অনলাইন ডেস্ক : স্বপ্নভঙ্গ ইংল্যান্ডের। ৫৫ বছর পর মেজর কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা ছোঁয়া হলো না হ্যারি কেইনদের। রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে জয় হলো ইতালির। সুবাদে ৫৩ বছর পর ইউরো কাপে চ্যাম্পিয়ন দলটি।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হয় ম্যাচে ১(৩) : ১ (২)-এ জয় রবার্তো মানচিনির দলের। সবশেষ যারা ইউরো শিরোপা জিতেছিল ১৯৬৮ সালে।
আজ্জুরিরা এনিয়ে ৬টি মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের কৃতিত্ব দেখাল। যার চারটি বিশ্বকাপ ও দুটি ইউরো শিরোপা। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে মেজর ট্রফি জয়ে তাদের ওপরে শুধু জার্মানি (৭টি)।
প্রথমার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড ১-০ লিড ধরে রেখে বিরতিতে যায়। তবে দ্বিতীয়ার্ধ সমতায় ফেরে ইতালি। নির্ধারিত সময় ১-১ সমতায় শেষ হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। সেখানেও সমতা থাকার পর টাইব্রেকারে নির্ধারন হয় ম্যাচের ভাগ্য।
যেখানে দুটি শট রুখে ইতালির জয়ের নায়ক গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা। জর্ডান স্যাঞ্চো ও বুকায়ো সাকার গোল রুখেছেন তিনি। মার্কাস রাশফোর্ডের শট ফিরে পোস্টে লেগে।
ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডও দুটি-দুটি শট রুখেছেন, কিন্তু তবু পরাজয়ের বেদনায় পুড়েন তিনি।
প্রথম শট থেকে ইংল্যান্ড ও ইতালি দুই দলই গোল পায়। ইতালির পক্ষে বেরারদি ও ইংলিশদের পক্ষে কেইন গোল করেন। তবে বেলোত্তির নেওয়া ইতালির দ্বিতীয় শট রুখে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের পক্ষে হ্যারি মাগুইর গোল করলে দলটি ২-১ এ এগিয়ে থাকে।
ইতালির পক্ষে তৃতীয় শটটি নেন বোনুচ্চি, গোল করতে ভুল করেননি তিনি। তবে ইংলিশদের পক্ষে গোল মিস করেন রাশফোর্ড। পোস্টে লেগে ফিরে তার শট। ফলে তিনটি করে শটের পর ২-২ এ সমতা থাকে।
চতুর্থ শটে গোল করেন ইতালির বার্নারদেসচি । আর ইংলিশদের পক্ষে স্যাঞ্চোর নেওয়া শট রুখে দেন দোন্নারুমা। তাতে ইতালি এগিয়ে থাকে ৩-২। দলটির পক্ষে পঞ্চম শটটি নেন জোরগিনহোর। যা রুখে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। কিন্তু ইংলিশদের সাকার শট দোন্নারুমা রুখে দিলে শিরোপার আনন্দে মাতে ইতালি।
ম্যাচে ও টাইব্রেকার দুই জায়গাতেই পিছিয়ে পড়েও জয় পায় ইতালি।
অথচ ম্যাচে স্বপ্নের মতো শুরু ছিল ইংল্যান্ডের। কিক অফের ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে বল জালে জড়িয়ে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডার লিউক শ। সুবাদে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ইউরো কাপের ফাইনালে এটিই সবচেয়ে দ্রুতগতির গোল। আগের রেকর্ডটি পেরেদার। ১৯৬৪ সালে ৬ মিনিটের মাথায় গোল করেছিলেন তিনি।
শ’র ওই গোলে ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর ফের কোনো ট্রফি জয়ের স্বপ্নে বিভোর হয় ওয়েম্বলির গ্যালারি। তবে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে ইতালি। বলের দখল ও আক্রমণ দুটিতেই স্বাগতিকদের চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল আজ্জুরিরা।
৩৩ ম্যাচ অপরাজিত থেকে ইউরোর ফাইনালে খেলতে নামা ইতালি ম্যাচে সমতা ফেরায় ৬৭ মিনিটে। গোল করেন লিওনার্দো বোনুচ্চি। এ গোলটিতেও হয়েছে রেকর্ড। ইউরোর ফাইনালে সবচেয়ে বেসি বয়সে গোল করার রেকর্ড। ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে ইউরোর ফাইনালে গোল করলেন বোনুচ্চি। ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট জার্মানির হয়ে হলজেনবেইন ৩০ বছর বয়সে গোল করেছিলেন।
বোনুচ্চি ও পরে দোন্নারুমার নৈপুণ্যে ইতালির দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হয়। আর ইংল্যান্ডের একটি শিরোপার জন্য অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয় আরো।