অনলাইন ডেস্ক : উন্নত চিকিৎসা নিতে চলতি মাসে বিদেশে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি মাল্টিপল ডিজিজ সেন্টারে লিভার প্রতিস্থাপনসহ জটিল সমস্যাগুলোর চিকিৎসা করাবেন তিনি। তাঁর দেশি-বিদেশি চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য এবং দলের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবশ্য এর আগে পুরো শরীর চেকআপ করে খালেদা জিয়ার অন্য জটিলতাগুলো কমিয়ে আনতে হবে বলে জানা গেছে। চিকিৎসকদের মতে, প্রথমেই লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তাই শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশে যাবেন। তবে কোথায় যাবেন, কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন– তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি আরও জানান, প্রায় দেড় মাস ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। গত কয়েক দিন ধরে ওনার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল বলা যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তাঁকে থাকতে হয়। এখন সিসিইউর সুবিধাসমেত কেবিনে তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিদেশে মাল্টিপল সেন্টারে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তাঁকে বিদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। যথাসময়ে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগে গত শুক্রবার এক দোয়া অনুষ্ঠানে বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া অতি শিগগির বিদেশে যাচ্ছেন। তাঁর এমন বক্তব্যের পর আলোচনায় আসে দলের চেয়ারপারসনের বিদেশযাত্রা।

মেডিকেল বোর্ডের আরেকজন সদস্য জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক তাঁর সব পরীক্ষার রিপোর্টগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সব দিক বিবেচনা ও সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন সবাই।

দীর্ঘদিন ধরেই খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড, দল ও তাঁর পরিবার বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছে। আইনের যুক্তি দেখিয়ে বরাবরই সরকার তা নাকচ করে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সামনে আসে। সব রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন। বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।