বিনোদন ডেস্ক : চিত্রনায়িকা তমা মির্জার সঙ্গে স্বামী হিশাম চিশতীর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। পাল্লাপাল্টি মামলাও করেছেন তারা। গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় মামলা করেন হিশাম। মামলায় তমা মির্জা ছাড়াও তার পরিবারের কয়েকজনকে আসামি করেন। হিশামের মামলার একদিন আগে মামলা করেন তমা। মামলার পরপরই কানাডা চলে যান হিশাম। এবার বিষয়টি নিয়ে সরাসরি ফেসবুক লাইভে কথা বললেন তমা। শনিবার রাত ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন তিনি।

সেখানে তমা বলেন, এরপর যদি হিশাম আমার আর কোনো ব্যক্তিগত ছবি বা বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে বা প্রকাশ করে আমি আত্মহত্যা করলে সে দায়ী থাকবে। হিশাম ফেসবুকে আমাকে নিয়ে নোংরা পোস্ট দিত। সে আমার কাছে এসবের জন্য মাফও চেয়েছে। বলেছে, আর কখনও আমাকে নিয়ে বাজে পোস্ট করবে না। ডিভোর্স প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, তার পছন্দের আইনজীবীর মাধ্যমেই আমি ডিভোর্স দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে আইনজীবীর অফিসেও মারামারি করেছিল। সেখানে তার ছোট ভাই ছিল। সেই ফুটেজ পুলিশের কাছে আছে।
হিশাম তমাকে নিয়মিত মারধর করত জানিয়ে তিনি বলেন, আমাকেও সে সব সময় মারধর করত। আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। এরপর পালিয়ে আমি আমার বাসায় চলে আসি। আমি তার নামে জিডি করি। পুলিশ আমাকে মামলা করতে বলেছিল। আমি তা করিনি। তার ভালোর জন্যই আমি মামলা করিনি। করলে হয়তো আজ আমাকে এত কষ্ট পেতে হতো না।
তমা মির্জা আরও বলেন, ‘সে আমাকে বিদেশ নিয়ে যায়নি। আমি একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলাম। স্বামী হিসেবে সে আমার সাথে গিয়েছিল। আমি তাকে নাগরিকত্বের জন্যেও বিয়ে করিনি। যদি তাই করতাম তাহলে গত দুই বছরেও কেন আমি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলাম না? সে সরকারের ৪৫ হাজার ডলার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে। গাড়ি বিক্রি করে আমাকে সে টাকা পরিশোধ করতে বলত। আমি রাজি না হওয়ায় সে আমাকে মারধর করেছে।’
তমা বলেন, ‘মামলায় সে বলেছে আমি তাকে হত্যা করতে চেয়েছি। তার বন্ধুরা আমাকে বলেছে সে জাস্ট ৫ মিনিটের জন্য আমার সাথে কথা বলতে চায়। তখন প্রায় রাত ৩টা, সে আমার বাসায় আসে। এসেই সে আমার ফোন নিয়ে নেয়। পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দেয়। সে নিজেই আমার ফেসবুক আইডি থেকে আজেবাজে পোস্ট দেওয়া শুরু করে। তখন তার পকেটে ৪০টির মতো ঘুমের ওষুধ ছিল। মাতাল অবস্থায় ছিল। ওর ফ্যামিলিকে ফোন করে এসব জানালে তখন তারা বলে, আমরা ওকে আটকাতে পারি নাই। সে যা মন চায় করুক। আমরা কিছু জানি না। তখন আমি ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাই। অথচ সে বলেছে আমরা নাকি মেরে তার হাত পা ভেঙে দিয়েছি।’
তমা মির্জা বলেন, ‘সে সময় পুলিশকেও উল্টো গালাগালি করে। পুলিশ তখন আমাকে পরামর্শ দেয় মামলা বা জিডি করতে। তখন সে আমাকে বাবা মায়ের সামনেই মারধর শুরু করে। সে আমার বাবা মাকেও মেরেছে। আমার কাছে সব ছবি আছে। এ সময় এলাকার লোকজন এসে আমাদের সাহায্য করে।’
হিশামের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে তমা মির্জা বলেন, ‘আমি তিনটি মামলা করেছি। আশা করি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। যেই দোষী হোক তারই শাস্তি হবে। আমার কাছে সাক্ষী আছে। তারা সবাই দেখেছে। আমি আদালতেই সব প্রমাণ দেব। মামলা তোলার জন্য আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমি সবকিছু রেকর্ড করে রেখেছি।’
এ সময় যারা না জেনে তার সমালোচনা করছেন, বাজে মন্তব্য করছেন তাদেরকে সতর্ক করে দেন তমা মির্জা। তাদের বিরুদ্ধে দরকার হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। সব ভুলে নতুন জীবন শুরু করতে চান বলেও জানান অভিনেত্রী।