সোনা কান্তি বড়ুয়া : আইনের শাসনে রাষ্ট্র আর ধর্ম দুটো আলাদা জিনিষ! মানুষ (হিন্দু মুসলমান) কেন তাহার শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে পারবে না? হিন্দু মুসলমানদের ধর্মের অপব্যবহারে ক্ষমতার মদমত্তে মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই কি ধর্মান্ধ হিন্দু মুসলমানদের বিভাজনের ধর্মের সা¤প্রদায়িক যুদ্ধ শুরু এবং ৪৭-এর দেশভাগ! বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম ধর্ম! রাষ্ট্র আর ধর্মের নামে পাকিস্তান ভারত বিভাজন এবং সা¤প্রদায়িক যুদ্ধ শুরু হয়! বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম ধর্ম!

রাষ্ট্র আর ধর্মের নামে পাকিস্তান ভারত বিভাজন এবং সা¤প্রদায়িক যুদ্ধ (বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত) শুরু হয়! উপমহাদেশ ধ্বংস করতে হিন্দু মুসলমানদের হিংসা পুষে রাখা ভারত (উপমহাদেশ) “ভাগ’ কথাটা: অন্ধ সা¤প্রদায়িকতার আমাদের সর্বস্ব; – আমাদের সত্তাকেই বিভক্ত করে রেখেছে। মহাকবি বড়ু চণ্ডীদাসের ভাষায়: ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’!” ভারতীয় উপমহাদেশ সাতচল্লিশে হিন্দু ও মুসলমানদের ধর্মের জন্য ভারত ও পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়ে ধর্ম হল অধর্ম – হিন্দু মুসলমানদের হিংসা পুষে রাখা ভারত “ভাগ, অন্যায় ন্যায় হল, সত্য হল অসত্য, অসত্য হল সত্য, অধর্ম যুদ্ধ হল ধর্ম যুদ্ধ!
৪৭-এর দেশভাগ পরবর্তী খুন-ধর্ষণ, ছিন্নমূল মানুষদের পালানোর প্রচেষ্টা ইতিহাস, এই যে সাধারণ মানুষ মারা যাছে, নিজ ভূমি হ’তে অন্য দেশে শরণার্থী- এই ক্ষতি তো মানবতার। এই লজ্জা তো সমগ্র মানবজাতির। আমরা যেহেতু এখন আর আদিম যুগে বসবাস করছি না, তাহা হইলে আমাদের কার্যকলাপ কেন এখনো আদিম যুগের চাইতেও লজ্জাজনক হ’বে? মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। ভূপেন হাজারিকার একটি গানের লাইনে বলা হছে- ‘মানুষ যদি সে না হয় মানুষ, দানব কখনো হয় না মানুষ। যদি দানব কখনো বা হয় মানুষ, লজ্জা কি তুমি পাবে না?’

