আহসান রাজীব বুলবুল, কানাডা : উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে কানাডায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ১৪৩০। এ উপলক্ষ্যে দেশটির ক্যালগেরির মন্টগোমরি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আনন্দ উৎসবে মেতেছিল প্রবাসী বাঙালিরা।

বাংলার সবুজ মাঠ পেরিয়ে বিশ্ব প্রান্তরে সূর্যের হাসির তেমন দেখা না মিললেও প্রবাসীদের বৈশাখী আনন্দে যেন সেই রং ছড়িয়ে পড়েছে। মেলায় আড্ডা, লোকজ ভাবনা, বাংলার ঐতিহ্য ও আনুষ্ঠানিকতায় একে অপরের সান্নিধ্যে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বিনিময়ের মাধ্যমে আনন্দ জয়গানে হৃদয়-মন ভরে উঠেছিল প্রবাসীদের।

শিশু-কিশোর আর নারী-পুরুষের পদচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মন্টগোমেরি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তন।

আয়োজকরা বলছেন, নবপ্রজন্মের কাছে আবহমান বাংলার কৃষ্টি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জাতীয় সত্তাকে তুলে ধরাই ছিল বাংলা বর্ষবরণ উৎসবের মূল লক্ষ্য।

এদিন মেলায় ছিল রং বেরংয়ের বাহারী শাড়ি, বাংলার ঐতিহ্যময় পিঠাপুলি খাবারসহ আকর্ষণীয় বিভিন্ন ধরনের স্টল। ছোট ছোট শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্থানীয় শিল্পীদের ট্যালেন্ট শো, এছাড়া মূল আকর্ষণ ছিল ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের হাতে মুখ ও মুখোশ নিয়ে বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রা।

প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি বিদেশিরাও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আনন্দের আবহে সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি বাঙালির চিরাচরিত আড্ডা, গানের সুর, কবিতার ছন্দ, নাচ আর উপস্থাপনায় মেতেছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ।

অনুষ্ঠানের আয়োজক ‘আমরা সবাই’ সংগঠনের সভাপতি রুপক দত্ত বলেন, আমাদের রয়েছে সুন্দর একটি সংস্কৃতি। যে বলয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি, আমাদের সেই ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। সারা বিশ্ব আনন্দময় হয়ে উঠুক বছরের প্রথম দিনে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ক্যালগেরির বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. দিলীপ নন্দী বলেন, আমাদের বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে বিদেশিদের দেখে খুবই ভালো লাগছে। আশা করছি নতুন বছর সবার জীবনে আনন্দ আর অনাবিল শান্তি বয়ে আনবে, পয়লা বৈশাখের এই আনন্দ সারা বছর বাঙালিদের মাঝে বিরাজমান থাকবে।

ক্যালগেরির সংগীতশিল্পী বৈশাখী গুহ বলেন, আমরা বাংলাদেশের রমনার সেই বটমূলের বৈশাখকে খুব মিস করছি। তবুও দীর্ঘ দুই বছর পর পরিবার নিয়ে এখানে বৈশাখের আনন্দে শামিল হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। মঙ্গলময় হয়ে উঠুক পুরো পৃথিবী।

ক্যালগেরির কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব শুভ মজুমদার বলেন, হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়ে পৃথিবী নতুন করে জেগে উঠুক, বছরের প্রথম দিনে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।