অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন আসা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘ভ্যাকসিন আসবে না- এই অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণ করে সময়মতো ভ্যাকসিন এসেছে, সব জেলা ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এই ভ্যাকসিন কেউ নেবে না -এই গুজব মিথ্যা প্রমাণ করে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য জনগণের যে বিপুল উৎসাহ এবং এ মাসের সাত তারিখে এটি উদ্বোধন করা হবে, তাতে মনে হয়, এই ভ্যাকসিন অপপ্রচারকারীদের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটছে।’

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে দেশি সংস্থা গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারক দলের প্রধান দুই বৈজ্ঞানিকের সঙ্গে শুভেচ্ছা বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।

এ সময় করোনা টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ আবিষ্কারক দলনেতা কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানাকে বাংলাদেশের গর্ব হিসেবে অভিহিত করে অভিনন্দন জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।

নতুন আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিন সম্পর্কে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গভ্যাক্সের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি সিঙ্গেল বা একক ডোজ টিকা। বিশ্বের অনেক টিকাই একাধিক ডোজের। কিন্তু এটি একক ডোজের হওয়ায় একবার নিলেই যথেষ্ট। এটি এখন ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের ইথিকস কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা-অনুমোদন সম্পন্ন করে অতি দ্রুত এই ভ্যাকসিন জনগণের জন্য প্রয়োগের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বিজ্ঞানীদের এ বিষয়ে গবেষণার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই দুই বৈজ্ঞানিকসহ তাদের দল সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বতঃ:প্রণোদিত হয়ে অতি অল্প সময়ে এই আবিস্কারে সক্ষম হয়েছেন বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছে এবং উপমহাদেশে আমরা দ্বিতীয় দেশ যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছি। এ কারণে বৈজ্ঞানিক কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানাকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এবং এই বৈজ্ঞানিক যারা দুজনই আমার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ রসায়নের ছাত্র, তাদের জন্য বিশেষ গর্ব অনুভব করি। তারা প্রকৃতপক্ষে দেশের গর্ব।’

‘আমরা এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, কবে বঙ্গভ্যাক্স আসবে এবং আমরা তখন অন্য দেশকেও এই ভ্যাকসিন দিয়ে সহায়তা দিতে পারবো’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের কিছু রাজনৈতিক, বুদ্ধিজীবীর বক্তব্যে ও কিছু বিদেশি মিডিয়ায় করোনাকালে অনাহারে মৃত্যুর যে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, তা মিথ্যে প্রমাণ হয়েছে। সরকার প্রায় সাত কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে, এক কোটি ২৫ লাখ খাদ্য-প্যাকেট বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ।’

বৈজ্ঞানিক কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানা তাদের বক্তব্যে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারকে আন্তর্জাতিক মানের বলে বর্ণনা করেন এবং মুজিববর্ষের মধ্যেই বঙ্গভ্যাক্স জনগণের জন্য উন্মুক্ত হবে বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (সিইউ) এর অধ্যাপক ড. মনির উদ্দীন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, সিইউ এলামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুর আহমেদ, ট্রেজারার ফখরুল আহসান, নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সিইউ এক্স স্টুডেন্টস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী, ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারপার্সন প্রীতি চক্রবর্তী, বৈজ্ঞানিক সহকারী শামীম আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল মাকসুদ, রিপন নাগ, কাকন নাগ-নাজনীন সুলতানা বৈজ্ঞানিক দম্পতির কন্যা শান্তি নাগ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।