প্রতিবেশী ভারতের রাষ্ট্র প্রধান ৪ জন মুসলমান হলে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে একজনও হিন্দু বা সংখ্যালঘু নেতা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারছেন না কেন? নির্লজ্জ হিন্দু জাতীয়তাবাদী ও নির্লজ্জ মুসলিম লিগ, দু’ পক্ষকেই ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এই হিন্দু ও মুসলিম উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবাদর্শকে দূরে সরিয়ে রেখে এক বহু-সংস্কৃতির ভারত গঠনের কথা বলেছিলেন, যেখানে জনজীবনে সমস্ত রাজনৈতিক স¤প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। ধর্ম নামক ক্যানসার বা মহামারি রোগে উপমহাদেশ সরকার (GOVERNMENTS) রোগগ্রস্থ হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কি ভাবে লড়বে? ভারত মাতার দেশে আইনের শাসনে হিংস্র উচ্চবর্ণেরহিন্দুরা ও মুসলিম লিগ, ধর্মকে ঢাল তলোয়ারের মত ব্যবহার করছে ! ডিসেম্বর ১৯৪৯ খুলনা এবং ১৯৫০, ৮ই ফেব্রুয়ারি বরিশাল ও ঢাকায় সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা হবার পর এক লাখের কাছাকাছি মানুষ ভারতে চলে আসেন। এরপর আসেন ব্যবসাদার শ্রেণী। এর ফলে ৮ই এপ্রিল ১৯৫০ সালে নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৫২ সালে পাসপোর্ট-ভিসা চালু হবার পর দু-লক্ষ এবং পরবর্তী মাসগুলোতে গড়ে ১০ হাজার করে মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসেন।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে নিয়ে রাজনীতি করার ফলে পাকিস্তান আজ সর্বনাশের পথে চলেছে। ভারতীয় সংবিধান বিরোধি বর্তমান ভারতের জাতিভেদ প্রথা (ব্রাহ্মণ ও দলিত বিতর্ক) এবং মনুস্মৃতি নামক হিন্দু আইন গ্রন্থের নীতিমালা। সকল ধর্মে মানুষ মানুষের আত্মীয় স্বজন। বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম ধর্ম! ১৪ আগস্ট এবং ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভেঙে ধর্মের নামে পাকিস্তান এবং ভারত প্রতিষ্ঠা ট্রাজেডী! এবং ইহা উপমহাদেশ আইনের শাসনে হিউম্যান রাইটস এবং ধর্মনিরপেক্ষতার কলঙ্ক। ৪৭-এর দেশভাগ পরবর্তী খুন-ধর্ষণ, ছিন্নমূল মানুষদের পালানোর প্রচেষ্টা ইতিহাস, যুদ্ধবিজ্ঞানে বলা হয়, ক্ষমতার মদমত্তে মানুষের মনস্তত্ত¡ জটিল হইয়া যায়।
সমগ্র বাংলা যদি দুটো ভাগে ভাগ করে ভারতের দুই অঙ্গ রাজ্য স্বরূপ রাখা যেত তাহলে প্রায় ২০০ জন বাঙালী এমপি দিল্লিতে যেতে পারতেন। দ্বিতীয়ত বাংলা ভাষাই হত সর্বাধিক জনগণের ভাষা। হয়তো রাষ্ট্র ভাষার দাবিদার হতে পারতো।

আজ সি এ এ ইত্যাদি যেসব কাণ্ড চলছে, ডিটেনশন ক্যাম্প ইত্যাদি, এসব সমস্যার তো সৃষ্টি হত না। ভারতবর্ষে পূর্ববঙ্গের (বাংলাদেশে) বাঙালি উদ্বাস্তুদের জন্য সব থেকে বড় যে ট্রানজিট ক্যাম্প খোলা হয়েছিল তা তখনকার সময়ের মধ্যপ্রদেশের রায়পুর জেলার “মানা ক্যাম্প”। তার আশেপাশে মানার অন্তর্ভুক্ত আরও কতগুলি ক্যাম্প খোলা হয়েছিল, যেমন- ট্রানজিট ক্যাম্প। এই সমস্ত ক্যাম্পগুলি খোলা হয়েছিল মুরাম বিছানো মরুর বুকে মরুর বুকে দিগন্ত বিস্তৃত খোলা ময়দানে। দুরন্ত তাপদাহে যে লাল কালো লৌহ সদৃশ্য মুরাম খনিতে কোনো উদ্ভিত জন্মাতে সাহস করে না, সেই নিষ্ঠুর বন্ধ্যা জমিতে অসংখ্য তাঁবু ফেলে শস্য-শ্যামল সোনার বাংলার মানুষগুলিকে এনে ছেড়ে দিয়েছিল তত্কালীন সরকারী প্রশাসকরা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়:
“দীর্ঘ জীবনপথ, কত দুঃখতাপ, কত শোকদহন–
গেয়ে চলি তবু তাঁর করুণার গান
খুলে রেখেছেন তাঁর অমৃতভবনদ্বার–
শ্রান্তি ঘুচিবে, অশ্রæ মুছিবে, এ পথের হবে অবসান
অনন্তের পানে চাহি আনন্দের গান গাহি–
ক্ষুদ্র শোকতাপ নাহি নাহি রে।
অনন্ত আলয় যার কিসের ভাবনা তার–
নিমেষের তুচ্ছ ভারে হব না রে ম্রিয়মাণ”

