Home সাহিত্য অভাগিনী বালিকা

অভাগিনী বালিকা

খুরশীদ শাম্মী

ঐ উঁচু পাহাড় ঘেঁষে
ছোট্ট এক ঝরনাধারা বহে
গন্তব্য তার মিঠা জল হ্রদে,
দিদিমা’র চোখের জল
তার কাছে হার মানে।
আমাদের গ্রাম ঠিক তার
দক্ষিণ বাঁকের উলটো পাশে।

গতর খাটে মরদ জেনানা
তিল থেকে তাল সমানে সমান
কাটে বন জীবিকার তাগিদে,
জুম চাষের শস্য তোলে ঘরে
আনন্দ যতটুকু মরদ লয় লুফে
বিন্দি অবশিষ্ট থাকে রমণীর ভাগে।

বছর বছর গৃহিণীর প্রসব
বড় হয় সংসার
বিয়োয় আথালের গাভী
শূকর, বাড়ে সম্পদ
জুম চাষে যত করে বন উজাড়
অতি খরায় হয় তারও চেয়ে
অধিক বিনাশ।
পাহাড় ধসে ক্ষত হয় জীবন
অভাব ধরে খামচিয়ে।

মরদ ঝিমোয় নেশার ঘোরে
মাছি ভনভন নষ্ট ভাবনা
অভাব ছাড়ে না সংসারের মোহ
বাড়ে গৃহ কলহ, হয় মরণের আগমন।
দাদাবাবু হয় গত, দিদিমা বিধবা
অধিকার হারায়, কর্তা আমার পিতা।
একদিন বাপুও চলে দাদাবাবুর পথ ধরে
গৃহহারা দিদিমা হ্রদ কাটে কেঁদে কেঁদে।
আমি সেই গ্রামের অভাগিনী বালিকা।

Exit mobile version