Home আন্তর্জাতিক ১৩০ বছরের রেকর্ডভাঙা বর্ষণে নাজেহাল বেইজিং

১৩০ বছরের রেকর্ডভাঙা বর্ষণে নাজেহাল বেইজিং

অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় দকসুরির প্রভাবে গত ৪ দিনে চীনের রাজধানী বেইজিং এবং সংলগ্ন প্রদেশ হেবেইয়ে যে পরিমাণ বর্ষণ হয়েছে, তা ভেঙে ফেলেছে রাজধানীতে গত ১৪০ বছরের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। চীনের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই নজিরবিহীন বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট হড়কা বান- ভূমিধসে বেইজিংয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৩ জন।

মঙ্গলবার চীনের আবহাওয়া দপ্তর বেইজিং মেটেরোলজিক্যাল সার্ভিসের কর্মকর্তরা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, আজ থেকে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে থেকে বেইজিং (তৎকালীন পিকিং) নগর কর্তৃপক্ষ শহরের আবহাওয়ার রেকর্ড রাখতে শুরু করে। পুরোনো সেই রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এর আগে বেইজিংয়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের হয়েছিল ১৮৯১ সালে।

আবহাওয়া দপ্তরের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘গত চার দিনে বেইজিংয়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৪৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার। এর আগে রাজধানীতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ছিল ৬০৯ মিলিমিটার। ১৮৯১ সালে এই রেকর্ড নথিবদ্ধ করা হয়েছিল।’

প্রসঙ্গত, গত জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত দিনের পর দিন তাপপ্রবাহে পুড়ছিল রাজধানী বেইজিং ও তার সংলগ্ন বিভিন্ন অঞ্চল। দক্ষিণ চীন সাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় দকসুরির প্রভাবে গত শনিবার ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয় বেইজিং এবং তার সংলগ্ন প্রদেশ হেবেইয়ে।

ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার ফিলিপাইন ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ফুজিয়ানে আছড়ে পড়েছিল। চীনের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত জুন ও জুলাই মাসে বেইজিংয়ে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, শনিবার থেকে পরবর্তী ৪০ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে তার চেয়েও বেশি।

মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে বেইজিং ও চীনের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন প্রদেশে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, ঘুর্ণিঝড় দকসুরির প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে চীনের অন্তত ১৩ কোটি মানুষ।

হেবেই প্রদেশের সীমান্তবর্তী বেইজিংয়ের ফ্যাংশান উপশহরের একটি পার্ক ও তার সংলগ্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে এএফপির সাংবাদিক দল। সেখানে দেখা গেছে, গোটা এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে এবং বৃষ্টির পানির প্রবাহে শহরের একটি সেতুর কাছে জমেছে অন্তত কয়েক টন আবর্জনা।

ফ্যাংশান পুলিশের কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, শহরটির অধিকাংশ এলাকার অবস্থা এখন চরম বিপদজনক।

সিনহুয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেইজিং ও হেবেইয়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইতোমধ্যে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ এবং শ্যাংজি প্রদেশ থেকে ৪২ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে এনেছে চীনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের কর্মকর্তারা।

ধীরে ধীরে অবশ্য উন্নতি হচ্ছে আবহাওয়া পরিস্থিতির। বেইজিং নগর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজধানী ও তার আশপাশের নদীগুলোর পানি প্রবাহ বিপদসীমার নিচে নেমে আসায় বুধবার রাজধানীতে থেকে ‘লাল বিপদ সংকেত’ তুলে নেওয়া হয়েছে।

Exit mobile version