রাশিদুল হাসান : গত ৭ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার, কানাডায় ইমিগ্রেশন, রিফুউজিস এন্ড সিটিজেনশীপ মন্ত্রী মার্ক মিলার জানান, উচ্চ শিক্ষা নিতে আগ্রহী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ব্যয় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে ফেডারেল সরকার। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিতে সরকার এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
ফলে আগামী ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যারা আবেদন করবেন তাদের আগের তুলনায় দ্বিগুণ অর্থ ব্যাংকে দেখাতে হবে। এতদিন দেশটিতে ‘স্টাডি পারমিট’ পেতে হলে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার ডলার দেখাতে হতো। এই অর্থ ছিল প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য কানাডায় জীবন যাপনের নিশ্চয়তা। কিন্তু এখন থেকে শিক্ষার্থীদের দেখাতে হবে ২০ হাজার ৬৩৫ ডলার।
যদি কানাডার প্রদেশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আসন্ন ফল সেমিস্টারের আগে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভিসা সীমিত করার কঠোর সতর্কতা দিয়েছেন মন্ত্রী মিলার।
তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। এতদিন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি ছিল। ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ার অপব্যবহার নিয়ে নিয়োগকর্তা ও প্রতিষ্ঠান, উভয়কেই সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও জানিয়েছেন মিলার।
সংবাদ সম্মেলনের সময় মিলার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ও সিস্টেমের মধ্যে জালিয়াতি এবং অপব্যবহার মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, প্রদেশগুলোতে ‘পপি মিল’ (কুকুর ছানা তৈরির কারখানা) সমতুল্য কিছু ডিপ্লোমা চালু আছে যেগুলো কেবল নামে মাত্র চলছে। তারা প্রকৃত ছাত্র তৈরি করতে পারে না।
ক্যাম্পাসের বাইরে থাকার জায়গা দিতে পারবে ও দায়িত্ব নিতে পারবে এমন নিশ্চয়তা দিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির করানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়ার জন্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান মিলার। সিবিসি জানিয়েছে, উপযুক্ত থাকার জায়গা খোঁজার ক্ষেত্রে ও বাধ্য হয়ে কষ্টের চাকরি করতে গিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তা মোকবিলা করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী মার্ক মিলার বলেন, এ কারণেই আমরা আশা করি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক তত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে পড়ার সুযোগ দেবে যত জনের থাকা-খাওয়ার সুবিধা তারা দিতে পারবে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের চাকরিতে হয়রানি সহ যে কোনো প্রতিক‚ল পরিবেশ থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মন্ত্রী। এ বিষয়ে সকল প্রদেশকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে এই কাজে প্রদেশগুলো ব্যর্থ হলে ফেডারেল সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে প্রস্তুত বলেও সতর্ক করেছেন মিলার।