অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবার তারকাদের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করার নতুন কৌশল অবলম্বন করেছেন। বৃহস্পতিবার আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল এক নির্বাচনী সমাবেশে মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ও জনপ্রিয় সঞ্চালক অপরাহ উইনফ্রের নেতৃত্বে সমাবেশটি পরিচালিত হয়। হলিউডের অনেক নামকরা তারকার উপস্থিতিতে এই সমাবেশ ছিল যেন এক তারকামেলা।
এই ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে কমলা হ্যারিসের পাশে দাঁড়ান জেনিফার লোপেজ, মেরিল স্ট্রিপ, ক্রিস রক, বেন স্টিলার এবং জুলিয়া রবার্টসের মতো বিশ্বখ্যাত তারকারা। তারা একযোগে কমলার প্রশংসা করেন এবং তার নির্বাচনী প্রচারণাকে সমর্থন জানান। নির্বাচনের আর মাত্র দেড় মাস বাকি থাকায় এ সমাবেশে তারকাদের অংশগ্রহণ বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
‘ইউনাইট ফর আমেরিকা’ শিরোনামের এই সমাবেশ মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরে আয়োজিত হয়, যেখানে কমলা হ্যারিস ও অপরাহ উইনফ্রে সরাসরি অংশ নেন। অন্যদিকে হলিউড তারকারা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
মেরিল স্ট্রিপ, অনুষ্ঠানে কমলাকে হাস্যরসাত্মকভাবে ‘প্রেসিডেন্ট হ্যারিস’ বলে সম্বোধন করেন। তার এই মন্তব্যে হাসির রোল পড়ে যায়, আর কমলা হ্যারিসও উত্তর দেন, ‘এখনো ৪৭ দিন বাকি আছে!’ এই হাস্যরসাত্মক মুহূর্তের মাধ্যমে সমাবেশের পরিবেশ ছিল অনেকটাই হালকা।
অপরাহ উইনফ্রে কমলাকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি হঠাৎ এত আত্মবিশ্বাসী যে জো বাইডেনের পরিবর্তে তিনিই ডেমোক্র্যাটদের মুখ্য প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন। উত্তরে কমলা বলেন, ‘জীবনে এমন মুহূর্ত আসে যখন আমাদের এগিয়ে আসতে হয়।’
দেড় ঘণ্টার এই সমাবেশে কমলা হ্যারিস বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কথা বলেন—গর্ভপাত, অর্থনীতি, অভিবাসন, বন্দুক নিয়ন্ত্রণসহ আরও অনেক বিষয়ে। তিনি দর্শকদের অভিজ্ঞতাও শোনেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ এনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে যোগ দিয়ে ক্রিস রক বলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে নিয়ে হোয়াইট হাউসে গিয়ে একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমি মনে করি, কমলা হ্যারিসই সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেবেন, যা আমরা চাই।’ এই তারকাদের সমর্থন কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণায় বাড়তি শক্তি জোগাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমলার প্রচারণা শিবিরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ভার্চ্যুয়াল সমাবেশে প্রায় দুই লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছিলেন, আর সরাসরি ইউটিউবে এটি দেখেছেন এক লাখ মানুষ। পাশাপাশি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যমেও অনেকেই এটি উপভোগ করেছেন।
এদিকে জনমত জরিপে দেখা গেছে, কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে লড়াই চলছে সমানে সমান। দুই প্রার্থীর জনপ্রিয়তা প্রায় সমান অবস্থানে রয়েছে এবং আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।