অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলিদের তৈরি অবৈধ বসতিগুলো লক্ষ্য করে আকস্মিক ও অতর্কিত হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে চালানো এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০০।
এছাড়া হামাসের ভয়াবহ এই হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৬০০ ইসরায়েলি। রোববার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে হামাসের বিশাল মাল্টি-ফ্রন্ট হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে বলে চিকিৎসা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে হিব্রু ভাষার মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, শনিবার সকাল থেকে চালানো এই হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৫৯০ জন ইসরায়েলি আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
এছাড়া কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) সৈন্যদের আটক করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীটি গর্ব করে বলেছে, আটক ইসরায়েলিদের সংখ্যা ইসরায়েল যা জানে তার চেয়েও অনেক বেশি।
এদিকে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, হামলার পর আহতদের চাপ বেড়েছে দক্ষিণ ইসরায়েল ও গাজার সবগুলো হাসপাতালে। তাই এসব হাসপাতালে একটি বেডও ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৯৭ জন।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোরে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হাজার হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টিত সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। হামাসের সাথে ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে অন্তত তিন শতাধিক এবং গাজা উপত্যকায় ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলে সৈন্য পাঠাতে তিন দেশের অনুমতি চায় আফগানিস্তান?
অবশ্য হামাসের এমন হামলার পর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গাজার এ সশস্ত্র গোষ্ঠীর এতটা সংঘটিত হওয়া এবং হামলার পরিকল্পনার ব্যাপারে আগে থেকে কোনও তথ্যই জানতে পারেনি ইসরায়েল। অথচ গোয়েন্দা তথ্যের দিক দিয়ে ইসরায়েলকে বিশ্বের সেরা হিসেবে ধরা হয়।
হামাসের এ হামলার পর অবশ্য গভীর শঙ্কায় রয়েছেন গাজার বাসিন্দারাও। কারণ তারা আশঙ্কা করছেন, প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল আরও শক্তিশালী বিমান হামলা চালাবে। ইসরায়েলিদের নির্বিচার বিমান হামলায় ইতোমধ্যেই ২ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে হামাস হামলার জন্য এমন দিনকে বেছে নিয়েছে যেদিন ইসরায়েলের ইহুদিদের একটি ধর্মীয় দিন উদযাপন করার কথা ছিল। কিন্তু এমন অতর্কিত হামলায় তাদের সেসব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।