সোনা কান্তি বড়ুয়া : জয় বঙ্গবন্ধু! জয় বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালী বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন আজ। পাকিস্তান রাজনীতির মাফিয়া চক্রে ধর্মান্ধ ধর্মের মস্তক বিক্রয় করে পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে ১৪ আগষ্ঠ ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে বার শত মাইল দূরের বাংলাদেশকে দখল করল! পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা!

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী রাজনীতির বাংলাদেশী হত্যাযজ্ঞ বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন আজ। জাতির আত্মপরিচয়ের ইতিহাসে জয় বাংলার বিজয় দিবস! ঐতিহাসিক “বাঙালী শব্দ মানে “মানুষ নিজের ভুবনে নিজেই সম্রাট।” অর্থাৎ “আমি আজ বাঙালি হয়ে ‘অহং’ কে জয় করে সিদ্ধপুরুষ হয়েছি।” চর্যাপদের ৪৯ নম্বর কবিতায় সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবিষ্কৃত হল! বাংলাদেশের বিশ্ববিজয়ী মহাশান্তি মহাপ্রেম। কারন বাঙালী জাতির আত্মপরিচয়ে বিশ্বমানব হবি যদি আদর্শ বাঙালি হও, সম্পূর্ন বাঙালি (আলোক প্রাপ্ত মহাপুরুষ) হও।”

বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যা ডায়েরি অব জেনোসাইড! ধিক্কার পাকিস্তান রাজনীতির ইয়াহিয়া খান সরকারেরকে এবং পাকিস্তান রাজনীতির জাল-জালিয়াতি প্রত্যহ ব্যাপকতর, প্রকটতর- এবং নির্লজ্জতর! পাকিস্তান দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের সহযোগিতায় অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের বরেণ্য মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে পাকিস্তান বাংলাদেশে নর-নারী হত্যার উল্লাস ইসলাম এবং মানবজাতির ধর্ম নয়! ইতিহাসের পাতা থেকে মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর এই প্রথম জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তান রাজনীতির সংঘটিত ভয়াবহতম, বীভৎস, বর্বর গণহত্যা ও জেনোসাইড নিয়ে আলোচনা যাচ্ছে। ক্ষমতার মাথায় চড়ে বসা পাকিস্তান রাজনীতির ইয়াহিয়া খান সরকারের লোকগুলোর মাথায় যখনই অক্সিজেন কম যেতে শুরু করে, তখনই তারা চার পাশের মানুষের লজ্জা, হায়া শুষে প্রশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে; যে ভাবে দ্রৌপদীর শাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে দুর্যোধন, দুঃশাসন নিজেদের ক্ষমতা-স্তম্ভ আর অসহ্য দম্ভের অনন্ত নগ্নতাকে ঢাকার চেষ্টা করেছিল। লজ্জা তখন দ্রৌপদীর এবং ২ লাখ মা-বোনের ছিল! ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থ! দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের সহযোগিতায় অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের বরেণ্য মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনার স্মরণে ১৪ ডিসেম্বর পালিত হয়ে আসছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আসন্ন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সেই নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। তিনি গ্রন্থটি পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা এবং ইংরেজি ও আরবি ভাষায় অনুবাদ করে এর বহুল প্রচার করার আহবান জানান। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। উল্লেখ্য, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থে ইসলামের পরিচিতি থেকে শুরু করে জিহাদসহ বহুল আলোচিত ও চর্চিত ৪৪টি বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। দেশবরেণ্য ১৫ জন আলেম, গবেষক, অধ্যাপক ও খতিব বইটির সম্পাদনা পরিষদে যুক্ত ছিলেন। প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। গ্রন্থটি গ্রন্থনা, রচনা ও সংকলন করেছেন মুফতি সদরুদ্দীন মাকনুন এবং মাওলানা মিরাজ রহমান।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের ৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে পাকিস্তানের গণহত্যারঅভিযোগ ও বিচার প্রসঙ্গ! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণে ঘোষণা করেন: “কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ২৩ বৎসরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বৎসরের ইতিহাস মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস- এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আয়ুব খান মার্শাল ল’ জারি করে ১০ বছর পর্যন- আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯ এর আন্দোলনে আয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গনতন্ত্র দেবেন – আমরা মেনে নিলাম। তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো, নির্বাচন হলো।”

দেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, কোন রাষ্ট্রধর্ম নয়:! “বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।” বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্ত¡াকে। স্বাধীনতা হ’ল মানব অধিকারেরই ফল। কেননা অধিকার হতেই স্বাধীনতার সৃষ্টি হয়। ব্যক্তিমানুষের অন্তর্নিহিত সত্তার বৈচিত্র্যপূর্ণ বিকাশের জন্য এই অধিকার আবশ্যক; কিন্তু কোনো দেশে যদি ফ্রিডম অব স্পিচ বা বাকস্বাধীনতা না থাকে, মানুষ নির্ভয়ে কথা বলতে না পারে, মুক্তভাবে চিন্তা করতে না পারে, তাহা হ ‘লে সেই স্বাধীনতার কি কানাকড়ি মূল্য আছে? ব্যক্তিস্বাধীনতা, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার, ধর্মীয় অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার ইত্যাদির ওপর আঘাত আসলেই রাষ্ট্রের উচিত তাহা প্রতিরোধ করা; কিন্তু কোনো পুলিশি রাষ্ট্রে নাগরিকদের স্বাধীনতার গ্যারান্টির আশা করা বৃথা। কালো আইনের অস্তিত্ব মানে মানুষের হাতে-পায়ে শিকল পরাবার নামান্তর। মানুষ যদি নির্ভয়ে ঘুমাতেই না পারে, তাহা হইলে কীসের অধিকার, কীসের স্বাধীনতা?

জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি ক‚টনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এ ছাড়া, সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয়, জয় বাংলা বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজীবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। পাকিস্তানী ধর্মান্ধ রাজনীতির মাফিয়া চক্রে জামায়াতে ইসলামী দলটির নেতাকর্মী এবং প্রশাসকগন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্রোহী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশীদের নিশ্চিহ্ন করতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের ৭১-এর গণহত্যা! ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।একাত্তরের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। পুরো জাতিকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে মারাত্মক মারণাস্ত্র নিয়ে ২৫ মার্চ একাত্তর ঘুমন্ত জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় বাঙালি নিধনযজ্ঞ। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের। অবশেষে ৯ মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হলো মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে!

জনগণের সমষ্টিগত জীবন-যাপন পর্যন্ত, যে জন্য অর্থনীতি, শিল্পকলা, দর্শন- সবই ইতিহাসের অন্তর্গত হয়ে পড়ে। ভেতরে থাকে শ্রেণির সঙ্গে শ্রেণির দ্ব›দ্ব, যার নাম রাজনীতি। স্বাধীনতার প্রশ্নটিও অত্যন্ত আবশ্যক ও অতিশয় পুরোনো। রুশো বলেছিলেন, আমরা জন্মি স্বাধীন হয়ে; জন্মে দেখি পরাধীন। কথাটা সত্য বটে। মানুষ স্বাধীনতা আশা করেছে, কিন্তু বারবার প্রতিহত হয়েছে। প্রকৃতি ও অদৃষ্ট তাকে আবদ্ধ করেছে বলে মনে করা হয়েছে। ইউরোপীয় রেনেসাঁন্সের সময় নতুন জ্ঞান লাভ ঘটেছে যে, বাইরের প্রকৃতি নয়, অমোঘ অদৃষ্টও নয়; মানুষ সীমাবদ্ধ নিজেরই অন্তর্গত চরিত্র দ্বারা। পরে, অনেক পরে ফ্রয়েড এসেছেন। বলেছেন, চরিত্র নয়; প্রবৃত্তিই নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে। এ-কালে আমরা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বিশেষভাবে সজাগ। রুশোও সেই অধীনতার দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন- বিশেষভাবে।

শ্রেণি আগেও ছিল, কিন্তু শ্রেণি সম্পর্কে এমন সচেতনতা আগে ছিল না। মার্কস (ও এঙ্গেলস) দেখিয়েছেন, মানুষের অগ্রগতির ইতিহাস শ্রেণি-সংগ্রামের ইতিহাস। মার্কস শ্রেণি আবিস্কার করেননি। শ্রেণি তার আগেও ছিল। মার্কস যা উদ্ঘাটন করলেন তা হলো এই সত্য যে, শ্রেণির ভেতরটা হচ্ছে অর্থনৈতিক এবং শ্রেণি যে কেবল নিজে নিজে আছে, তা নয়।
আত্মসচেতনভাবেই সে অবস্থান করছে ও নিজের স্বার্থে নিরাপোসরূপে পাহারা দিচ্ছে। এর সঙ্গে শ্রেণিতে শ্রেণিতে দ্ব›দ্ব চলছে এবং সেই দ্ব›েদ্বই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে মানুষের ইতিহাস।
‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’ পরিচালনা করেছেন সৌরভ কুন্ডু। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ‘ডায়েরি অব জেনোসাইড’ দেশদ্রোহীদের সহযোগিতায় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার জন্য বাঙালি জাতিকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। পাক হানাদার বাহিনী যখন বুঝতে পারে তাদের পরাজয় সুনিশ্চিত, তখন তারা এ বীরের জাতিকে মেধাশূন্য করার এক নীলনকশা প্রণয়ন করে। দেশদ্রোহী রাজাকারদের সহযোগিতায় বুদ্ধিজীবী হত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে জয় বাংলার বিজয় দিবস ! আমাদের স্বাধীনতা সুধামাধুরী কে স্বাধীনতা বিষবৃক্ষে পরিনত করতে ধর্মভিত্তিক চোরাবালি ১৪ই ডিসেম্বরে (১৯৭১) বাঙালি জাতির বুদ্ধিজীবিগণকে হত্যা করে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর ৫৪ আসামির কোনো হদিস নেই এবং গত ১২ বছরে ৪৯টি মামলার রায় হয়েছে। এতে মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ডসহ ১২৫ যুদ্ধাপরাধীর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫৪ আসামির কোনো হদিস নেই। এই আসামিদের ধরতে আবারও প্রত্যেক জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি দেওয়া এবং ট্রাইব্যুনালের ওয়েবসাইটে তাঁদের ছবিসহ বিস্তারিত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তদন্ত সংস্থা। এ বিষয়ে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক সমকালকে বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতকদের মধ্যে বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ মনিটরিং সেল তৎপর। পলাতক সবার বিষয়ে আমরা আবারও ডিসি-এসপিদের চিঠি দেব।’
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন এমন ৪১ আসামি পলাতক। আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া ১২ ও ২০ বছর সাজা পাওয়া একজন পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত ৬২ আসামি দেশের বিভিন্ন কারাগারে। আর সাজা ঘোষণার পর অসুস্থ ও বার্ধক্যজনিত কারণে কারাগারে মারা গেছেন ৯ জন। দণ্ডাদেশ পাওয়া ৫৪ আসামি ছাড়াও ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলায় বর্তমানে ৮১ জন পলাতক। রায় ঘোষণার আগে কারা হেফাজতে ১৮ ও রায়ের আগে পলাতক অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের ৪২তম রায়ে ৯ জনের মধ্যে একমাত্র আসামি খালাস পেয়েছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের আব্দুল লতিফ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরই মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির পর সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে ছয় যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ১৯ মামলায় আরও ৩৪ জনের বিচার চলছে। ২০১৩ সালের ২১ মার্চ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে ফরিদপুরের জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় হয়। কিন্তু তিনি ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে প্রথমে ভারতে; পরে কানাডা যান বলে সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট রয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে আমৃত্যু কারাদণ্ড রায় ঘোষণার এক বছর আগেই ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান রাজাকার কমান্ডার বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন সুইডেনে পালিয়ে যান। একইভাবে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার ২০০৯ সালে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। পরে ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রæয়ারি তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। দেশটির ফ্লোরিডায় স¤প্রতি আব্দুল জব্বারের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বিএনপি নেতা ড. ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হলে তিনি সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে যান। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

