Home কলাম আমাদের সবার রক্তে ছিলো স্কি’র প্রতি এক প্রবল টান

আমাদের সবার রক্তে ছিলো স্কি’র প্রতি এক প্রবল টান

মনিস রফিক : কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিজের জন্ম, বেড়ে উঠা আর কানাডার নেতৃত্বে আসার অসাধারণ কিছু ঘটনা উপস্থাপন করেছেন তাঁর আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘কমন গ্রাউন্ড’ এ। জাস্টিন ট্রুডোর সাবলীল আর অসম্ভব সুন্দর বর্ণনা খুব সহজেই পাঠকের সামনে উম্মোচিত করে কানাডার রাজনীতি, সংস্কৃতি আর স্বপ্নকে। ইংরেজি ভাষায় লিখিত গ্রন্থটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মনিস রফিক। ‘বাংলা কাগজ’ এ ‘কমন গ্রাউন্ড’ এর অনুবাদ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবে।

চব্বিশ.
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে নতুন পড়াশুনা আর নতুন বন্ধুদের সাথে আমার প্রথম বছরটা ভালোই গেলো, কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষে এসে আমি সেই উদ্দীপনা হারিয়ে ফেললাম। ক্লাস এবং পড়াশুনা ভালো লাগলেও সত্যি বলতে কি আমার তখন মনে হচ্ছিল আমার জীবনটা কোনো এক কারণে একঘেয়েমীতে ভরে যাচ্ছে। আমি তখনো বাবার সাথে আমাদের বাড়িতেই থাকতাম। তাঁর প্রতি আমার সব ভালোবাসা আর সম্মানবোধ থাকা সত্তে¡ও আমার মনে হয়েছিল আমার একেবারে নিজের মতো থাকা উচিৎ, আর আমার মতো করেই আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিৎ। খুব দ্রæতই আমি এই ভাবনার দোলাচল থেকে নিজেকে মুক্তি দিয়েছিলাম, আর আমার এই বাড়ি থেকে বের হওয়া মানে ছিলো মন্ট্রিয়ল ছেড়ে চলে যাওয়া।

আমার ভাবনায় যা ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হয়েছিল আমার সেই ভ্রমণটা। তুমি এক জায়গাই তোমার জীবনের দীর্ঘ বছর কাটিয়ে যদি সেই জায়গা কোনো কারণে ছেড়ে যাও তাহলে তোমার পেছনে তুমি ফেলে আসবে এক শুন্য জায়গা আর যে তুমি ঐ জায়গাটা ছেড়ে যাচ্ছো সেই তোমার মধ্যে বিরাজ করবে এক গভীর শুন্যতা। তুমি যখন তোমার ভ্রমণ শেষে আবার ফিরে আসবে তখন স্বাভাবিকভাবেই তুমি প্রত্যাশা করবে তোমার সেই পূর্ব স্থান আর পূর্বের অবস্থানকে ফিরে পেতে। কিন্তু সেটা তুমি আসলে আর ফিরে পাবে না, কারণ তুমি নিজেই ইতিমধ্যে পরিবর্তিত হয়ে গেছো। এটা শুধু তোমার জন্যই খারাপ লাগা কোনো ব্যাপার নয়, বরং তোমার আশেপাশে যারা তোমাকে ভালোভাবে জানে তাদের জন্যও সেটা এক অস্বস্তিকর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আমি জানতাম, এমন এক ভ্রমণ থেকে যে ফিরে আসে সে আর সেই পূর্বের মতো আর থাকে না। তখন ১৯৯৬ সালের বড়দিনের সময় হয়ে গিয়েছিল। সেই বড়দিনটিতে ছিল আমার পঁচিশতম জন্মদিন। সেই সময়টা এমন এক সময় ছিল যখন মন্ট্রিয়লে আমার বন্ধু ও পারিবারের সদস্যদের সাথে ছিল আমার এক সুন্দর সময়।

নিজের জীবনে কখনো সামান্য বাস্তবতা খর্ব না করে বা অসৎ কোনো ভাবনা না ভেবে যিনি সিদ্ধান্ত নিতেন, সেই ব্যক্তি অর্থাৎ আমার বাবা আমার মনের তাগিদ বা শুন্যতাকে অনুধাবন করেছিলেন, ফলে তিনি আমার এই সিদ্ধান্তে মত দিয়েছিলেন। শাসা তখন বাবার সাথেই এভিন্যিউ দ্যূ পিন্স এর বাড়ীতে থাকতেন। সেজন্য আমার মনে হলো, আমি চলে গেলেও বাবা একেবারে সংগীহারা হবেন না। কিন্তু তখন আমার সামনে একটি প্রশ্ন এসে দাঁড়ালো, আসলে আমি কোথায় যাবো?