পূর্ববঙ্গের (বাংলাদেশে) উদ্বাস্তুদের ভাগ্য নিয়ন্তাগণ যেভাবে ভাগ্য নির্ধারণ করেছিলেন, তার মধ্যে দুর্ভাগ্যের অশনি সংকেত পেয়ে ক্যাম্পগুলিতে উঠেছিল প্রবলভাবে প্রতিবাদের ঝড়। এই প্রতিবাদে সমস্ত ক্যাম্পের মানুষগুলি সমস্বরে বলে পিঠে “আমরা বাংলা মায়ের সন্তান। আমাদেরকে আমাদের মাতৃক্রোড়ে বঙ্গভূমিতে পুনর্বাসন দেওয়া হোক।” এই দাবিতে সমস্ত উদ্বাস্তুদের নিয়ে গড়ে ওঠে “উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতি” এই সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন শ্রী সতীশ মণ্ডল, শ্রী রঙ্গলাল গোলদার, শ্রী রাইচরণ বারুই, শ্রী অরবিন্দ মিস্ত্রী, প্রমুখ ব্যক্তিগণ। তখনকার সময় কর্তা ছিলেন কর্নেল নন্দী সাহেব। সমিতির পক্ষ থেকে নন্দী সাহেবের কাছে বঙ্গভূমিতে পুনর্বাসনের আবেদনপত্র দাখিল করা হয়। শুরু হয় বিশাল বিশাল মিছিল, অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, আমরণ অনশন।

১৯৫৫ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সীমান্ত পার হতে থাকেন মাসে ৩০ হাজার। ১৯৫৬ সালের থেকে মাইগ্রেসন ছাড়া ভারতে আসার অনুমতি দেওয়া হলো না। ২৬শে ডিসেম্বর ১৯৬৩ শ্রীনগর হজরতবাল মসজিদ থেকে কেশ চুরি যাবার ঘটনায় সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে দাঙ্গা হয়।

তখন বহু হিন্দুরা, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষেরা ভারতে আশ্রয় নেয়। ১৯৬৪ সালে যারা পশ্চিমবঙ্গে এলেন, তাদের জন্য কোনো ক্যাম্প খোলা হল না। রিসিভিং সেন্টার থেকে চিরকুট ধরিয়ে বিভিন্ন স্টেশন থেকে তাদের সরাসরি দণ্ডকারণ্যে পাঠানো হল। এরাই হচ্ছে সরকারের বাড়তি বোঝা এবং তথাকথিত “আপদ”। এই আপদগুলোকে মানুষ ভাবা হয়নি। তাই নানা শিবিরগুলোতে এদের জেলখানার আসামীদের চেয়েও চরম অব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছিল। ৮-১০ বছর নারকীয় ক্যাম্প জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে ফেলা হয়েছিল দণ্ডকারণ্যে। হযরত মোহাম্মদ (সা:) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার উপদেশ দিয়েছেন। চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। এখানে সর্বাত্মক রাষ্ট্র আর ধর্ম দুটো আলাদা জিনিষ। ১৯৪৭ সাল ১৪ আগস্ট এবং ১৫ আগস্ট মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে দেশ ভাগ’ পাক ভারত বিভাজন অপরাধ (ঈজওগঊ) ছিল!

