তলায়। তাই এই ভবনের সিঁড়িগুলোকে বেছে নিয়েছি দৌড়ানোর জন্য। সঙ্গে একটা কাজও করি। দুটি এক লিটারের পানির বোতলে কীটনাশক বানিয়ে ভরে নেই। দৌড়াতে দৌতে তা সিঁড়িতে স্প্রে করি যেন করোনা ভাইরাস থেকে বাড়ির সবাই মুক্ত থাকতে পারে।’
বিশ্বে মাহামারি সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সচেতনতাই একমাত্র লড়াই বলে মনে করেন দেশের এই পেসার। কামরুল ইসলাম রাব্বি শুধু সিঁড়িতেই কীটনাশক ছিটান না, লিফটের বাটন পরিষ্কার রাখতেও নিয়েছেন উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘যতটা জানি এখনো এই ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। তাই সচেতনতাই পারে এই রোগ থেকে আমাদের দূরে রাখতে। আমরা দেখেছি এই ভাইরাস ছোঁয়াচে। থাতব জিনিসে বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে। তাই আমি লিফটের বাটনগুলো যেন কেউ খালি হাতে না ধরে সেই ব্যবস্থা করেছি। দেশের প্রতিটি মানুষকে সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে নয়তো সামনে বড় বিপদই অপেক্ষা করছে।’
খেলা নেই, দেশের সাধারণ ছুটির কারণে নেই খেটে খাওয়া মানুষের কাজ। ক্রিকেটারা তহবিল গঠন করেছেন সেই সব মানুষের জন্য। বিসিবির ও কোয়াবের মাধ্যমে দিয়েছেন নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা। আবার অনেকেই ব্যক্তিগতভাবেও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাব্বিও বসে নেই। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের সাধ্যের মধ্যে এলাকায় যতটা পারি গরীব মানুষের জন্য দান করছি। অনেক সংগঠনকেও দিচ্ছি। তারা যেন গরীব মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারে।’
অন্যদিকে দেশে ত্রাণ বিতরণের নামে চলছে অরাজকতা। ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে করে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে বলেই মনে করেন রাব্বি। তিনি অনুরোধ করে বলেন, ‘অবশ্য মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু ত্রাণ দিতে গিয়ে অনেক ভিড় জমিয়ে ফেলছেন। আমার তাদের কাছে অনুরোধ এটি যেন বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়। এতে করে সত্যি যারা অভাবী তারা পাবেন। আর ভিড় করে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর পরিস্থিতিও তৈরি হবে না।’
দীর্ঘ দিন ধরে খেলার বাইরে থাকার যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মনে করেন রাব্বি। তিনি বলেন, ‘পুষিয়ে নেয় কঠিন হবে। তবে অসম্ভব নয়। আমি আমাদের ট্রেনার তুষার ভাইয়ের পরামর্শ মেনে চলছি। তিনিই বলেছেন যেন বাড়ির সিঁড়িতে দৌড়াতে। ছাদে গিয়ে বেল্ট দিয়েও কিছু কাজ করি। এতে করে ফিটনেস না বাড়লেও ধরে রাখার কাজটা হচ্ছে। আশা করি মাঠে ফিরলে ক্ষতিটা দ্রুত পুষিয়ে নিতে পারবো।’