হিমাদ্রী রয়
ইচ্ছে হয় হিমালয়ে উঠে দাঁড়াই
তোমার উচ্চতা মাপি চোখে চোখ রেখে
সেই চোখে খুব ভালো দেখতে না তুমি
অথচ অর্জুনের মত দূরদৃষ্টি ছিল, স্থির ছিলে লক্ষের দিকে।
ইচ্ছে হয় মোটা ফ্রেমের কালো চশমা হই
ভারি কাঁচের ভিতর দিয়ে দেখবো ভবিষ্যৎ
দিব্যদৃষ্টিতে যেমন তুমি দেখেছিলে স্বাধীনতা
আপন করে নিয়েছিলে
বাঙালির হাজার বছরের সঞ্চিত অভিমান, ক্ষোভ
দেখিয়েছিলে মুক্তির পথ।
ইচ্ছে হয় কুমোর বাড়ির কুমোর হই
কাদা মাটিতে জলকাদায় মানুষের ছবি আঁকি
ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত খেটে খাওয়া ঘাম ঝরানো মানুষ
তোমার সংগ্রামের উৎপত্তি ছিলো যাদের কাছাকাছি।
ইচ্ছে হয় মহর্ষি দধিচীর অস্তি হই
যে হাড় দিয়ে বিশ্বকর্মা বজ্র বানিয়ে ছিলেন অসুর বধিবারে
তুমি সেই বজ্রকন্ঠের দেবরাজ হবে আবার
তর্জনী তোমার আকাশ ছোঁবে
লাখো কন্ঠের শঙ্খনিনাদে প্রজন্ম নেবে আলোর শপথ
‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’ হুংকারে।
ইচ্ছে হয় রেসকোর্স মাঠ হই
শুনবো বিদ্রোহী জনতার রণধ্বনি, গগনবিদারী স্লোগান
শেখ মুজিবের পথ ধরো
অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা কায়েম করো
অতঃপর গিরিরাজ তুমি কহিবে স্বভাষে
এবারের সংগ্রাম মত অন্ধতা থেকে মতের মুক্তির সংগ্রাম
ইচ্ছে হয় শোষিত মানুষের কান্না হই
যে কান্নাকে বুকে লালন করে স্বাধিকারের নেতৃত্ব দিয়েছিলে
শাসকের ষড়যন্ত্রের শিকল ভেঙে এসেছিলে জোতির্ময়
বৃষ্টির জল ধরা দিয়েছিল লাখো মানুষের চোখে
সেই জলধারায় ভাসি আনন্দ-বেদনার অশ্রুজলে।
ইচ্ছে হয় শিশুর সরলতা হই
দেখি এক সরলপ্রাণ মানুষের ভালোবাসার জন্য কাঙালপনা
জনগণ যার শক্তি, আর দুর্বলতা ও সেই জনগণ
যার রক্তে ভেজা বাংলার মাটি
বঙ্গবন্ধু-বাংলাদেশ আমার ইচ্ছের শেষ ঠিকানা।