অনলাইন ডেস্ক : গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে বিতাড়িত করার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এরমধ্যে গাজাবাসীকে সৌদিতে স্থানান্তরের কথাও বলেছেন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।
তাদের এমন বক্তব্যের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে সৌদি। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একনাগাড়ে সমালোচনা করে যাচ্ছে। এছাড়া দেশটির সরকারও কঠোর ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস, যাকে সৌদি শত্রু ও সন্ত্রাসী মনে করে, সেই হামাসের প্রতিও সুর নরম করেছে তারা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব।
তারা বলেছে, আগে সৌদির সংবাদমাধ্যমগুলো পররাষ্ট্র নীতি অনুসারে কথা বলত। কিন্তু এখন তারা সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কথা বলছে।
নেতানিয়াহু যখন সৌদিতে ফিলিস্তিনিদের আলাদা রাষ্ট্র গঠনের হাস্যকর প্রস্তাব দেন, তার কিছুক্ষণ পরই কড়া ভাষায় এক বিবৃতিতে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা নেতানিয়াহুর প্রস্তাব নিয়ে বলে, “এগুলো উগ্রবাদীদের কথা, দখলদারিত্বে চিন্তাভাবনা। যারা ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সেখানকার মানুষের গুরুত্বকে উপলব্ধি করতে পারে না।”
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, গাজায় ইসরায়েল যে গণহত্যা ও তাদের সমূলে উৎখাতের চেষ্টা চালিয়েছে সেখান থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছেন নেতানিয়াহু।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, “ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ডের ওপর বৈধ অধিকার রয়েছে। তারা বাইরে থাকা আসেনি বা কোনো অভিবাসী নয়, যাদের ইসরায়েলের ইচ্ছায় উচ্ছেদ করা যাবে।”
দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আল-ইখবারিয়া টিভিকে এক বিশ্লেষক বলেন, “ইসরায়েলের সঙ্গে রাষ্ট্র শব্দটি আর যায় না।” অথচ সৌদি দুই বছর আগেও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছিল।
আল-ইখবারিয়া নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করে তাকে ‘ইহুদিবাদী ও এবং ইহুদিবাদীর সন্তান’ হিসেবে অভিহিত করেছে। আরও বলেছে, দখলদারিত্বের একটিই মুখ আছে। আর সেটি হলো বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
অপরদিকে আল-আরাবিয়া নেতানিয়াহুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেছে, হয়ত মানসিক সমস্যার কারণে তিনি এমন প্রস্তাব দিয়েছেন।
হামাসের প্রতি দেশটির সংবাদমাধ্যমের মনোভাবও হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে গেছে। আগে হামাসকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে অভিহিত করলেও; গাজাবাসীদের নিয়ে হামাসের দেওয়া দুটি বিবৃতি তারা প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি আশরাক আল-আওসাত নামে একটি সংবাদমাধ্যম হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ইজ্জাত আল-রিশকের বক্তব্য প্রকাশ করেছে।
সৌদির লেখক নওয়াফ আল-কুদাইমি এটিকে ‘একটি অসাধারণ মুহূর্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সৌদি চাইলে এখন হামাসের সঙ্গে প্রতীকি সম্পর্ক গড়তে পারে। তারা চাইলে এবারের রমজানে হামাসের নেতাদের ওমরাহ করার সুযোগ দিতে পারে।
সূত্র: দ্য নিউ আরব