সোনা কান্তি বড়ুয়া : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাতের পর বাংলাদেশে ইতিহাসের আর এক কালো দিন ২০০৪ সালে ২১শে আগস্ট বিএনপি-জামায়াত আমলে রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদের উত্থানের এক কলঙ্কিত অধ্যায়! বাংলাদেশে হিংসায় উন্মত্ত রাজনীতিতে মৃত্যুঞ্জয়ী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে! ২০০৪ সালের নারকীয় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের প্রতি আমরা গভীরভাবে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। সাথে সাথে আরো জানায় অপরাধীদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আল্লাহর রহমত ও জনগণের দোয়ায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে আমাকে রক্ষা করেন। তবে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ অনেক নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী। তাদের অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং অনেকে দেহে স্পিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।” রাজাকারগণ ইসলামের নামে একাত্তরের ২৫শে মার্চের রাত্রিতে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খানের ৯৪ হাজার সৈন্যবাহিনীকে সাহায্য করেছিল এবং বারশত মাইল দূরের বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনতাকে তিলে তিলে হত্যা করেছে।
২০২১ সালের একুশে আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী! এবং ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট এ হামলার মূল লক্ষ্য ছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা; আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা। মৃত্যুঞ্জয়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন এদেশের মানুষের জন্য। রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। আমিও বাবার মতো সেই রক্ত দিতেই বাংলাদেশে পা রেখেছি। মৃত্যুকে সামনসামনি দেখেছি। কিন্তু কোনোদিন আমি ভীত হইনি।
আমার একটাই চাওয়া এবং একটাই প্রতিজ্ঞা- যে আদর্শ নিয়ে বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন, স্বাধীনতার সেই আদর্শ বাংলার মানুষের পৌঁছে দেবো।” বিশ্বমানবতার রক্তে কোথাও জাত ধর্ম লেখা নেই। হিংসায় উন্মত্ত রাজনীতিতে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশ ঘটানো ও ধর্মীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাগরিক উদ্যোগ জোরদার করা দরকার!
বিশ্বকবির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়:
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি।
শুষ্ক হৃদয় লয়ে আছে দাঁড়াইয়ে ঊর্ধমুখে নরনারী।
না থাকে অন্ধকার, না থাকে মোহপাপ, না থাকে শোকপরিতাপ।
হৃদয় বিমল হোক, প্রাণ সবল হোক, বিঘ্ন দাও অপসারি।।
কেন এ হিংসাদ্বেষ, কেন এ ছদ্মবেশ, কেন এ মান-অভিমান।
‘বিতর বিতর’ প্রেম পাষাণহৃদয়ে, জয় জয় হোক তোমারি।।
সযত্নে তুলে রাখা বাক্স ভর্তি নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী স্মৃতি কষ্ট হলেও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি! একটা রিলেশন কখনোই আপনি একা টেনে নিয়ে যেতে পারবেন না, ছোট হতে হতে শেষ হযে যাবেন তবু সে আপনাকে বুঝতে পারবে না, স্বার্থপররা এমনই হয়। জীবন সংগ্রামে কষ্ট, না পাওয়া, হতাশা তো আসবেই মানতে হবে মানিয়ে নিতে হবে। মাঝে মাঝে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন, কখনো বা আচমকা ভেঙ্গে যাবে আলমারিতে সযতেœ তুলে রাখা বাক্স ভর্তি স্মৃতি, হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাবে তারপর কোথাও একটা অসম্ভব যন্ত্রণা অনুভূত হতে থাকবে। এক জীবনে সব ইচ্ছেগুলো পূরণ হবে এমন কখনোই হতে পারে। বরঞ্চ কিছু অপূর্ণ ইচ্ছে প্রতিনিয়ত দীর্ঘশ্বাস হয়ে ধাওয়া করবে। এইটাই স্বাভাবিক নতুবা বেচেঁ থাকাটা একঘেয়ে হয়ে যাবে। এক জীবনে সব ইচ্ছেগুলো পূরণ হবে এমন কখনোই হতে পারে। বরঞ্চ কিছু অপূর্ণ ইচ্ছে প্রতিনিয়ত দীর্ঘশ্বাস হয়ে ধাওয়া করবে। এইটাই স্বাভাবিক নতুবা বেঁচে থাকাটা একঘেয়ে হয়ে যাবে। কষ্ট হলেও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি বলা টাই উচিত! বিশ্বকবির ভাষায়:
মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান।
মেঘবরণ তুঝ, মেঘজটাজূট,
রক্তকমলকর, রক্ত-অধরপুট,
তাপবিমোচন করুণ কোর তব
মৃত্যু-অমৃত করে দান\
আকুল রাধা-রিঝ অতি জরজর,
ঝরই নয়নদউ অনুখন ঝরঝর-
তুঁহুঁ মম মাধব, তুঁহুঁ মম দোসর,
তুঁহুঁ মম তাপ ঘুচাও।
মরণ, তু আও রে আও\
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় এক আদর্শ ধারণের মাধ্যমে। ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের আদর্শে বাংলাদেশের গড়ে ওঠার বিপক্ষে যাদের অবস্থান ছিল, তাদের ষড়যন্ত্রেই ১৯৭৫ সালে সপরিবারে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁকে হত্যা করলেও হত্যা করা যায়নি তাঁর আদর্শ। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তাঁরই আদর্শের পথ ধরে। মুজিবাদর্শের বাংলাদেশ যারা চায় না তারাই বারবার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা। এর নেপথ্যে কাজ করেছে আদর্শ হত্যার চেষ্টা।
বাংলার ফুলের বৈচিত্র্য যেমন এই শরত থেকেই দেখা দিতে শুরু করে, তেমনি বাংলাদেশের রাজনীতি কলুষিতও হয়েছে এই শরতে। এক সৌম্য বিকেলে সেদিন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছিল ঢাকার রাজপথে। দিনের আলো যেন নিভে গিয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই। শরতের শুরু মানেই তো আগস্টের মধ্যভাগ। যে শরতে বাংলার আকাশের রং বদলে যায়, নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা, সেই শরতেই বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে লেখা হয়েছে অনেক বেদনার ইতিহাস। আমরা জানি, শরত মানেই তো শুভ্র প্রকৃতি, নদীতীরে কাশ আর ঘরের উঠোনে জাফরানি বোঁটার শিউলি। ২১ আগস্ট যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধা।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে এ হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এতে দলের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। শতাধিক নেতাকর্মী হতাহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেই রক্তস্নাত ভয়াল-বিভীষিকাময় দিবসটি উপলক্ষে আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের (দ্বিতীয় তলা) জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে (চট্টগ্রাম উধরহরশ আজাদী ডেস্ক। শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১)!
১৯৭৫ সালের কালো রাতের পর বাংলার ইতিহাসের এক কালো দিন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। সেদিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশে বক্তৃতা করার কথা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। দিনভর প্রস্তুতি চলছিল তার। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। দুপুরের পর থেকে সমাবেশ স্থলে কর্মীদের আগমন ঘটতে থাকে। একটু পরই আসতে শুরু করেন দলীয় নেতারা। একটা ট্রাক জোগাড় করে বানানো হয়েছিল উন্মুক্ত মঞ্চ। প্রিয় নেত্রী এলেন। উঠলেন মঞ্চে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য। তিনি বক্তৃতা শেষ করে আনতেই শুরু হলো গ্রেনেড হামলা। শেখ হাসিনাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয় বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ!
কিন্তু দেশ সর্বদা মনে থাকে এবং এখন আমাদের দেশের ট্রাজেডির কথা লিখছি।
২০০৪ সালের একুশে আগষ্টের নির্মম হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামি লীগকে বাদ দিয়ে অকৃতজ্ঞ বিএনপি ও ধর্মান্ধ জামায়াতের রাজনীতি। কিন্তু যেমন বাবা বঙ্গবন্ধু, তেমনি মেয়ে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। দূর্গম গিরী কান্তার মরু দুস্তর অসম্ভবের পারাবার জয় করে আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ আবার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ধ্বজা উড়িয়ে আমাদের স্বাধীনতার অভ্রভেদী রথের সার্থক সারথী পদে সমাসীন। জয় বাংলা!