খুব সহজেই আমার কাছে উত্তরটা চলে এসেছিল। বিগত বছরগুলোতে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় যতগুলো পারিবারিক ভ্রমণ করেছি, সেই সময়েই আমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যদি কখনও সময় সুযোগ আসে তবে আমি পশ্চিম উপক‚লে বাস করবো। আমার সেই কিশোর বয়স থেকেই পশ্চিমের সেই ভূমি আমাকে টানতো। সেই উপক‚ল, সেই পাহাড় আর সেই বিশাল বিশাল বৃক্ষ দেখে আমি খুবই অভিভূত হয়ে পড়তাম। স্টানলি পার্কের সেই দানবাকৃতির ডগলাস দেবদারু গাছের নীচে এক সময় আমরা তিন ট্রুডো ছুটোছুটি করেছি আর প্রায়ই আমরা খেলার ছলে একে অপরের হাত ধরে আমাদের হাতগুলো প্রসারিত করে সেই সব গাছের গুড়ি ঘিরে ধরার চেষ্টা করতাম, কিন্তু সেই গুড়িগুলো এত বড় থাকতো যে, আমরা ওগুলোর অর্ধেকও ঘিরে ধরতে পারতাম না। পশ্চিমে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তের পেছনে কিন্তু ছিল আমার পরিবার। আমার সেই সিনক্লেয়ার পরম্পরা আর আমার ভাই মিশেল। তখন সে ইন্টিরিয়রে বসবাস শুরু করে দিয়েছে। অতএব, ওয়েস্টলার এ যাবার পথে আমি ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে ভ্যাংকুভার এর দিকে যাত্রা শুরু করলাম। তখন আমার পরিকল্পনা ছিল বরফাচ্ছাদিত জায়গায় ছোট বাচ্চাদের স্কি শেখানো বা বিভিন্ন খেলাধূলার ইন্সট্রাক্টরের কোনো কাজ আমি খুঁজে নিবো।

আমার পরিবারের সবার রক্তে ছিল স্কি’র প্রতি এক প্রবল টান। আমাদের প্রত্যেকেই চমৎকার সুন্দর স্কি করতে পারতো আর সবারই ছিল নিজস্ব সব ভংগি। আমার বাবারটা ছিল খুবই দূর্দান্ত, সাহসী আর পরিচ্ছন্ন। আর আমার মা তাঁর একেবারে ছোট বয়সে ওয়েস্টলার এ স্কি’টা খুব ভালোভাবে শিখেছিলেন এবং তাঁর ভংগিটা ছিল সত্যিই দেখার মতো। তিনি নিজে নিজেই গর্ব করতেন, স্কি করতে গিয়ে তিনি কখনো পড়ে যাননি এবং আমিও কখনো দেখিওনি যে তিনি স্কি করতে গিয়ে উলটে পড়েছেন। আমাদের একেবারে পুচকে বয়সে শাসা, মিশেল আর আমি স্কি শিখেছি। আমি স্বীকার করছি, আমাদের এই তিনজনের মধ্যে মিশেল ছিল সবচেয়ে ভালো। সম্ভবত সে তার দুই বড় ভাইকে টেক্কা দেবার জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে খুব ভালো কিছু কৌশল রপ্ত করেছিল, যেটা আমাদের প্রয়োজন ছিল না। শাসা সবকিছুতেই বাবার বিষয়গুলো শেখার চেষ্টা করতো, স্কি’তেও সে বাবার মতই সেই রাজসিক কৌশল শিখে ফেলেছিল। আমি কিন্তু সব সময় মূল বিষয়টা ভালোভাবে রপ্ত করার চেষ্টা করতাম। আমি কখনোই স্কি’তে ঘুরার সেই শৈল্পিক কৌশলগুলোতে তেমনভাবে পারদর্শী হইনি। সব সময়ই আমি চেষ্টা করতাম কতো তাড়াতাড়ি পাহাড় বা উঁচু উঁচু সব জায়গা থেকে স্কি করে একেবারে কত নীচুতে যাওয়া যায়।

তিন সন্তান জাস্টিন, শাসা এবং মিশেলকে কোলে নিয়ে পিতৃ-অনুভূতিতে আদর করছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিয়ের ট্রুডো

যখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, স্কি’তে আমি কখনো ট্রুডো পরিবারের অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ কিছু হতে পারবো না, আমি তখনই ঠিক করে ফেলেছিলাম আমার অন্য নতুন কিছুর দিকে মন দেওয়া উচিৎ। আমার বয়স যখন চৌদ্দ, তখন আমি ‘এ ভিউ টু এ কিল’ চলচ্চিত্রের প্রথম দৃশ্যপট দেখে খুবই বেশী অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম, সেই দৃশ্যপট এ জেমস বন্ড’কে তাঁর শত্রুরা মারার জন্য পেছনে পেছনে ছুটছে ও গুলি করছে আর জেমস বন্ড নিজেকে বাঁচানোর জন্য সেই বরফের মধ্যে এদিক ওদিক ছুটতে ছুটতে খুবই দ্রæত গতিতে নীচে নেমে আসছে। আমি খুবই মুগ্ধ হয়ে সেই চলচ্চিত্রের প্রথম দৃশ্যপটটি দেখেছিলাম। তখন আমারও জেমস বন্ড এর মতো হতে ইচ্ছে করেছিল। ফলে খুব তাড়াতাড়ি ভারমন্ট থেকে একটি স্নো-বোর্ড আনার ব্যবস্থা করলাম, তারপর আমি নিজে নিজেই মন্ট ট্রেমব্লান্ট এ সেটা ব্যবহারের জন্য তালিম শুরু করে দিলাম। সেজন্য আমার যৌবনে যখন আমি ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় থাকার জন্য গেলাম, তখন এই স্নো-বোর্ডিং এর মাধ্যমে আমি যেমন আমার সেই আনন্দ মেটাতে চেয়েছিলাম, ঠিক তেমনি এর মাধ্যমে আমি উপার্জনের কাজটা সারতেও চেয়েছিলাম।

কিন্তু ইন্সট্রাক্টর হওয়ার পূর্বে এই খেলায় প্রথম লেভেল এর একটি সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, আর যেটা নিতে কিছু সময়ের প্রয়োজন ছিল। সেই সময় আমার থাকা আর খাওয়ার জন্য আমি রগ উলফ নামে একটি নাইট ক্লাবে দারোয়ান এর কাজ যোগাড় করেছিলাম। তখন আমার থাকার জায়গা বলতে ঘরে ম্যাট্রেস রাখা যায় এমন একটা ছোট্ট জায়গার ব্যবস্থা করেছিলাম আর খাবার বলতে ছিল প্রতিদিন মিস্টি মাউন্ট পিজার কয়েকটি টুকরা। আমি আমার কাজটা খুবই উপভোগ করছিলাম, সেজন্য আমি সার্টিফিকেট পেয়ে স্নো-বোর্ডিং এ কাজ শুরু করার পরও সেই নাইট ক্লাবের কাজটা চালিয়ে যেতে থাকলাম। সপ্তাহে ছয় দিন আমি খুব সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত স্নো-বোর্ডিং স্কুলে কাজ করতাম। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবার পর সপ্তাহে চারদিন আমি রগ উলফ নাইট ক্লাবে রাতের শিফট এ কাজ করতাম, সেখানে সাধারণত আমাকে রাত ২টা – ৩টা পর্যন্ত কাজ করতে হতো।

আমার কাজের ধরনটা আমি সত্যিই খুব উপভোগ করছিলাম। সকালে ছোট বাচ্চাদের সাথে আর রাতে বড়দের কাছে শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব। কিন্তু এ দু’জায়গার কোথাও আমি আমার নামের শেষ অংশটা উচ্চারণ করতাম না।

রগ উলফ নাইট ক্লাবে আমরা যারা নিরাপত্তার কাজ করতাম তাদের মধ্যে আমিই ছিলাম সব চেয়ে ছোট আর শারীরিকভাবে ক্ষীণ। ঐ দলে পিটার রবার্টস নামে একজন ছিল যার সাথে আমার খুব ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এখন পর্যন্ত আমাদের মধ্যে একটা সুন্দর সম্পর্কের বন্ধন আছে। পিটার এক সময় সেনাবাহিনীতে ছিল এবং আমার ভাই শাসা যখন গেটটাউন এ সিএফবি’তে (কানাডিয়ান ফোর্সেস বেজ) ছিল তখন পিটারের কাছ থেকে সে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। পিটারের শরীর স্বাস্থ্য এমন ছিল যে, সে উপস্থিত থাকলেই সবাই তাকে সমীহ করতো, কিন্তু আমার দায়িত্ব পালন করার সময় আমাকে অনেক কিছু করতে হতো। অন্যদের চেয়ে শারীরিকভাবে ছোট হওয়ায় আমাকে দায়িত্ব পালনের জন্য অনেক বেশী চোখ কান খোলা রাখতে হতো। ক্লাবের অবস্থা কোনো কারণে কিছুটা তিক্ত পর্যায়ে গেলে প্রথম খোঁজ খরব নেয়া বা বিষয়টা সামাল দেওয়ার প্রথম কাজ ছিল আমার। যদি কোনো বাইকার পাঁচ ডলার ফি না দিয়েই ভিতরে ঢুকে যেতো, তাহলে তার কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব ছিল আমার। আমাকে এই দায়িত্ব দেয়ার অন্যতম কারণ ছিল আমি কোনো রকম বাকবিতণ্ডায় না গিয়েই কাজ হাসিল করে ফেলতে পারতাম। সত্যি কথা বলতে কি, রগ উলফ নাইট ক্লাবে কাজ করার সময় মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমার বিস্তর জ্ঞান হয়েছিল।

