Home কলাম অণু বাস্তব গল্প-স্মৃতি চারণ : কে যেন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন?

অণু বাস্তব গল্প-স্মৃতি চারণ : কে যেন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন?

মুরশাদ সুবহানী : নেক বছর আগের একটি বাস্তব ঘটনা মনে পড়ে গেল। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেবের শাসন আমল। তিনি বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও রাজনীতিবিদ। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাঁর শাসন আমলে আমার দেখা এই স্মৃতি নিয়ে একটি অণু গল্প লেখা যেতে পারে। শুরু হলো বাস্তব গল্প :
বাংলাদেশের পাবনা জেলার অদূরে হেমায়েতপুরে একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক হাসপাতালের নানা অনিয়ম নিয়ে দৈনিক বাংলায় বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে; বিটিভিতে ফজলে লোহানী সাহেবের ‘কোনচেন দেহি’ প্রোগ্রামে উঠে এলো পাবনা মানসিক হাসপাতালের দৃশ্য। জেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ হেলিকপটার নিয়ে পাবনা মানসিক হাসপাতালের আউটডোরের সামনের মাঠে সকালে অবতরণ করেন। খবর পেয়ে মানসিক হাসপাতালের তৎকালীন সুপারেন্টেডেন্ট পরি কি মরি করে দৌঁড়, আমার নিজের দেখা তার ফুল প্যান্ট বারবার নেমে যাচ্ছে তিনি সেটি টেনে কোমরের কাছে আনছেন আর দৌঁড়াচ্ছেন। হেলিকপটারের পাখা ঘোরার বিকট শব্দে ঐ মাঠে গোছর দেওয়া ছাগল-বকরি দড়ি ছিঁড়ে যাবি তো যা মানসিক হাসপাতালের মূল গেট দিয়ে করিডোরে বিষ্ঠা ত্যাগ করতে করতে চলে গেছে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের লোকজন, পুলিশ প্রশাসন তড়িঘড়ি করে পৌঁছে গেছেন।

লেখালেখির সাথে যুক্ত থাকায় এবং হেমায়েতপুরে মেন্টাল কোয়ার্টারে মিতা মজুমদারের সাথে আমার বন্ধন হওয়ার কারণে হাসপাতালের অনেকেই আমাকে চিনতেন। যে কারণে আমিও দ্রæত পৌঁছে গেছি। ঘন্টাকাল পরে পৌঁছালেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক বাংলার স্টাফ রিপোর্টার মির্জা শামসুল ইসলাম (প্রয়াত)।

প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মানসিক রোগীদের পুরুষ ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখেন বাথরুম-টয়লেট বিষ্টা উপচে ছেড়াব্যাড়া অবস্থা। তিনি জানতে চাইলেন, “পরিষ্কারের দায়িত্ব কার? একজন কর্মকর্তা বললেন, স্যার ওয়ার্ড মাস্টারের। প্রেসিডেন্ট তাঁকে ডাকতে বললেন, উনি কাছাকাছি ছিলেন, তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, এই সব ময়লা আপনি নিজে পরিষ্কার করবেন (মর জ্বালা)। ইতোমধ্যে মানসিক রোগীরা অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে হাসপাতালের বারান্দায় চলে এসেছেন। প্রেসিডেন্ট জানতে চাইলেন, আপনাদের খাওয়া-দাওয়া ঠিকমত দেওয়া হয়তো? একজন পুরাতন মানসিক রোগী বললেন, আইয়ূব আমলে ভালো খাবার দেওয়া হতো, এখন কে যেন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন খাবার কমে গেছে। এই কথা শুনে প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বললেন, খাদ্য- খানা তদারকি করেন কে? জানানো হলো ষ্টুয়ার্ড। ডাকুন। তিনি এলেন তাঁকে বললেন, খাবার ঠিকমত যেন দেওয়া হয় আর হাসপাতালের কর্তৃপক্ষদের বললেন, ‘আপনারা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। খাবার, ওষুধ ঠিকমত রোগীরা পাচ্ছেন কিনা?

টয়লেট পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব আপনাদের আছে। আমি দেখে এবং শুনে গেলাম এর ব্যতিক্রম হলে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #
লেখক : (শিল্প-সাহিত্যের সেবক, অন্যান্য বিষয় ভিত্তিক রাইটার, অ্যাডভোকেট জজকোর্ট, পাবনা, বাংলাদেশ। ফ্লোরিডা, ইউএস প্রবাসী। ফ্লোরিডা, ইউএসএ

Exit mobile version