আতোয়ার রহমান
সাদা চুল-দাড়ি, হাতে কাঠের লাঠি
গায়ে জীবনানন্দ দাশের পাঞ্জাবি
-তবক দেওয়া পান খেতে খেতে
প্রশান্ত ভঙ্গিতে কবি হেঁটে চলেছেন ড্যানফোর্থের রাস্তায়।
স্বরচিত আলো জ্বেলে হেঁটে এসেছেন মঞ্চে
দরাজ গলায় দেশের গান শোনাতে,
শ্রাবণের বৃষ্টিধারার মতো অনুপম ছন্দে
ঝর্নার মতো ঝরে পড়ে কন্ঠধ্বনি সারা ঘর জুড়ে।
চেষ্টা করেন হৃদয়ের সঞ্জীবনী সুধাপাত্র থেকে
মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতাদের আরও কিছু দান করে যেতে।
চুপ করে বসেছেন খানিক কোনও পার্কের বেঞ্চিতে
নীল বাতাস বয়ে যায় হ্রদের নীল জলে
শান্ত সমাহিত কবি নিমগ্ন কোন ভাবনাজালে?
চিন্তা করছেন কি শেষের কবিতা লেখার?
হয়তো ভাবছেন, নিজের মতো, নিজের দেশ,
ধানসিঁড়ি নদীর তীরে হৃদয়ের কোমলতায় ভরা বাংলাদেশ।
কিন্তু ক্রমশ প্রতিদিনের জগৎ থেকে
সরে-সরে গিয়েছেন কবি, ভুলে যাওয়া
কবিতার মতো। গড়ে নিয়েছেন নিজের এক নিস্তব্ধতা।
আচমকাই আমাদের খেয়াল হল যে,
কবি আমাদের মাঝেই ছিলেন!
অপেক্ষায় আছে সকলে, হয়তো কোনও এক ভোরে
সকালের নরম রোদে কবি ফিরে আসবেন আপন ঘরে,
নিজের পরিচিত রাস্তায় হাঁটবেন কয়েক বার,
কড়া নাড়বেন চেনা রঙের কোনও
সাহিত্য সভার দরজায়, বইমেলার আড্ডায়,
মুখে তাঁর সেই অনাবিল হাসি নিয়ে।
[বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ চৌধুরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে কানাডার অশোয়া শহরের একটি হাসাপাতালে আইসিইউতে আছেন। আশা করি কবি পরিপূর্ণ সুস্থতা ও নিরাময় লাভ করে আবার সকলের মাঝে ফিরে আসবেন।]