দণ্ডকারণ্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তৈরী হয়েছিল উড়িষ্যার কোরাপুট জেলা ও মাধ্যপ্রদেশের (বর্তমান ছত্রিশগড়) বস্তার জেলার ২৫০০০ বর্গমাইল অবহেলিত বন নিয়ে ১২ই সেপ্টেম্বর ১৯৫৮ সালে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্বাস্তুদের এনে প্রথম পুনর্বাসন দেওয়া হয় বস্তার জেলার ফরাসগাঁও অঞ্চলে তিনটি গ্রামে ১৯৫৮ সালে। এখানে কৃষি জমিতে দেওয়া হয় ১০৫টি পরিবার ও ক্ষুদ্রশিল্পে ৪৫টি পরিবার। দ্বিতীয় পত্তন হয় উড়িষ্যার কোরাপুট জেলার উমরকোট অঞ্চলে। ১৪টি গ্রামে ১২৪০টি পরিবার বসানো হয়। রায়পুর অঞ্চলে বসানো হয় ২৪টি গ্রামে ১৫৪৫টি পরিবার। তৃতীয় পাখানজোড় জন্যে বসানো হয় ৪৫টি গ্রামে ২২৩৯টি পরিবার। সবশেষে পত্তন হয় মালকানগিরির ২৩টি গ্রামে ১০২৩টি পরিবার। এখানের এই জোনটি ছিল পরিকল্পনাহীন।

বাম রাজনীতির শিকার! উদ্বাস্তু উন্নয়নশীল সমিতির পক্ষ থেকে সতীশবাবু চিঠিপত্রের মাধ্যমে সমস্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের উদ্বাস্তুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করেছিল। ১৯৭৮ সালের জানুযারী মাসে বামফ্রন্ট সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী রাম চ্যাটার্জী ও পশ্চিমবঙ্গ ফরওয়ার্ড বø

ব্লকের সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বহিঃবাংলার উদ্বাস্তু পুনর্বাসন কেন্দ্রে যথা মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর, মধ্যপ্রদেশের পারুলকোট, অন্ধ্রপ্রদেশের কাগজনগর, উড়িষ্যার উমরকোট, মালকানগিরিতে গিয়ে বিভিন্ন জনসভায় ভাষণ দিয়ে বলেন, “কংগ্রেস সরকার আপনাদের দণ্ডকারণ্যে এনে পুনর্বাসিনের নামে যে নির্বাসন দিয়েছে, এটা আমরা স্বচক্ষে দেখলাম। আপনাদের এই অবর্ণনীয় দঃখদুর্দশা সত্যিই দেখা বা সহ্য করা যায় না।
স্বাধীন ভারতে হিন্দু ধর্মের নামে সা¤প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রতি দিন ৮ জন দলিত নারী ধর্ষিত হন। অবশ্যই এই সংখ্যা বাস্তবে আরও অনেক বেশি, কারণ অনেক দলিত মেয়ের ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয় না। বাংলা ভাগ রহস্য (দিলীপ গায়েন)! ভারত তার নিজস্ব শক্তিবলে সেই সময় মুসলিম-প্রধান কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে রাখতে পারলো। তাহলে সেই শক্তিতে ভারত কি মুসলিম-প্রধান পূর্ব বঙ্গকে ভারতের মধ্যে রাখতে পারতো না? কি দরকার ছিল বাংলা ভাগের?

একাত্তরের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন। পাকিস্তান ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে অপব্যবহার করে ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা, ২ লক্ষ মা – বোনকে ধর্ষন এবং বুদ্বিজীবি হত্যা করেছিল। বার শত মাইল দূরের পাকিস্তানী সেনাশাসক ইয়াহিয়া খান ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে গোলাম আজমের জামাত এবং মুসলিম লীগের যুদ্ধাপরাধীরা অসহায় ৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যায় একসাগর রক্তের বিনিময়ে সর্বকালের বাংলাদেশের আবির্ভাবে অবাক পৃথিবী তাকিয়ে রয়।

বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত ধরনীতল এবং উপমহাদেশ! “আত্মসুখকে জয় করার কথা” পৃথিবীর সর্বপ্রথম বাংলা সাহিত্য গ্রন্থ ‘চর্যাপদ’ এবং বাট্রেন্ড রাসেল তাঁর লেখা “কন্কোয়েষ্ঠ অব হ্যাপীনেস” নামক বইতে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। ভারতে হিন্দু ও মুসলমানদের সা¤প্রদায়িকতা রাজনীতিতে কীভাবে প্রবেশ করেছে এবং কীভাবে তা দূর করা যায়, এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে হবে। রক্তপাত তো অধর্ম ও অন্ধকারের কথা। রাজনীতির সঙ্গে যখনই ধর্ম এসেছে, অন্যায় ন্যায় হল, সত্য হল অসত্য, অসত্য হল সত্য, অধর্ম যুদ্ধ হল ধর্ম যুদ্ধ! হযরত মোহাম্মদ (সা:) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার উপদেশ দিয়েছেন। পলিটিক্যাল হিন্দু ও ইসলাম চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী!

হিন্দু মুসলমানদের ক্ষমতার রাজনীতি মদমত্তে মানুষের মনস্তত্ত¡ জটিল হয়া যায়। রাজনীতির পিঠোপিঠি এসেছিল বিভাজন-উত্তর রাজনীতি, বিভাজনের পাশাপাশি ঘটেছিল “বিভাজনের মধ্যে বিভাজন”। বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ (২০২১) মানে বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিবাদ জানাই অবিলম্বে বিচার দাবি জানাচ্ছি, এই নেক্কারজনক ঘটনা বাংলা জমিনে যেন আর না ঘটে! হিন্দু মুসলমানদের ধর্মের নামে পাক ভারত বিভাজন অপরাধ (CRIME) ছিল! হিন্দু মুসলমানদের হিংসা পুষে রাখা ভারত “ভাগ’ কথাটা এখানে রক্তে রাঙানো ১৯৪৭ সাল ১৪ আগস্ট এবং ১৫ আগস্ট! দেশ ভাগ’ এখানে সর্বাত্মক : দেশের ভাগ, মানচিত্রের ভাগ, আত্মা, সম্পর্ক, যোগাযোগ, এমন কি আমার লিখিত “আমি’টির ও ভাগ, পার্টিশন আমার সর্বস্ব; আমার সত্তাকেই বিভক্ত করে রেখেছে। দেশের ভাগ, মানচিত্রের ভাগ, আত্মা, সম্পর্ক, যোগাযোগ? ক্রমাগত ঐতিহাসিক হতে থাকা পাকিস্তান ভারত পার্টিশন ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থানের জন্য বিপক্ষীয় জাতিকে পৃথকীকরণ করা ও হিংসা পুষে রাখা তাদের বিরুদ্ধে।
ঐতিহাসিক ভাবে ভারতের কংগ্রেস স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকে বহুত্ববাদের প্রবক্তা বহু-সংস্কৃতির ভারত গঠনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের কবিতায় “হেথায় আর্য হেথায় অনার্য, / হেথায় দ্রাবিঢ় চিন, / শকহূন দল পাঠান মোগল একদেহে হল লীন।”
ভারতের সংবিধানে লেখা রয়েছে, “আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্ হিসেবে গঠন করতে চাই। একই সঙ্গে এর নাগরিকদের সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার, চিন্তা, প্রকাশ, বিশ্বাস, আস্থা ও উপাসনার স্বাধীনতা মর্যাদা ও সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে চাই এবং তাদের সকলের মধ্যে সকল ব্যক্তির মর্যাদা ও দেশের ঐক্য ও সংহতি নিশ্চয়তাদায়ী সৌভ্রাতৃত্ব বাড়িয়ে তুলতে চাই!”

