অনলাইন ডেস্ক : ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে লেবাননে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক সাংবাদিক নিহত হয়েছে। শুক্রবার ইসরায়েল থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আঘাত করলে দক্ষিণ লেবাননে ওই ভিডিও সাংবাদিক নিহত হন। এই ঘটনায় আরো ছয়জন সাংবাদিক আহত হন। ঘটনাস্থলে থাকা রয়টার্সের অন্য একজন চিত্রগ্রাহক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আলজাজিরা এবং এজেন্স ফ্রান্স-প্রেসসহ সাংবাদিকদের দলটি ইসরায়েল সীমান্তের কাছাকাছি আলমা আল-শাবের কাছে কাজ করছিলেন। যেখানে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং লেবানিজ মিলিশিয়া হিজবুল্লাহ সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এবং হিজবুল্লাহর একজন আইনপ্রণেতা এই ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে ইসরায়েলের জাতিসংঘের দূত গিলাদ এরদান শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘অবশ্যই আমরা কখনই এমন কোনো সাংবাদিককে আঘাত বা হত্যা করতে চাই না, যারা কাজ করছে।’ তিনি আরো বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
রয়টার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সম্প্রচারকারীদের জন্য একটি লাইভ ভিডিও করার সময় সময় ইসাম আবদুল্লাহ নিহত হয়েছেন। ক্যামেরাটি পাহাড়ের দিকে ছিল, তখন বড় একটি বিস্ফোরণে ক্যামেরাটি কেঁপে ওঠে।
রয়টার্স আরো বলেছে, ‘আমাদের চিত্রগ্রাহক ইসাম আবদুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে জেনে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। আমরা জরুরীভাবে আরো তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। ওই অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি এবং ইসমের পরিবার ও সহকর্মীদের সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলেছে, তাদের দুই সাংবাদিক এই ঘটনায় আহত হয়েছেন।
স্পষ্টতই তাদের প্রেস হিসেবে আলাদা করা যায়। এই ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে তারা বলেছে, এই অপরাধমূলক কাজের পিছনে যারা রয়েছে তাদের সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।
আলজাজিরা এক বিবৃতিতে আরো বলেছে, ‘সাংবাদিকদের গাড়িটি বোমা বিস্ফোরণে সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে। একটি সুরক্ষিত স্থানে আন্তর্জাতিক মিডিয়া থাকার পরেও এমন ঘটনা ঘটল।’
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবদুল্লাহর মা ফাতিমা কানসো তার ছেলের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তারা সবাই সাংবাদিকদের পোশাক পরেছিল এবং প্রেস শব্দটি দৃশ্যমান ছিল। ইসরায়েল এই অপরাধ অস্বীকার করতে পারে না।’
আবদুল্লাহ নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের একটি হেলমেট এবং ফ্ল্যাক জ্যাকেট পরা ছবি পোস্ট করেছিলেন। যাতে ‘প্রেস’ শব্দটি দৃশ্যমান ছিল। ইসরায়েলের জাতিসংঘের দূত এরদান এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সর্বদা বেসামরিক মানুষদের এড়াতে চেষ্টা করি। আমরা নিহতের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি এবং বিষয়টি তদন্ত করব।’
সূত্র: রয়টার্স