অনলাইন ডেস্ক : ১১ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এসকে সিনহা)। তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এবার এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে।
২ লাখ ৮০ হাজার ডলার বা প্রায় ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা (১ ডলার ৯০ টাকা ধরে) ক্যাশ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে (১৭৯, জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউ জার্সি ০৭৫২২) তিনতলা বাড়ি কেনায় একটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মানিলন্ডারিং আইনের এ মামলায় এসকে সিনহা ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন অবৈধভাবে ওই অর্থ অর্জন’ ও তা ‘যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) এ মামলাটি করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
মামলার পর আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব বলেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অবৈধ টাকা অর্জন করেছেন। ওই টাকা তিনি হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন। সেখানে তিনি তার ছোট ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে (হিসাব) ওই টাকা ট্রান্সফার (স্থানান্তর) করেন। এ অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও তার ভাইকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে আরও কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদকের মামলার আসামি পলাতক থাকলেও মামলার তদন্তে ও বিচারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা বা প্রতিবন্ধকতা নেই।
এসকে সিনহাকে দেশে ফেরতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, মামলা করা হলো। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন অনুসারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি জনাব সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও তার ছোটভাই অনন্ত কুমার সিনহা অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এসকে সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে ওই অপরাধলব্ধ অর্থ নিজেদের ভোগ দখলে রেখে তার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান গোপন করে বা এর ছদ্মাবরণে পাচার করেছেন। ওই অর্থ বিভিন্ন সময় নিজ ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসামিরা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), ৪ (৩) ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।