স্বপন কুমার সিকদার : স্মৃতি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর –
“কত দিবসের তুমি বিরহের ব্যথা, কত রজনীর তুমি প্রণয়ের লাজ
সেই হাসি, সেই অশ্রু সেই-সব কথা, মধুর মুরতি ধরি দেখা দিল আজ।”
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রেমের কবি- ভালোবাসার কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে স্মৃতি –
“এমনি করে পথের বাঁকেই, রইল স্মৃতি চারটি আঁখেই
চেনার বেদন নিবিড় লেখা।।
পথিক ওগো, চলতে পথে তোমায় আমায় পথের দেখা।
ঐ দেখাতে দুইটি হিয়ায়, জাগল প্রেমর গভীর রেখা”।
স্মৃতি নিয়ে কবির অনুভূতি হলো অতীত –
“কিছু চেনা সুর, কিছু প্রিয় গান
কিছু প্রিয় মূহুর্ত, কিছু অভিমান।
কিছু চেনা ছবি, কিছু প্রিয় কবিতা
কিছু প্রিয় উপহার, কিছু অপূর্ণতা”।
স্মৃতি হল পছন্দের জিনিসগুলিকে ধরে রাখার একটি উপায়।।
স্মৃতি পাল্টায় না। স্মৃতি থেকে যায় আবহমান কাল ধরে।
কখনও আমরা কোনও মুহুর্তের আসল মান বুঝতে পারি না যতক্ষণ না বিষয়টি স্মৃতি হয়ে যায়। স্মৃতি অনেক সময় আমাদের পাগল করে তোলে। জীবন অশ্রু, হাসি এবং স্মৃতির সমাহার। অশ্রু শুকিয়ে যায়। হাসিও ম্লান হয়। কিন্তু স্মৃতি চিরকাল স্থায়ী। স্মৃতিকে আমরা সবাই সাথে নিয়ে চলি। স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য সবসময় স্মৃতি আমাদের কাছে থাকে ও আমাদের আবেগ আপ্লুত করে। কাব্যিক ভাষায়-
“কত উদাস দুপুর,বিষন্ন গোধূলী, জোছনা-মাখা রাত-
ফেলে আসা ক্ষণগুলো মুহুর্তে হৃদয়ে ভীড় করে।
আর সেই সব সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-নিশার পটভূমিতে
কোন কোন মুখ আবার অবিকল মনে জাগে,
হৃদয়ের অতলান্তে ঝড় তুলে”- শফিকুল ইসলাম।
অনুভূতিই স্মৃতি আবার স্মৃতিও অনুভূতি। স্মৃতিকে মনেই রাখা হয় ও সংরক্ষণ করা হয়। মূল্যবান স্মৃতি কখনও বিবর্ণ হয় না। স্মৃতি ভবিষ্যতেরও চাবিকাঠি। ইহা আমাদের হৃদয়কে উষ্ণ করে। কবির ভাষায়-
“আর বারংবার তোমার আশেপাশে আমায় খুঁজবে?
অথচ তুমি কোথাও আমাকে খুঁজে পাবে না?
