অনলাইন ডেস্ক : অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে ইরান, সৌদি আরবসহ ছয়টি দেশ নতুন সদস্য হিসেবে আগামী বছর যুক্ত হচ্ছে। তবে এতে নেই বাংলাদেশের নাম। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলমান সম্মেলনের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার জোটের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হন ব্রিকসের পাঁচ নেতা। সম্মেলনের শেষ দিনে নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। খবর আল জাজিরা।
ব্রিকসে যুক্ত হতে আমন্ত্রণ পাওয়া দেশগুলো হলো- ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, মিশর, ও ইথিওপিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা আজ বলেন, ব্রিকসে যুক্ত হতে যাওয়া দেশগুলোর সদস্যপদ আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
বিকাশমান পাঁচ অর্থনীতির জোট ব্রিকস- এর নামকরণ করা হয়েছে পাঁচ সদস্য- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম অক্ষর দিয়ে। পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্য ও মাতব্বরি রুখতে বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এই জোটের যাত্রা। মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে শুরু হয় এই জোটের তিন দিনের ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন। বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৩ শতাংশ এবং বিশ্বের জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ এ জোটভুক্ত সদস্য দেশগুলো প্রতিনিধিত্ব করে। তারা বৈশ্বিক বিষয়ে পশ্চিমা অর্থনৈতিক আধিপত্যকে পাশ কাঠিয়ে এগিয়ে যেতে যায়।
সম্মেলনে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় এই সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
এই পাঁচ দেশ ছাড়াও জোটে যুক্ত হতে আগ্রহী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জোহানেসবার্গে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
জোটের সদস্য হতে চলা নতুন দেশগুলোকে স্বাগত জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি দেশগুলোর নেতা ও জনগণকে অভিনন্দন জানান। জোটের লক্ষ্য বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিশ্বমঞ্চে সদস্যদেশগুলোর স্বার্থরক্ষা। তবে ব্রিকসকে পশ্চিমা দেশগুলোর আধিপত্যের বিপরীতে বিকল্প এক বিশ্বব্যবস্থা তৈরির উপায় হিসেবে দেখছে চীন।
এই পাঁচ মূল সদস্য ছাড়াও জোটে যুক্ত হতে আগ্রহী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে যোগ দেন। বলা হচ্ছে, জোহানেসবার্গের সম্মেলনে ৫০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিয়েছেন। ব্রিকস জোটের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে ও সম্প্রসারণ ছিল এবারের সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয়। সম্মেলনের শুরু থেকেই জোটের সম্প্রসারণের বিষয়ে সম্মত ছিলেন নেতারা। তবে কীভাবে এই জোটের সম্প্রসারণ হবে এবং কবে হবে, তা নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। কারণ, চীন চাইছে যত দ্রুত সম্ভব এই জোটে দেশের সংখ্যা বাড়ানো হোক। তবে এই ব্যাপারে খানিক সতর্ক অবস্থানে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত।
এই পরিস্থিতিতে রামাফোসা গতকাল বলেন, ব্রিকসের সব সদস্যই জোটের সম্প্রসারণের বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিকস পরিবার বড় করার ব্যাপারে চূড়ান্ত অবস্থান নিয়েছি।’
সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা জানিয়েছেন, এই জোটে তার প্রতিবেশী দেশ আর্জেন্টিনার যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপকে তিনি সমর্থন করেন। ২০২৪ সালে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন হবে রাশিয়ায়। এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, তার দেশ ব্রিকসের শক্তি বাড়াতে কাজ করবে।