স্কি করছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

আমি বুঝতে পেরেছিলাম নাইট ক্লাবের একজন সফল নিরাপত্তা রক্ষী হতে হলে তাকে কৌশলী আর অদম্য হতে হবে। সেই সাথে আক্ষরিক ও সত্যিকার অর্থে বিনয়ী হওয়াটাও খুবই প্রয়োজন। কিছুটা বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতা করে একজন বাউন্সার (নিরাপত্তা রক্ষী) অনেক সময়ই ছোট খাটো হাতাহাতি এড়িয়ে চলতে পারে। আমার ক্ষেত্রে আমার বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতা ছিল আমার প্রধান অস্ত্র। নাইট ক্লাবে যে সব বিশাল আকৃতির বাউন্সারদের দেখা যায় তারা কিন্তু এ ধরনের ভালো কথা বা রসিকতার কখনো ধার ধারে না। কেউ বেশী মাতলামী বা ঝামেলা করলে তারা সাধারণত তার ঘাড় ধরে বা তাকে চ্যাংদোলা করে ধরে ক্লাবের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে আসে। আমি সেটা করতে পারতাম না, আর আমি সব সময়ই ঘুষাঘুষিকে এড়িয়ে চলতে চাইতাম। যখন কেউ কোন কারণে আমার দিকে ঘুষি ছুঁড়েছে, তখনই আমি খুব বলিষ্ঠভাবে কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে তার সমাধানের চেষ্টা করেছি।

এই সব মাতালদের সামলানোর জন্য আমি যে বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নিতাম তা হচ্ছে, আমি তাদের কাছে গিয়ে খুব ভালোভাবে বলতাম, ‘জনাব, তুমি নিশ্চয় আমাদের দু’জনার সম্পর্ক এমন জায়গায় নিয়ে যাবে না যাতে অন্যান্য বাউন্সাররা এসে তোমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ুক। সেজন্য তুমি যদি এখনই আমার সাথে বাইরে আসো, তাহলে আমাদের মধ্যে যা হয়েছে তা আমরা নিজেরাই মিটিয়ে ফেলতে পারি।’

মারামারি করতে একেবারে তৈরী, নিদেনপক্ষে মারামারি করার ভাব দেখানো ঐ মাতালরা তখনই আমার কথা মতো পার্কিং লট এর দিকে হাঁটা শুরু করতো। আর এর মধ্যেই সে তড়পাতে থাকতো, এমনকি একনাগাড়ে বলতে থাকতো সে কিভাবে আমাকে ধোলাই করবে বা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার শরীরে আঘাত করার মতো কোনো সুযোগ আমি কাউকে কখনও দিইনি। আমি সাধারণত তার হাতে তার জ্যাকেটটা ধরিয়ে দিয়ে তার দিকে একটা হাসি হেসে তাকে দরজার ওপারে পাঠিয়ে দিতাম। সে আবার ভেতরে আসার চেষ্টা করার আগেই আমি তাকে শুভ রাত্রি জানিয়ে দিতাম। এমন অপ্রত্যাশিত ব্যবহারে সে ক্ষেপে কিছুটা আগুন হয়ে চিৎকার করে আমাকে কাপুরুষ বলে গালি দিয়ে উঠতো।

আমিও বলে উঠতাম, ‘তুমি ঠিকই বলেছো, আমি কিন্তু মারামারি করতে চাই না। এখন বাড়ীতে গিয়ে একটা ঘুম দাও। নিশ্চয় কাল রাতে আমার আমাদের দেখা হবে।’ (চলবে)
মনিস রফিক : চলচ্চিত্রকর্মী, টরন্টো, কানাডা

Exit mobile version