তদন্ত সংস্থা বলছে, সাজা পাওয়া পলাতকদের ধরতে ২০১৯ সালের নভেম্বরে তাঁদের ঠিকানা অনুযায়ী ৩০ জেলা ও থানায় ছবিসহ চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের ধরতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। বিদেশ থেকে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় ট্রাইব্যুনাল-সংশ্নিষ্টরা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেই তাঁদের নজরদারিতে রাখার কথা বলছেন। অন্যদিকে পলাতকদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্তরিক নয় বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। তিনি সমকালকে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতকদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বাহিনীর যে তৎপরতা দরকার, তা বিদ্যমান আছে বা ছিল বলে কখনও মনে হয়নি। আমরা তো একাধিক আসামিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ ও দাফন হওয়ার তথ্য পেয়েছি। নিজ বাড়িতে তাঁরা কীভাবে পলাতক ছিলেন, বিশাল প্রশ্ন রয়েই যায়।’
জন্ম লগনে বাংলাদেশ, কান্নায় আমার বাংলাদেশ / মন্ত্র আমার বাংলাদেশ, হাঁসিতে আমার বাংলাদেশ। কথায় কথায় বাংলাদেশ, রক্তে আমার বাংলাদেশ। তীর্থ আমার বাংলাদেশ, বিত্ত আমার বাংলাদেশ! ১৯৭২ সালের ৪ই নভেম্বর বাংলাদেশ গণপরিষদ গৃহীত এবং ১৯৭২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রথম খন্ডে প্রকাশিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ (২) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে, “রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।” জাতির আত্মপরিচয়ের ইতিহাসে জয় বাংলার বিজয় দিবস! ঐতিহাসিক “বাঙালী শব্দ মানে “মানুষ নিজের ভুবনে নিজেই সম্রাট। “অর্থাৎ “আমি আজ বাঙালি হয়ে ‘অহং’ কে জয় করে সিদ্ধপুরুষ হয়েছি।” চর্যাপদের ৪৯ নম্বর কবিতায় সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবিষ্কৃত হল! বাংলাদেশের বিশ্ববিজয়ী মহাশান্তি মহাপ্রেম। কারন বাঙালী জাতির আত্মপরিচয়ে বিশ্বমানব হবি যদি আদর্শ বাঙালি হও, সম্পূর্ন বাঙালি (আলোক প্রাপ্ত মহাপুরুষ) হও।”

আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। প্রথম আগুন জ্বলে ‘৫২-র একুশে ফেব্রুয়ারি। ফাগুণের আগুনে ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মাতাল গণমানুষের মুষ্টিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলিদান বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙার লড়াই। পাকিস্তানিদের সঙ্গে হিসেব-নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালি শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই।

পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদ্দৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। ‘৫২ সালে যে আগুন জ্বলেছিল রাজধানী ঢাকা শহরে সে আগুন যেন ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে। যে আগুন জ্বলেছিল মোর প্রাণে, সে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে সবখানে সবখানে। বাঙালির বুকের ভেতর জ্বলে উঠা আগুন যেন সহস্র বাঙালির মধ্যে প্রবাহিত হতে থাকে।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি