শওগাত আলী সাগর: শুক্রবারের দুপুরের আগেই শহরের স্কুল কলেজগুলো কেমন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে যায়। ক্লাশ থেকে বের হয়ে ছুটতে থাকে ডাউন টাউনে- ক্ইুন্সপার্কের দিকে। কতো মানুষ জমা হয়েছিলো অন্টারিওর প্রাদেশিক সংসদ ক্ইুন্সপার্কের সামনে!
এটি তো হচ্ছে টরন্টোর চিত্র। ৮৫টিরও বেশি কানাডীয়ান শহরের আজ একই চিত্র। শিক্ষার্থীরা ক্লাশ থেকে বের হয়ে নেমে গেছে রাস্তায়। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শিক্ষকরা, অভিভাবকরা, সিনিয়র সিটিজেনরাও । প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, এনডিপি নেতা জাগমিত সিংসহ কানাডারশীর্ষ রাজনতিকরাও যোগ দিয়েছেন ছেলে মেয়েদের সাথে। কেবল সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এন্ড্রু শিয়ার নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন।
‘আমাদের ভবিষ্যৎকে বাঁচাও’ – এই আকুতি নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলো হাজার হাজার মানুষ। তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিলো নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন- সেখানে লেখা ছিলো- ‘পৃথিবীর বাইরে বসবাসের জন্য আর কোনো গ্রহ নেই’, ‘আমরা তোমাদের ক্ষমা করবো না’, ‘আমাদের ভবিষ্যৎকে বাঁচাও’, ‘আমাদের অভিভাবকরা আমাদের স্কুল থেকে চলে আসতে দিয়েছে- কাজেই বুঝো- এটা কতো গুরুত্বপূর্ণ’- এই ধরনের কতো কথা শোভা পাচ্ছিলো ছাত্র জনতার হাতে হাতে। তাদের দাবিটা তা হলে কি? তেমন কিছুই না। বিপন্ন হয়ে যাওয়া পরিবেশকে রক্ষায় যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। পরিবেশ রক্ষায় তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই কর্মসূচী। আইডিয়াটা অবশ্য সুইডেনের টিন এক্টিভিষ্ট গ্রীটা থার্ণবার্গের। গত বছরই তিনি ডাক দিয়েছিলেন- পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ক্লাশ থেকে বেরিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়ার । তার আবেদনটা ছিলো তার সমবয়সীদের প্রতি। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ, জাস্টিন ট্রুডোর মতো প্রধানমন্ত্রীও। গ্রীটা নিজেও যোগ দিয়েছেন মন্ট্রিয়লে।
কেবল কানাডাই নয়- বিশ্বির অন্তত ডজন খানেক দেশ সাড়া দিয়েছে গ্রীটার ডাকে, তারাও রাস্তায় নেমেছে- পরিবেশ রক্ষার, আগামী বিশ্বকে বাসযোগ্য রাখার দাবি নিয়ে। ১৬ বছরের তরুণী গ্রীটা থার্ণবার্গের ডাক পরিবেশ রক্ষায় উদ্বেলিত করেছে সারা বিশ্বের লাখো তরুণকে। বাংলাদেশের তরুণরা কি গ্রীটার সেই ডাক শুনতে পেয়েছিলো! (ছবিগুলো বিভিন্ন পত্রিকা থেকে নেয়া)