অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বাস্তবায়ন করেছে অনেক স্থাপনা প্রকল্প। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল খাতের মধ্যে পড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো। প্রকল্পগুলো বিশেষ আইনের আওতায় অনুমোদিত হওয়ায় দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যেমে ব্যয়ও বাড়ানো হয় কয়েকগুণ পর্যন্ত।
সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, গত ১৪ বছরে মোট ১২৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে জ্বালানির অভাবে এর একটি অংশ নিষ্ক্রীয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এগুলো প্রতিযোগীতামূলক দরপত্রে বাস্তবয়ন হলে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কম হতে পারত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। সম্পূর্ণকাজ শেষ করে জ্বালানির অভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে অলস বসে আছে সামিটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। পাঁচশ ৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্রটি অনুমোদন পায় ২০১৯ সালে, যখন গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছিল পুরো দেশজুড়ে।
সামিটসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মালিকানাভুক্ত কোম্পানি রিলায়েন্স এবং অন্য একটি দেশি কোম্পানি ইউনিক অনুমোদিত হয় প্রায় একই সময়ে অথচ এখনও নিশ্চয়তা দেয়া হয়নি গ্যাস সরবরাহের। ফলে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা নিয়ে অকেজো বসে আছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। সে সময় মূলত অনৈতিক সুবিধা নিতেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য শুরু করা হয়েছিল বিশাল এক প্রভাবশালী গোষ্ঠী দ্বারা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম এর মতে, ২০১২ সাল হতে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিজের স্বার্থ হাসিলের কাজে ব্যবহার করেছে তৎকালীন সরকার (আওয়ামী লীগ সরকার)। কেন্দ্রগুলো বিশেষ আইনের আওতায় বাস্তবায়ন না হলে, এর ব্যয় কম হত অন্তত ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। তার ভাষ্যমতে, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয় দেখানোয় দেশের অর্থনীতিতে বাড়তি চাপ পড়েছে।
অপরদিকে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলমের মতে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আড়ালে আইনের দ্বারা বেআইনিকে সুরক্ষা দিয়ে লুন্ঠণের ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এ প্রকল্পগুলো অর্থ আত্মসাতের জন্য করা হয়েছিল। এগুলো বাস্তবায়নের নামে গত দেড়দশকে এক নাগাড়ে শোষণ চালিয়েছে ক্ষমতায় থাকা গোষ্ঠীটি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে দ্রুত আইনের আওতায় এনে অনুমোদন দেয়া হয় অসংখ্য এবং অপ্রয়োজনীয় কেন্দ্রেগুলো। যা এখন বিশাল এক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুৎখাতের জন্য। সঠিক গুণগত মান এবং সঠিক সেবা না দিয়ে দেশের মানুষ এবং অর্থনীতিকে ব্যপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পিডিবি’র তথ্যমতে, ৮৪টি ব্যক্তি খাতের কেন্দ্রে প্রায় পৌনে ১২ হাজার এবং আমদানির আরও ২ হাজার ৬৫০ মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। যা সক্ষমতার অর্ধেকেরও ওপরে।