অনলাইন ডেস্ক : লাদাখ সীমান্ত নিয়ে আবারও উত্তপ্ত ভারত-চীন পরিস্থিতি। এবার ভারতের লাদাখের কিছু অংশ নিয়ে নতুন দুটি প্রদেশ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে চীন। প্রদেশ দুটির নাম দেয়া হয়েছে হেয়ান কাউন্টি ও হেকাং কাউন্টি। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, প্রদেশ দুটির কিছু অংশ লাদাখের মধ্যে পডেছে। বেআইনি ভাবে চীনা দখলদারিকে কোনও ভাবেও মেনে নেয়া হবে না। কূটনৈতিক স্তরে চীনকে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আবারও আলোচনায় লাদাখ। বছর চারেক আগে এই লাদাখকে নিয়ে রণসাজে সজ্জিত হয়েছিল দুই বৃহৎ প্রতিবেশী চীন আর ভারত। এবার লাদাখের কিছু অংশ নিয়ে নতুন দুটি প্রদেশ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে চীন। হেয়ান কাউন্টি ও হেকাং কাউন্টি নামে প্রদেশ দুটি চীনের উত্তর-পশ্চিমের জিনজিয়াংয় অঞ্চলে তৈরি করা হচ্ছে। তবে এই প্রদেশ দুটির বেশ কিছু অংশ ভারতের লাদাখে পড়েছে, এমন অভিযোগ করে ক্ষোভে ফুঁসছে নয়াদিল্লি।
তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, লাদাখ সীমান্তে চীনের অবৈধ দখলদারিকে ভারত কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
আমরা চীনা সরকারের নতুন দুটি কাউন্টি বা প্রদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেখেছি। তথাকথিত এই কাউন্টিগুলোর কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের ভেতরে পড়ে। আমরা কখনো এই এলাকায় চীনের অবৈধ দখলদারি স্বীকার করিনা। এই ধরনের জোরপূর্বক দখলকে ভারত কখনোই বৈধতা দেবে না। আমরা চীনা পক্ষের কাছে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছি।
গেলো বছরের অক্টোবর মাসে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে চুক্তি হয় দুদেশের। ডেমচক ও দেপসাংয়ের মতো একাধিক এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেয় উভয় পক্ষ। পরিস্থিতি তখন থেকেই শান্ত হতে থাকে। তবে সেটি বেশিদিন দীর্ঘায়িত হলো না। চীনের নতুন প্রদেশ তৈরির পদক্ষেপে আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে সীমান্ত পরিস্থিতি। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য পরিষদ এরই মধ্যে নতুন প্রদেশ বা কাউন্টি দুটির অনুমোদন দিয়েছে। নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল দুটি চীনের হোতান প্রিফেকচারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
চীন-ভারত উত্তেজনা শুরু হয় কয়েক বছর আগে। ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। রক্তক্ষয়ী ওই সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হন। পরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেও কয়েক দফা আলোচনার পর তা শান্ত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের নতুন প্রদেশ তৈরির বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্কে আবারও অবনতি ঘটাবে।
সূত্র: দ্য হিন্দু