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধ্বংস করতে জোট সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের রাজনৈতিক সূতোয় বোনা রক্তাক্ত ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্টের রক্ত ঝরা প্রতিটি গ্রেনেডের চাদর। সেই চাদরের ভাঁজে ভাঁজে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ বধের নামে বীভৎস হত্যালীলা। বাংলাদেশে বিগত জোট সরকার ২০০৪ সালের একুশের আগষ্টের হত্যাকারীদের সম্পর্কে সবকিছু জেনে ও না জানার নাটক করতে সন্ত্রাসের রাক্ষসগণকে ধর্ম ও রাজনীতির বোরকায় লুকিয়ে রেখেছে।
জনতার অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া রাষ্ট্রদ্রোহী জামাতের সাথে রাজনীতির জোট বেঁধে ছিল এবং বিগত জোট সরকার দেশের রক্ষক হয়ে ২১শে আগষ্ট ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামি লীগের নাম নিশানা মুছে দিতে দেশের ভক্ষক হ’ল কেন? জনতাসহ আমরা বিগত জোট সরকারের বিচার চাই।
২১শে আগস্ট, ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত আমলে রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদের উত্থানের এক কলঙ্কিত অধ্যায়! বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ নেতৃত্বশূন্য ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতেই ঘাতকরা চালায় এই দানবীয় হত্যাযজ্ঞ। জাতির সামনে আবারও স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধস্পৃহা। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময়ই খোদ রাজধানীতে প্রকাশ্যে চালানো হয়েছিল যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত মারণাস্ত্র গ্রেনেড দিয়ে এই ভয়াল ও বীভৎস হামলা। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে সেদিন দেশরতœ শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল ঘাতকচক্র।
দেশের নাগরিক রক্ষা করাই প্রত্যেক রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধু পাষাণ কারা ভেঙ্গে আমাদেরকে স্বাধীণতার অমৃত ভান্ড দান করেছেন। আমরা কি স্বাধীনতা অমৃতের সাধ ভোগ করতে পেরেছি? প্রশ্ন হলো, বিভিন্ন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রসহ শান্তিময় ধর্মকে জামায়াত তরোয়ালের মতো ব্যবহার করে আমাদের স্বাধীনতাসহ জাতির পিতাকে স্বপরিবারে খুন করে বাংলার জনগণ মনের ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমূলে ধ্বংস করে রাজনীতির সিংহাসন অধিকার করে দিনের পর দিন জোট সরকার উন্মত্ত তান্ডবলীলায় বাংলাদেশের মানবতার অনিষ্ঠ সাধন করেছিল।
একদা ইসলামের নাম ব্যবহার করে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে বাংলা ভাষা বন্ধ করে দিল। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তখন মদীনায় যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন তা ইসলামী রাষ্ট্র নয়, ইতিহাসের মতে তা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ বা সেকুলার, মদিনা সনদের ২৫ অনুচ্চেদে বলা হয়েছে “ইহুদিগণ ও মুসলমানগণ এক উম্মাহ (জাতি), ইহুদিদের জন্য তাদের ধর্ম, এবং মুসলমানদের জন্য তাদের ধর্ম (জনকণ্ঠ, ৫ নভেম্বর, ২০০৯)।” ধর্ম সর্বশক্তিমান। ধর্মের নাম দিয়ে দিনকে রাত, এবং রাতকে দিন করা যায়। আইন ও রাষ্ট্রের নৈতিক শৃঙ্খলা দিয়ে ধর্মের বিচার হয়। ধর্মের হাঁড়িতে রাজনীতির মজাটাই আলাদা। হজ যাত্রীর নামে সউদিতে উগ্র মৌলবাদী পাচার হচ্ছে (যায়যায়দিন, ২ ফেব্রæয়ারি, ২০০৮)। জনতাসহ আমরা হেফাজতে ইসলামের নরহত্যার বিচার চাই।
বাঙালি মন বলে,
জগতে বাঙালি মানে আলোকিত মন
অজ্ঞতাকে জয় করে লভিবে রতন।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিনে মিথ্যা খালেদার জন্মদিন,
বাবা যাঁরে ডেকেছিলে শোধ করনি সেই ঋণ।
২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ঠে খালেদা, প্রধানমন্ত্রী আপনি,
জননেত্রী হাসিনাসহ নেতা নেতৃগণকে কেন রক্ষা করনি?
তখন প্রাইম মিনিষ্টার ছিলেন জনতা রক্ষার তরে
চিরদিনের জন্যে শাসক হবে আওয়ামি লীগকে মেরে?