পার্টিশান-এর সর্বাত্মক কথা বলে, সব কিছু ভাগাভাগির কথা বলে। এই অর্থেই শেষ পর্যন্ত একটা তারিখ (১৪ আগস্ট-১৫ আগস্ট) হয়ে থাকে না, হয়ে ওঠে একটি প্রক্রিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর-প্রজন্মের বাঙালি পাঠকের কাছে পার্টিশনকে দেখা-জানা-ছোঁয়ার এখন কিন্তু প্রাসঙ্গিক সমস্যা ও বিশেষত্ব তৈরী হয়েছে যা নিয়ে নতুন কথা চালাচালি শুরু হওয়া দরকার। দেশভাগের মোট প্রজন্ম হন্তারক ঐতিহাসিকতা নিয়ে তো এই প্রজন্ম আসেনি। হিন্দু জাতীয়তাবাদী ও মুসলিম লিগ,ধর্মকে ঢাল তলোয়ারের মত ব্যবহার করছে! জাতিভেদ প্রথা হিন্দুরাষ্ট্র ওহিন্দুধর্মেরদৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’!

সেই উগ্র মুসলমান রাজনীতি কেমন করে ভুলে গেলেন যে, একদা রাশি রাশি বৌদ্ধ ধর্মস্থান ধ্বংস করে পাকিস্তানের বৌদ্ধ ভূমি দখল করে নিয়েছে! মুসলমান রাজনীতি (তক্ষশীলা), কাশ্মীর, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং ইব্দোনেশিয়া দখল করে ইসলাম প্রচার করেছেন। জনতা সহ আমরা বৌদ্ধ নির্যাতন এবং বৌদ্ধ বিহার ধ্বংসযজ্ঞের বিচার চাই। ভারত নামক রাষ্ট্রটি ভারতের জনতাকে (দলিত) নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
বৌদ্ধদেশে বৌদ্ধ রাজনীতির ইসলামীকরণ হ’ল কেন? ইসলামপন্থী জঙ্গীরা প্রাচীন, বিশ্ববৌদ্ধ সভ্যতার পুরাকীর্তি, জাদুঘর (BAMIYAN BUDDHA STATUE IN AFGHANISTAN BOROBUDUR IN INDONESIA , NALANDA BUDDHIST UNIVERSITY , BIHAR (INDIA) BUDDHA STATUES IN PAKISTAN, RAMU ,BUDDHAGAYA) গ্রন্থাগার সব ধ্বংস করছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-দীক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি সব ধ্বংস করে ওরা বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়?

১. পাকিস্তান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ ২.আফগানিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ। ৩.কাজাখস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ। ৪.উজবেকিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ। ৫.তাজিকিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
৬.আজারবাইজান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
৭. মালদ্বীপ বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
৮.বাংলাদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ,অবশিষ্ট বিলুপ্তি সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
৯. মালয়েশিয়া বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১০. ইন্দোনেশিয়া বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১১. খোটান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১২. তুর্কমেনিস্তান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১৩.কিরগিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
১৪. ইরান প্রদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
১৫. বেলুচিস্তান প্রদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
“বাংলাদেশের অপাপবিদ্ধ শান্তিকামী বৌদ্ধদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করতে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বাংলাদেশে মুসলমান লেখকগণ গৌতমবুদ্ধকে ব্যঙ্গরুপদানে অত্যন্ত নোংরা ও কুরুচিপূর্ণতথ্য বিভ্রাট ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই লিখেছেন! ২৯শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বৌদ্ধ ইতিহাসের একটা ভয়াল কালো অধ্যায়। ২০১২ সালের এই দিনে ফেসবুকের একটা স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে রামুতে বৌদ্ধ বিহারে তান্ডব চালায় উগ্র ইসলামপন্থী জঙ্গীরা।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!
হিন্দু জাতীয়তাবাদী ও মুসলিম লিগ, দু’ পক্ষকেই নেহরু সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।