অনলাইন ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না করলে বাড়তি কর, মাসুল, নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। তবে ট্রাম্পের এই হুমকিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না রাশিয়া।

দেশটি বলেছে, ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে রাজি না হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াকে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপ করার যে হুমকি দিয়েছেন তাতে বিশেষত নতুন কিছু দেখছে না তারা।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে রাশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে বিশেষ কোনও নতুন উপাদান দেখা যাচ্ছে না। এই সপ্তাহে ট্রাম্প “হাস্যকর যুদ্ধ” শেষ না করলে রাশিয়ার ওপর নতুন কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি এসব পদ্ধতি পছন্দ করেন, অন্তত তার প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় তিনি এগুলো পছন্দ করতেন।”

পেসকভ আরও বলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে “পারস্পরিক সম্মানজনক সংলাপের” জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তবে কোনও আলোচনার ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

মূলত রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের চার বছরের মেয়াদ শুরু হয়েছে। গত সোমবার ট্রাম্প মার্কির প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন এবং এরপর বুধবার তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বলেন।

তিনি বলেন, অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই পশ্চিমা দেশগুলোতে রাশিয়ার যেকোনও রপ্তানির ওপর নতুন করে ‘উচ্চ মাত্রায়’ কর, শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই দিন পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে পুতিনকে বলেন, তিনি ‘রাশিয়ার ক্ষতি করতে চাইছেন না’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভুলে যাওয়া উচিত নয়’ যে রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে জিততে সাহায্য করেছিল। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে প্রায় তিন বছর ধরে মস্কোর আগ্রাসন সমাপ্ত করার সময় এসেছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে লেখেন, “রাশিয়ার অর্থনীতি বিপদের মধ্যে আছে। আমি রাশিয়াকে এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একটা বড় উপকার করতে যাচ্ছি। এখনই নিষ্পত্তি করুন এবং এই হাস্যকর যুদ্ধ বন্ধ করুন। পরিস্থিতি শুধু খারাপের দিকেই যাবে।”

ট্রাম্প বলেন, “আমরা যদি শিগগিরই একটি ‘চুক্তি’ না করি, তাহলে কর, শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়া ‘আর কোনও উপায় থাকবে না’।”

ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে কখনোই এই যুদ্ধ শুরু হতো না। চলুন এই যুদ্ধ শেষ করি। এটি সহজ উপায়ে বা কঠিন উপায়ে করতে পারি- এবং সহজ উপায় সব সময় ভালো। সময় এসেছে ‘চুক্তি করার’। আর কোনও প্রাণ যেন ঝরে না যায়!”

নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প অবশ্য বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ হবে তা তিনি বলেননি।

এখন আরও নিষেধাজ্ঞা বলতে ট্রাম্প কী বোঝাচ্ছেন, সেটাও স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটাও স্পষ্ট হয়নি ইউক্রেনকে যে লাখ লাখ ডলারের সামরিক সাহায্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র, তার কী হবে? ইউক্রেনের বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।