যে কর্ম করেছ তুমি দিন যায় কথা থাকে
কর্ম দন্ড ছুটে চলে ধরিতে তোমাকে।
বাঙালি জাতির দুর্লভ স্বাধীনতা সাত পাঁকে বাঁধা কেন? মহাবিপদের দুর্গম গিরী কান্তার মরু দুস্তর পারাবার অতিক্রম করে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ পাকিস্তানের পুঞ্জীভুত পাপরাশি থেকে মুক্তি পেতে আমার স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্মের ডাক দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। অনন্ত রক্তস্রোতে ভেসে যায় বাংলাদেশ। জোয়ার ভাটায় রাষ্ট্রদ্রোহীগণ আমার বাংলাদেশকে হত্যা করে রক্ত ঝরায়। রাষ্ট্রদ্রোহী কুলাঙ্গারগণ ধর্মের মুখোষ পরে রাজাকার হয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার পাকিস্তান বানাতে চায়।
বাংলা ভাষার জনক গৌতমবুদ্ধের অহিংসার সুধায় জনতা চর্যাপদের ঐতিহ্যে বলেন, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।” ধর্মীয় বৈরীতায় কলঙ্কিত ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল বিগত জোট সরকার। চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। ধর্ম বা রাজনীতির নাম দিয়ে নর নারী হত্যা চলছে দিনের পর দিন। মানবজাতির আশা ও হাত কি স্বার্ধান্ধ ধর্ম বেঁধে রেখেছে? বিগত ১৭ আগষ্ট ২০০৫ সালে দেশ জুড়ে ৫০০ টাইম বোমা বিস্ফোরনের শক্তি প্রদর্শনের পর বর্তমানে বিহারি এবং রোহিঙ্গা নিয়ে আরাকান মুজাহিদীন জামাতুল বাংলাদেশকে আর এক আফগানিস্তান সহ কুরুক্ষেত্র বানাতে বান্দরবানে থানছি অঞ্চলের গভীর জঙ্গলে বিপুল অস্ত্র রাশি সহ বোমা বানানোর সামগ্রী লুকিয়ে রেখেছে।
বানরের পিঠা ভাগের মত খালেদা জিয়ার জোট সরকার বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনকে শুধু টাকার জন্য ব্যবহার করেছে। সাবেক জোট সরকারের বিচার কবে? বাঙালির দুর্ভাগ্যের পরিহাসে বিগত পাঁচ বছরের পরে হাওয়া ভবনের রাজপুত্র তারেকের নেতৃত্বে লুটপাট ৪ লক্ষাধিক কোটি টাকা। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীগণ দুর্নীতির সাথে জড়িত এবং এর শেকড় খুব গভীর তলদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। দুর্নীতিবাজরা মনে করেন যুগে যুগে অর্থ, পেশী, সম্পত্তি, রাষ্ট্র ক্ষমতার জোরে তো এভাবে সত্য পালটায়। ইসলামের নামে আল্লাহের আমানত নর নারী সহ শিশু (আশরাফুল মাকলুকাত) হত্যা করেছে দিনের পর দিন।
২০০৪ সালের একুশে আগষ্টের নির্মম হত্যাকান্ডের গ্রেনেড, বিস্ফোরণ, ধোঁয়া, স্প্লিন্টার, আর্তনাদ!. একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ,অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন আমাদের নেত্রী! ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার। তারা ষড়যন্ত্র করেছে, ঘটনার নীলনকশা প্রণয়ন করেছে, হামলাকারীদের নিযুক্ত করেছে, গ্রেনেড সরবরাহ করেছে, হামলাকারীদের নিরাপদে সরে পড়ার ব্যবস্থা করেছে, বিচারকে বিভ্রান্ত করেছে, প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আড়াল করার চেষ্টা করেছে। নিজের ওপরে নিজেই বোমা মেরেছে আওয়ামী লীগ, এই নির্লজ্জ বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, খালেদা-নিজামীর তৎকালীন সরকার শুধু জজ মিয়া নাটকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। গ্রেনেড হামলার সকল আলামত নষ্ট করে দিয়েছিল যাতে করে ভবিষ্যতে আর এই গ্রেনেড হামলার কোনও আলামত খুজে পাওয়া না যায়।এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য উল্টো দায়ী করা হয়েছিল আওয়ামী লীগকেই। জজ মিয়া নাটকের সৃষ্টি করা হয়েছিল।
লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!