অনলাইন ডেস্ক : এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র বিশেষত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নেয়ার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিসিকে অভিযুক্ত করেছেন ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফর এবং ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পরই এমন বিতর্কিত ইস্যুতে সই করেন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এই নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। এই আদেশের মাধ্যমে আইসিসির তদন্তে সহায়তাকারী ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের ওপর আর্থিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলকে উদ্দ্যেশ্য করে নেয়া আইসিসির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে সিনেটের ডেমোক্র্যাটরা আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের রিপাবলিকান-সমর্থিত প্রস্তাব আটকে দেয়। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বরে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিবাদে আনা হয়েছে। গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।

এই বিষয়ে আইসিসির মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে সংস্থাটি আগেই সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। একটি সূত্র জানায়, আইসিসি তাদের কর্মীদের বেতন তিন মাস আগেই পরিশোধ করেছে। যাতে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার ফলে কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।

গত ডিসেম্বরে আইসিসির প্রেসিডেন্ট বিচারক তোমোকো আকানে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় আইসিসির কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এবং এটি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে।’

তবে আইসিসির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষেধাজ্ঞা এটিই প্রথমবার নয়। এর আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর ‘কথিত’ যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য আইসিসির তৎকালীন প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা ও তার এক সহযোগীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বিশ্বের ১২৫টি সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী আদালত হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। যা যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও সদস্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ড বা তাদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনমূলক অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়।