কিন্তু আমার জীবনের সমস্ত স্মৃতিগুলোই তো-
তুমি খুঁজে পাবে শুধুই যে স্মৃতির পাতায়!” – এস. এম. মোস্তাফিজুর রহমান
স্মৃতি চিরকালই থাকবে। জীবন অর্থ হলো স্মৃতি তৈরি করা। আমরা স্মৃতি তৈরি করতেই থাকব। স্মৃতি কথা বলে যেমন-
উপরের স্মৃতি বিজড়িত ছবিটি অমিত সিকদার একটি প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় টপ একাডেমিক এ্যাচিবমেন্টের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য জনাব এ. জে. এম. নুরুদ্দিন চৌধুরীর নিকট হতে ক্রেষ্ট গ্রহণের সময় তোলা। অন্যান্য ক্রেষ্ট গুলোও পূর্বস্মৃতি বিজড়িত।
স্মৃতি অমূল্য। আমরা জীবনের কোনো কোনো জিনিস হারিয়ে ফেলতে পারি। কিন্তু আমরা সেই জিনিসগুলিকে চিরকালের জন্য আমাদের স্মৃতিতে বন্দী করতে পারি।ছোটবেলার স্মৃতি আমাদের কাছে জাজ্বল্যমান থাকে সারা জীবন। কবির ভাষায় –
“ফিরে যেতে ইচ্ছে করে গ্রামের কাদাজলে,
গ্রাম্য মাঠঘাট দাপিয়ে বেড়ানো, দুরন্ত শৈশবে।
নতুন কুঁড়ি এসে ভিড় জমাবে এ অশ্বত্থ বৃক্ষে।
আমরা শুধুই স্মৃতি হয়ে রবো স্মৃতির পাতায়” – রুহুল আমীন রৌদ্র
এটা সত্যি যে, আমাদের সমস্ত স্মৃতিই শুধু অবশিষ্ট থাকবে। স্মৃতিই সর্বদা হৃদয় দিয়ে অনুভূত হতে থাকবে। আমাদের প্রতিটি দিনকেই একটি সুন্দর দিন তথা স্মৃতি করার প্রচেষ্টা নিতে পারি। স্মৃতি ভাগ করে নেওয়া প্রয়োজন। ভাল স্মৃতিগুলি আমরা ধরে রাখতে পারি যাতে ভবিষ্যতে সত্যই খুশি হতে পারি। সুন্দর স্মৃতিগুলো হলো জীবনের দেয়া সেরা উপহার। অনেক সময় আমরা স্মৃতিতে ডুবে থাকি বা নিজেকে খুঁজতে থাকি। যেমন-
“শেয়ালের হাঁক, ঝিঁঝির ডাক, আম কাঠালের মৌ মৌ ঘ্রান
ব্যাঙের প্রেম নিবেদন, মাছ ধরা, কুহু মাতিয়েছে প্রাণ।
সোনালী সকাল, শেফালির হাসি, মাঠে মাঠে ধান, কাশবন
রুদ্ররুপে বর্ষা, কালবোশাখীর তান্ডব, তা অপার আকর্ষণ।
খুঁজি নিজেকে কখনও সেই গোধূলির রক্তিম রাগে
প্রজাপতির পাখায়, শাপলা তোলা দুপুরে, জোনাকীর ঝাঁকে”।
নিন্মের স্মৃতি বিজড়িত ‘বিজয় দিবস’-এর একটি অনুষ্ঠানের ছবিতে ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব টরন্টো. অন্টারিও’- এর নিকট থেকে টপ একাডেমিক এ্যাচিবমেন্টের জন্য প্রাপ্ত ক্রেষ্ট হাতে অমিত সিকদার (বাম দিক হতে পঞ্চম)।কানাডায় চলে আসার কয়েকদিন আগে গৃহীত স্মৃতি বিজড়িত গ্রুপ ছবিটি রাঙামাটি, বাংলাদেশ- এর পর্য্যটন কর্পোরেশন ভবনের সামনে তোলা। ছবিতে মায়ের পাশে অমিত সিকদার। অমিত ও তার মায়ের ছবিটি ইউ. এস.–এর একটি পার্কে তোলা। অমিত সিকদার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন ভাল রেজাল্টের জন্য অন্টারিও, কানাডার সবচেয়ে সন্মানজনক স্কলারশীপ কুইন্ এলিজাবেথ স্কলারশীপ (QES) লাভ করে। অমিত সিকদার তার শিক্ষা জীবনে খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরও ক্রেষ্ট, সার্টিফিকেট, স্মারক মনোগ্রাম ও প্রতীক সহ বহু পুরস্কার লাভ করে। বর্তমানে সে অষ্ট্রেলিয়ায় এম.ডি. ডিগ্রী লাভের জন্য অধ্যয়নরত। সবার কাছে সে দোয়া বা আশীর্বাদ প্রার্থী যেন সে সবার মুখ উজ্বল করা, দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা তথা সবার জন্য সুখ স্মৃতি সৃষ্টি করতে পারে। সবাই ভালো থাকুন – সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন। ধন্যবাদ।