অনলাইন ডেস্ক : প্রবল রোদের মধ্যে একটা ছাতার নিচে বসে এক সুঠামদেহী যুবক মাটি গুঁড়ো করছেন। একটু পরই দেখা গেল একটা উইকেটের মতো জায়গায় ইট এনে এনে বসাচ্ছেন। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই কে এই যুবক। তবে মাথাটা উঁচু করতেই বোঝা গেল তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, তিনি নিজ হাতে উইকেট বানাচ্ছেন। আর এই উইকেট বানানোর ভিডিওই দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

না, সাইফউদ্দিন পেশা বদলে ফেলেননি। নিজের প্রয়োজনেই উইকেট বানিয়ে নিয়েছেন। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ফেনীতে আছেন। ঈদের পর থেকে ফেনী স্টেডিয়ামে অনুশীলনও করছিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যা হতে থাকায় নিজেই উইকেট বানানোর কাজে হাত দিয়েছেন। একটু হেসে বলছিলেন, ‘এখানে বোলিং করতে গেলে গর্ত হয়ে যাচ্ছিল। এই গর্তগুলো তো বিপজ্জনক। তাই আমার মনে হলো, যে বক্সটায় বল করি, অন্তত সেটুকু বানিয়ে নিলে হয়। মাটি জোগাড় করলাম। তারপর ইউটিউব দেখে আর নিজের ধারণা থেকে এটা বানিয়ে ফেলেছি। দিন দশেকের মধ্যে এটাতে বল করতে পারব।’

নিজেকে প্রস্তুত রাখতে চেষ্টার কোনো অভাব নেই সাইফউদ্দিনের। বিশ্বকাপের আগে থেকেই ক্রিকেট মাঠে সময়টা অম্লমধুর যাচ্ছিল এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের। মাঠে নামলে দারুণ সাফল্য পাচ্ছেন। কিন্তু প্রায়ই ভোগাচ্ছিল তাকে পিঠের একটা ইনজুরি। বিশ্বকাপের পর থেকে অনেক দিন মাঠেও নামতে পারেননি। অবশেষে যখন খেলায় ফিরলেন, তখনই করোনার জন্য স্থগিত হয়ে গেল খেলা।

এখন তার চ্যালেঞ্জ হলো আবার ক্রিকেট শুরু হলে নিজেকে পুরো ফর্মে মাঠে রাখা। আর সে জন্য ফেনীতে গিয়ে একেবারেই বসে নেই। বলছিলেন, নিজের উন্নতির সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।

সেই চেষ্টায় কমতি নেই এই অলরাউন্ডারের। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকেই চলে গেছেন ফেনীর বাড়িতে। সেখানে ঘরে তো টুকটাক ট্রেনিং করছেনই, বাসার বাইরেও ট্রেনিং করছেন জোরেসোরে। তিনি বলছিলেন, ‘আমার অন্য যে কোনো ক্রিকেটারের চেয়ে একটা সুবিধা হলো, আমার বাসার কাছেই একটা মাঠ আছে। হেঁটে যেতে দুই-তিন মিনিট সময় লাগে। ওখানে লোকজন থাকে না। এমনিতেই অত সকালে কেউ যায় না। আর এখন তো লকডাউন অবস্থা। আমি মাঠে গিয়ে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করি। আরেকটা সুবিধা হলো, একটা জিম আছে এখানে। বন্ধই থাকে এই সময়ের কারণে। কিন্তু আমি মালিককে বলে খুলে ট্রেনিং করি।’