অনলাইন ডেস্ক : চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর ধার্যকৃত রপ্তানি শুল্ক ১২৫ শতাংশ উন্নীত করেছে চীন। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে ওই মুখপাত্র বলেন, “চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত অত্যাধিক উচ্চ শুল্ক আরোপ একটি সংখ্যার খেলা ছাড়া কিছু নয় এবং এর কোনো বাস্তব অর্থনৈতিক তাৎপর্য নেই। যুক্তরাষ্ট্র আসলে শুল্ককে হুমকি এবং বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে যা শেষ পর্যন্ত বিশ্বাবাসীর সামনে দেশটিকে একটি কৌতুকে পরিণত করবে।”
“যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক নিয়ে সংখ্যার খেলা চালিয়ে যেতে চায়— যেতে পারে; চীন এ খেলায় যোগ দেবে না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পদক্ষেপের কারণে চীনের জাতীয় স্বার্থে আঘাত আসে, তাহলে চীন দৃঢ়তার সঙ্গে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।”
চলতি বছর মার্চে প্রথমবার চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ২ এপ্রিল এক ঘোষণায় জানান, চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিং। এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং ৭ এপ্রিল সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, বেইজিং যদি মঙ্গলবার ৮ এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে— তাহলে সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং আজ ৯ এপ্রিল বুধবার থেকে তা কার্যকর হবে।
বেইজিং ট্রাম্পের হুমকিতে সাড়া না দেওয়ায় আজ ৯ এপ্রিল থেকে চীনা পণ্যের ওপর কার্যকর হয়েছে বর্ধিত শুল্ক। এতে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর মোট আরোপিত শুল্ক পৌঁছায় ১০৪ শতাংশে।
এই পরিস্থিতিতে গত ৮ এপ্রিল চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, ট্রাম্প যদি তার এই ‘অপমানজনক’ শুল্ক নীতি জারি রাখেন, তাহলে চীনও ‘শেষ পর্যন্ত’ লড়াই করবে। তারপর গতকাল ৯ এপ্রিল মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে চীন।
বেইজিংয়ের এ পদক্ষেপের পর বুধ ও বৃহস্পতি দুই দফায় চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক বৃদ্ধি করেন ট্রাম্প। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে, চীনা পণ্যের ওপর ধার্যকৃত শুল্পের পরিমাণ ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেন ট্রাম্প।
এরপরই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয় বেইজিং।
সূত্র : সিএনএন