অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুকের ওপর ২০১১ সালে করা লাঠিপেটার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন সহকারী উপকিমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ ও সহকারী কমিশনার (এসি) বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি করেন জয়নুল আবদীন ফারুক।

আসামি হারুন অর রশীদ বর্তমানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও বিপ্লব কুমার সরকার বর্তমানে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার পদে কর্মরত আছেন।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পুলিশের লাঠিপেটায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন আবদীন ফারুক। ওই সকালে তার নেতৃত্বে বিরোধীদলের ১৫-২০ জন সংসদ সদস্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামনে জড়ো হন। ভোরবেলা তারা হেঁটে সংসদ ভবন এলাকা থেকে ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছান। পরে ফার্মগেট থেকে তারা আবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফিরে যান। এ সময় হঠাৎ একটি বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার (ডিসি) ইমাম হোসেন, এডিসি হারুন অর রশীদ ও এসি বিপ্লব কুমার সরকার সংসদ সদস্যদের সামনে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জয়নুল আবদীন ফারুকের কথা–কাটাকাটি হয়। বিপ্লব কুমার সরকার তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইফকে অশ্রাব্য গালিগালাজের পাশাপাশি তাকে থাপড়ানোর হুমকি দেন।

একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফারুকের ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান। পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাকে লাথি মারেন এবং তাকে ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় ফারুকের গেঞ্জি খুলে যায়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্যের লাঠিপেটায় তার মাথা ফেটে যায়।

ফারুকের মাথায় রক্ত দেখে নারী সংসদ সদস্যরা তাকে নিয়ে ন্যাম ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ আবার এগিয়ে এলে তিনি আত্মরক্ষায় ন্যাম ভবনের দিকে দৌড় দেন তিনি। এ সময় পুলিশও তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে ফারুককে চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান ফারুক।

এরপরে ফারুককে উদ্ধার করে বিএনপিদলীয় এমপি আসিফা আশরাফি পাপিয়ার ন্যাম ভবনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়।

২০২১ সালে সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুলআবদীন ফারুককে মারধর করেন হারুন অর রশীদসহ পুলিশ সদস্যরা

তখন এ ঘটনায় ফারুকের পক্ষে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলেও তা নেয়নি পুলিশ। পরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে করা মামলায় পুলিশের ৩০ জনের মতো সদস্যকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।

অন্যদিকে, ঘটনার দিনই পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ফারুকের বিরুদ্ধেও একটি মামলা করা হয়।