অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাস মহামারির ফলে সৃষ্ট সংকটে ব্যয় কমাতে এবার কর্মকর্তাদেরর বেতন ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপ।
পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২১ সাল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিবর্তিত বেতন কাঠামো কার্যকর থাকবে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত যারা বেতন পান তাদের বেতন অপরিবর্তিত থাকবে। চল্লিশ হাজার থেকে এক লাখ টাকা কর্মীদের বেতন ১০ শতাংশ কমানো হবে। ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা যারা বেতন পান তাদের কমবে ১৫ শতাংশ। আর দুই লাখ টাকার বেশি বেতন পেলে তাদের কমবে ২০ শতাংশ। ব্যাংকটি ডিএমডিদের বেতন কমবে ২৫%। আর এমডির বেতন কমিয়ে ৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা সভায় অংশগ্রহণ করে কোনো সম্মানী গ্রহণ করবেন না। এ ছাড়া গত রোববার বিএবি যে নির্দেশ দিয়েছিল তা পরিপালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।
করোনাকালে ব্যয় কমানোর নামে ইতিমধ্যে তিনটি ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কমিয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (বিএবি) পরামর্শে কর্মকর্তাদের বেতন কমাতে শুরু করেছে ব্যাংকগুলো।
বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের এক্সিম ব্যাংকের পাশাপাশি সিটি ব্যাংক ও এবি ব্যাংকেই ইতিমধ্যে বেতন কমিয়েছে। আরও কয়েকটি ব্যাংক বেতন কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
সিটি ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমিয়েছে। বেতন কমানোর এ সিদ্ধান্ত চলতি মাসের ১ জুন থেকেই কার্যকর হবে। বহাল থাকবে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এক্সিম ব্যাংক বেতন কমিয়েছে ১৫ শতাংশ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যাংকেও ১ জুন থেকেই কার্যকর হয়েছে।বহাল থাকবে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবি ব্যাংক মে ও জুন মাসের বেতন ৫ শতাংশ কমিয়েছে। আগামী মাসগুলোতে বেতন কমবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, গত ১৫ জুন কর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কর্তনের ঘোষণা দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। পাশাপাশি কর্মীদের পদোন্নতি ও ইনক্রিমেন্ট বন্ধেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এছাড়া একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্য সিটি ব্যাংকও।
এর আগে, ব্যাংককর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কমানো, পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট, ইনসেন্টিভ বোনাস বন্ধসহ ১৩ দফা সুপারিশ করে দেশের সব বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেয় বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাংক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনার ঝড়। এমন পরিস্থিতিতে বেতন-ভাতা কমানোর সুপারিশ থেকে সরে এসেছে বিএবি। কিন্ত সুপারিশগুলো ঠিকই বাস্তবায়ন করছে অনেক ব্যাংক। এতে ব্যাংকে ব্যাংকে কর্মকর্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ।