আকতার হোসেন : আমার অনেক জামা আছে। শুধু রূপকথা হলুদ জামা নেই একটাও। আজ থেকে থাকবে, হলুদ জামা অথবা হলুদ পাখি। জামাটা কোথায় রাখি? সকাল হলেই যেন বোতাম লাগাতে পারি ঠিক এতোটা নিকটে। বসন্ত এসে গেছে। অতঃপর বসন্ত রোদ্দুর এবং রোদ্দুরের কোলে জন্ম নেবে সম্পূর্ণ একটি দিন।
এমন একা ফুল আমি দেখিনি আগে। মনে হলো অনাথ ফুলটির জন্য হাঁটুতে বসে থাকতে পারি তিন পাহাড়ের মতো। আমি ফুলকে দত্তক নেবো। তারপর সারেং হবো যতদিন ইতি প্রেরকের দেখা না মেলে। উনিশ’শ বায়ান্ন সালে আমি বাইশে পড়বো। ততদিনে ফুলের মুখে ভাষা আসবে।
সুচিত্রা সেন এখন বেশ ভালো করছে। উত্তমের সাথে যায় ভালো। দেশটা ভাগ হয়ে গেল। চোখ বসন্ত টিপটিপ বৃষ্টিতে ভিজছে। শতাব্দীর ভগ্নাংশও ক্ষুদ্রতম শতাব্দী। নিষ্ফল বাতিঘর নির্দেশনা দেয় নির্ভুল, ইত্যাদি স্টিমার পার হয়ে যায় প্রতিদিন। অথচ জলেতে নেই জল।
আপনারা এতক্ষণ এক দেশে ছিল এক রাজকন্যা জাতীয় গল্প মনে করে বসে আছেন? আমিও তাই ভেবেছিলাম। তবে বলতে পারি দেশ আরেকটি ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এপার ওপার করেছে মানুষ। এমনি ভাবে ওরা দু’জন একই দেশে এলো। তারপর যে যার মতো আহার অন্বেষণে এদিক সেদিক। এদিকে ফের বসন্ত বাতাস আসে নিয়মের চাকা ঘুরে।
সমাপ্তি; ছেলেটির বয়স ছাব্বিশ, মেয়েটির তেইশ। ছেলেটি টেক্সট পাঠাল, ‘ভিভা’ দিবসের শুভেচ্ছা, আমার চকলেটে পেয়েছিস? মেয়েটির উওর, হ্যাঁ পেয়েছি আর শোন এবার কিন্তু একটু হাল্কা গোলাপ আনবি। প্রতিবার টকটকে লাল ভালো লাগেনা। ছেলেটি লিখল,ওকে। পরের লাইন, ডিনারের জন্য বনানীর সেই রেস্টুরেন্টে বুকিং দিয়েছি। সাতটার মধ্যে চলে আসিস। টুং করে আওয়াজ এলো, আচ্ছা।
‘ভিভা’ দিবসে এত অল্প কথাতে কি হয়? ছেলেটি লিখল, তোর বিশ্ব প্রেমিক দাদুর কথা বললি না, এবার ‘ভিভা’ দিবসে সে কি করলো? মেয়েটি লিখছে লম্বা ম্যাসেজ, কি আর করবে। সুটকেস খুলে হলুদ জামাটা বের করে সেটা পরে বারান্দায় বসে ট্রাফিক জ্যাম দেখছে। ছেলেটি অনেকগুলো হা হা হা লিখল। একটা ইমো দিলো। এরপর প্রশ্ন, ইস্ত্রি করে নি? সিনথিয়ার উত্তর, করবে না আবার গত রাত তো দাদুর চাঁন রাত ছিল। এক ঘণ্টা ধরে ইস্ত্রি করলো। বলতো দেখি এখন বয়স নব্বুইয়ের ওপর। এই বয়সে তাকে কি হলুদ জামাতে মানায়? নোমানের শেষ লাইন; শেখ শেখ, ওই বুড়োর কাছে থেকে শেখ, অপেক্ষা কাকে বলে।