কাউসার খান, সিডনি : অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে সদ্য ফিরে গত সোমবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তিনি অসুস্থ বোধ করলে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। গত বুধবার দুপুরে তাঁর করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। গতকালই তাঁকে বাসা থেকে স্থানীয় কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রে নিয়ে সঙ্গনিরোধ করে রাখা হয়েছে। তিনি সিডনির দক্ষিণাঞ্চল শহরতলি আর্নক্লিফে দুজন বাংলাদেশির সঙ্গে থাকতেন। অন্যদিকে, আজ সম্ভাব্য সংস্পর্শে আসা তাঁর কর্মক্ষেত্রের ৫০ জন কর্মীকে বাধ্যতামূলক সঙ্গনিরোধ করে রাখা হয়েছে। তিনি সিডনির মধ্য-পশ্চিমাঞ্চল ব্যালমেইনে অস্ট্রেলিয়ার বৃহৎ চেইন সুপার মার্কেট উলওয়ার্থসে কাজ করতেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কেরি চ্যান্ট গণমাধ্যমে বলেন, সংক্রমিত ব্যক্তি কম ঝুঁকিপূর্ণ। উলওয়ার্থসের পাওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা গেছে, সংক্রমিত ব্যক্তি কাজ করার সময় সুপার মার্কেটটিতে ভিড় ছিল না। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্র্যাড হ্যাজার্ড বলেন, ব্যালমেইনের উলওয়ার্থসে কেনাকাটা করা লোকদের সতর্ক থাকা উচিত।
আর্নক্লিফে বসবাসরত সংক্রমিত ব্যক্তির প্রতিবেশী ফখরুজ্জামান লেনিন বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি রূপ নেওয়ার আগেই তিনি বাংলাদেশে যান বিয়ে করতে। তারপর হঠাৎ করে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তিনি বাংলাদেশে আটকা পড়েন। পরে মধ্য জুনে বিশেষ ফ্লাইটে মেলবোর্নে আসেন। ওখানে ১৪ দিন হোটেল কোয়ারেন্টিন শেষ করে সিডনি ফেরেন গত শুক্রবার। বাংলাদেশে তিনি সময় কাটিয়েছেন ঢাকায়। গত বছরের অক্টোবর মাসে তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
কিছুদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। বিশেষ করে মেলবোর্নে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। আজ নতুন করে ৭৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ওই রাজ্যে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে মেলবোর্নের বেশি সংক্রমিত এলাকাগুলোকে আলাদা করে লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া, সিডনির রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসে নতুন করে ৮ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দেশটির অন্যান্য রাজ্যে এখন সংক্রমণ সংখ্যা শূন্যে অবস্থান করছে।
আজ অস্ট্রেলিয়াজুড়ে নতুন করে সংক্রমণ হয়েছে ৮৬ জনের। গত প্রায় পাঁচ মাসে দেশটিতে মোট ৭ হাজার ৯২০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৬৩ জন। এ পর্যন্ত ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণ পরীক্ষা হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ ৬ হাজার। হাসপাতালে ১৮ জন ও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছেন ৩ জন।