Home আন্তর্জাতিক ইউক্রেনের সঙ্গে ‘যৌক্তিক’ সমঝোতায় যেতে প্রস্তুত রাশিয়া : পুতিন

ইউক্রেনের সঙ্গে ‘যৌক্তিক’ সমঝোতায় যেতে প্রস্তুত রাশিয়া : পুতিন

অনলাইন ডেস্ক : গত আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের অবসান চান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, এ ইস্যুতে ইউক্রেনের সঙ্গে যে কোনো যৌক্তিক সমঝোতায় যেতে প্রস্তুত মস্কো।

গত ২৩ অক্টোবর রাশিয়ার তাতারস্তান রাজধানী রাজধানী কাজানে শুরু হয়েছে ১১ দেশের আন্তঃসরকার জোট ব্রিকসের সম্মেলন। আজ ২৫ অক্টোবর সেই সম্মেলনের শেষ দিন। গতকাল সম্মেলনে বিরতির ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন পুতিন।

ইউক্রেনে যুদ্ধ অবসান সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, “আমরা আগেও (ইউক্রেন ইস্যুতে) যৌক্তিক সমাধানের পক্ষে ছিলাম, এখনও আছি। এর আগে আঙ্কারায় যখন দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের শান্তি সংলাপ হয়েছিল, সে সময় একটি সমঝোতায় আমরা প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলাম, কিন্তু হঠাৎ করে কিয়েভ থেকে ঘোষণা করা হলো যে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন কোনো সমঝোতায় যাবে না।”

“এটা ছিল কিয়েভের খুবই অযৌক্তিক ব্যবহার। এমন যে হতে পারে— তা আমাদের ধারণাতেও ছিল না; আর এমন পরিস্থিতিতে শান্তি আলোচনাকে এগিয়ে নেওয়ার যাবতীয় পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তািই কিয়েভ যদি আলোচনায় না আসতে চায়, তাহলে কবে যুদ্ধ বন্ধ হবে— এই প্রশ্নটি নিরর্থক।”

২০১৫ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে ইউক্রেনের স্বীকৃতির প্রদান না করা, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের তদবির— প্রভৃতি নানা ইস্যুতে কয়েক বছর টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২০২৪ সালে দ্বিতীয় বছরে পা রেখেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই সময়সীমার মধ্যে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়া— চারটি প্রদেশের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। এই চার প্রদেশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ।

যুদ্ধ শুরুর হওয়ার দুই সপ্তহের মাথায় মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তি সংলাপের উদ্যোগ নেয় বেলারুশ। কিন্তু সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার কয়েক মাস পর তার কায়েক মাস পর একই উদ্যোগ নেয় তুরস্ক। কিন্তু সেটিও ব্যর্থ হয়।

তারপর গত দু’বছরে বেশ কয়েক বার এই যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেন যদি ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক এবং ঝাপোরিজ্জিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত থাকে, সেক্ষেত্রে রুশ বাহিনীও অভিযান বন্ধ করবে।

কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত বছর এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে ঘোষণা করেছন, রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিন যতদিন ক্ষমতাসীন থাকবেন, ততদিন পর্যন্ত রুশ প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যাবে না কিয়েভ।

তবে সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ফের দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরুর উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ইস্যুতে পুতিনের মতামত জানতে সম্প্রতি মস্কোতে দূতও পাঠিয়েছিলেন তিনি।

সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে পুতিন বলেন, “আমি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব সম্পর্কে জেনেছি এবং তার দূতকে বলেছি— যদি কিয়েভ আলোচনায় বসতে রাজি হয়, তাহলে মস্কোও যে কোনো যৌক্তিক সমঝোতায় যেতে প্রস্তুত রয়েছে।”

সূত্র : আরটি

 

Exit mobile version