অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে দাবানল, জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে একের পর এক শহর। অন্যদিকে দেখা দিয়েছে বন্যা। পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

দাবানলের কারণে কানাডার পূর্বাঞ্চলীয় নোভা স্কটিয়া প্রদেশের ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, কানাডায় বর্তমানে ১১০টি দাবানল জ্বলছে। এরমধ্যে ৩৬টি দাবানলই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখনও অবধি ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

কানাডার শাসক দল ইউনাইটেড কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ড্যানিয়েল স্মিথ জানান, আলবার্টায় দাবানল ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। দমকলকর্মীদের জন্যও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে উঠছে। ঝড়ো শুষ্ক হাওয়াতে আগুনের ফুলকি উড়ছে গোটা শহরজুড়ে। কুইবেক ও অন্টারিও থেকেও অতিরিক্ত দমকল বাহিনী আনানো হয়েছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রা রেকর্ড গড়ছে। যার জেরে এ বার দাবানলে বিধ্বস্ত পশ্চিম কানাডার অ্যালবার্টা প্রদেশ। এখনও বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে কমপক্ষে ৭৮টি দাবানল জ্বলছে বলে জানিয়েছে দমকল। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রেড রিভার ক্রি নেশন এলাকা। সেখানে ইতিমধ্যেই ২০টি বাড়ি ও স্থানীয় থানাটি গ্রাস করেছে আগুনের লেলিহান শিখা।

বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অ্যালবার্টা প্রদেশের রাজধানী এডমন্টনের পশ্চিমে অবস্থিত ড্রেটন ভ্যালি অঞ্চলটিও দ্রুত খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সেখানে বাস কমপক্ষে সাত হাজার মানুষের।

যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে প্রশাসন। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এই অঞ্চলে দাবানল বিরল কিছু নয়। তবে বছরের এই সময়ে এত দাবানলের দাপট সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। যা পূর্বাভাস তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে আরও গরম বাড়বে, হাওয়ার তোড়ও আরও তীব্র হবে। ফলে দাবানলের তীব্রতাও আরও বৃদ্ধি পাবে। পরিস্থিতি যাতে মোকাবিলা করা যায় তার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন আমাদের দমকল কর্মীরা।’

অপরদিকে উত্তর-পশ্চিম কানাডার অঞ্চল ইউকনে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইউকন সরকার বলেছে যে, তারা ক্লনডাইক উপত্যকায় চলমান বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা এবং ব্যবসায়িকদের আর্থিক সহায়তা এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদানের জন্য কাজ করছে।

ইউকন প্রিমিয়ার রঞ্জ পিল্লাই সোমবার বলেছেন যে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউকোনবাসীরা এমন একটি প্রোগ্রাম থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারে যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে অভাবীদের সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে ও শুকনো জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন।