Home কলাম সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

পৃথিবীর দেশগুলোর মধ্যে কানাডা তার বহুজাতিক বৈশিষ্টের জন্য অনন্য। এখনকার বহুজাতিক সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন জাতির সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান পৃথিবীর মানুষের কাছে উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়। সপ্তাদশ শতাব্দীর শুরু থেকে উত্তর আমেরিকার এই ভূ-খণ্ডে ইউরোপীয় আদিবাসীদের দ্বারা অভিবাসন প্রক্রিয়া শুরুর পূর্বের হাজার হাজার বছর ধরে এই ভূমিতে বাস করেছে এই অঞ্চলের ভূমিজ সন্তানেরা। ইউরোপসহ পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের আগমনে ধীরে ধীরে আদিবাসীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। জোরপুর্বক তাদের কাছ থেকে তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়। অগ্রাহ্য করা হয় তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর অধিকারকে।

তবে মানবিক ও নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশার বিষয় হচ্ছে, বিগত কয়েক দশক ধরে কানাডার সরকার আদিবাসীদের বিষয়ে অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অন্যতম প্রধান হচ্ছে ১৯৬০ সালে আদিবাসীদের ভোটাধিকার প্রদান করা। ১৯৮২ সালে ‘ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ব্রাদারহুড’ দেশব্যাপী সকল আদিবাসী জাতিকে এক হয়ে ২১শে জুন ‘ন্যাশনাল এব্রোজিনাল সলিডারিটি ডে’ পালন করার আহ্বান জানায়। এ আহবানের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, আদিবাসী জাতিদের মধ্যে একটা ঐক্য গড়ে তোলা এবং তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার সাথে সাথে সম্মিলিতভাবে তাদের অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। ১৯৯৫ সালে ‘দ্য রয়েল কমিশন অব এব্রিজিনাল পিপলস’ ২১শে জুনকে জাতীয় আদিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা জন্য সুপারিশ করে এবং ১৯৯৬ সাল থেকে সেই দিনটি জাতীয় আদিবাসী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, জাতীয় আদিবাসী দিবস স্মরণে জুন মাসকে ‘ন্যাশনাল ইনডিজিনাস হিস্ট্রী মান্থ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ বছরের জাতীয় আদিবাসী ইতিহাস মাস’কে কানাডার ইন্ডিয়ান আবাসিক স্কুলের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শিশুদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ‘ন্যাশনাল ইনডিজিনাস হিস্ট্রী মান্থ’ এর শুরুর দিনে বলেন, ‘আমরা কানাডার ফার্স্ট নেশান্স, ইন্যুয়িট এবং মেটিস জনগণের অপূর্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা ও ঐতিহ্যকে সব সময় সম্মান করি।’ তিনি জানান, ‘আদিবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ২০২১ সালের বাজেটে ১৮ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে তাদের আবাসন, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কানাডা একটি বহুজাতির মানুষের দেশ এবং আমরা সবাই সম অধিকারে ভিত্তিতে নিজেদের ও দেশের উন্নয়নে সব সময় কাজ করে যাবো।’

‘বাংলা কাগজ’ এর পক্ষ থেকে সবাইকে ‘বাবা দিবস’ এর শুভেচ্ছা। জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে ‘বাবা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। বাবা’রা সব সময় সন্তানদের কাছে এক একটি বটবৃক্ষ হয়ে জেগে থাকেন। সন্তানদের সার্বিক মঙ্গল চিন্তায় বাবা’রা নিজেদের সব আনন্দ ত্যাগ করতে কখনও সামান্যটুকু কার্পণ্য করেন না। সময়ের নিয়মে এবং বয়সের ভারে এক সময় বাবা’রাও সন্তানদের কাছে সন্তান হয়ে যান। বয়সের ভারের বৃদ্ধ-সন্তানদের যেন সব সন্তানেরা আজীবন আগলে রাখে পরম মমতা, ভালোবাসা আর সম্মানের সাথে।

Exit mobile version