ডা. এ বি এম কামরুল হাসান : ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি রোগ বা হাঁপানির মতো স্থূল বা ওজন বেশি এমন মানুষেরাও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অতিরিক্ত ওজন করোনার সংক্রমণে জটিলতা বাড়ায়।
স্থূলতা কেন ঝুঁকির কারণ
স্থূলতা রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। স্থূল ব্যক্তিদের প্রদাহের ঝুঁকি বেশি, তাঁদের রক্তে নানা ধরনের প্রদাহজনিত রাসায়নিকের পরিমাণ বেশি। তা ছাড়া দেহের মধ্যভাগে স্ফীতির কারণে পেট ও বুকের মধ্যকার ডায়াফ্রাম ওপরে উঠে আসে বলে তাঁদের শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় থাকে। একে বলে হাইপোভেন্টিলেশন সিনড্রোম। এ ধরনের ব্যক্তিদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার এবং রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া স্থূলতা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগেরও ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন যাঁদের, তাঁদের অনেকেই স্লিপ এপনিয়া নামের একধরনের সমস্যায় ভোগেন। এতে স্বাভাবিক অবস্থাতেও ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায়।
ওজনের দিকে খেয়াল রাখুন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারঘোষিত ছুটিতে এত দিন ঘরে থেকেছেন অনেকেই। এ সময় হাঁটাহাটি, ব্যায়াম করার সুযোগ সীমিত হওয়ার পাশাপাশি অনেকের খাওয়ায়ও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। এতে কারও কারও ওজন গেছে বেড়ে। করোনার ঝুঁকি কমাতে এবার ওজন কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আর এ জন্য সবার আগে খাদ্যাভ্যাসে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। অতিরিক্ত শর্করা ও ফ্যাট কমিয়ে দিন। আঁশযুক্ত খাবার, ফলমূল, শাকসবজি ও আমিষ জাতীয় খাবার বেশি খান।
ছুটি শেষ হওয়ায় অনেকেই অফিসে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে গণপরিবহনে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে হেঁটে অফিসে যাতায়াত করতে পারেন। এতে ভিড় এড়ানো সম্ভব, আবার ওজনও কমবে। বাড়িতে ব্যায়াম করতে পারেন। সামাজিক দূরত্ব মেনে শুরু করতে পারেন পার্কে হাঁটাও। নিজের উচ্চতার অনুপাতে ওজন অনেক বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