স্পোর্টস ডেস্ক : ড্যানি রোজকে চেনেন?
ইংলিশ ফুটবলের অল্পবিস্তর খোঁজখবরও যারা রাখেন তাঁরা উল্টো প্রশ্ন করতে পারেন এ কেমনতরো প্রশ্ন। রোজ তো আর যেনতেন ফুটবলার নন, রীতিমতো ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলেন। মাত্রই শেষ হওয়া মৌসুমটা নিউক্যাসলে খেললেও এই ডিফেন্ডার আসলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম শীর্ষ ক্লাব টটেনহাম হটস্পারের খেলোয়াড়। ধারে খেলতে গেছেন নিউক্যাসলে।
২৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা সেই রোজকে নাকি চেনে না যুক্তরাজ্যের পুলিশ! প্রায়ই নাকি গাড়ি আটকে তাঁকে পুলিশ জিজ্ঞেস করে এই গাড়ি কি নিজের নাকি চুরি করেছেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহেও এমন ঘটনা ঘটেছে। নিজের শহর ডনকাস্টারে রেঞ্জ রোভারটা চালাচ্ছিলেন রোজ। সে সময়ে তাঁকে আটকে নাজেহাল করে পুলিশ।
অথচ সপ্তাহে ৬০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৬৬ লাখ টাকা) আয় করা রোজের কাছে ১ লাখ পাউন্ডের রেঞ্জ রোভার কেনা কোনো ব্যাপারই না। গায়ের রঙের কারণেই যে বারবার এমন ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ রোজ সেটি ভালো করেই জানেন। ৩০ বছর বয়সী ফুটবলার জানালেন শুধু পুলিশের কাছ থেকেই নয়, এমন বর্ণবাদী আচরণ তিনি রেলওয়ের কর্মচারীদের কাছ থেকেও পেয়েছেন। রেলের প্রথম শ্রেণির কামরায় উঠলে নাকি প্রশ্নবোধক চেহারায় তাকিয়ে টিকিট দেখতে চান রেল কর্মচারী।
দিন কয়েক আগে রিচি স্যাডলিয়ারের দ্য প্লেয়ার্স চেয়ার নামের এক পডকাস্টে অংশ নেন রোজ। সেখানেই তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন, ‘গত সপ্তাহে পুলিশ আমাকে আটকায়। এই ঝামেলা অবশ্য ডনকাস্টারে গেলে নিয়মিতই পোহাতে হয়। আর প্রতিবারই ‘‘এই গাড়ি কি চুরি করা? এই গাড়ি কোথায় পেয়েছেন? এখানে কী করছেন? এই গাড়িটা যে কিনেছেন সেটির প্রমাণ দেখাতে পারবেন?’’’
গত জানুয়ারিতে টটেনহাম থেকে ধারে নিউক্যাসলে যাওয়া রোজ জানালেন গত এক যুগ ধরেই এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁকে, ‘১৮ বছর বয়সে যখন গাড়ি চালাতে শুরু করলাম তখন থেকেই এমনটা হচ্ছে। আর যতবারই এমন হয় আমি শুধুই হাসি কারণ আমি তো জানিই এরপর কী হতে যাচ্ছে।’
রেলের ঘটনারও বিস্তারিত বলেছেন রোজ, ‘রেলেরও নিয়মিত ঘটনা এটি। একবার ব্যাগ নিয়ে রেলে উঠতে না উঠতেই অ্যাটেনডেন্ট জিজ্ঞেস করে বসল, ‘‘আপনি কি জানেন এটা প্রথম শ্রেণির কামরা?’’ আমি বললাম, ‘‘জানি, তো কী হয়েছে?’’, সে উত্তর দিল, ‘‘ঠিক আছে, টিকিটটা দেখি তাহলে?’’’
বর্ণবাদী মানসিকতা থেকেই যে এমনটা করেছিলেন সেই রেল কর্মচারী সেটিও উদাহরণ দিয়ে বললেন রোজ, ‘আমি ভদ্রমহিলাকে (অ্যাটেনডেন্ট) টিকিট দেখালাম। মিথ্যা বলছি না ঠিক সে সময়ে দুজন শ্বেতাঙ্গ আমার পরপরই রেলে উঠল কিন্তু সেই সে তাঁদের কিছুই জিজ্ঞেস করল না। এরপর আমি বললাম, ‘‘আপনি কি ওদের কাছে টিকিট চাইবেন না?’’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘‘ওহ না, দরকার নেই।’’’
গত সপ্তাহে ডনকাস্টারের মায়ের বাড়ির কাছে গাড়ি পার্ক করেছিলেন রোজ। সে সময়ে নাকি একেবারে দাঙ্গা পুলিশ এসে আটকায় তাঁকে, ‘গত সপ্তাহে মায়ের বাড়িতে গেলাম। কার পার্কে গাড়ি থামালাম। এ সময়ে দাঙ্গা পুলিশের একটি ও তিনটি সাধারণ পুলিশের গাড়ি এসে হাজির। আমাকে তাঁরা প্রশ্ন করতে শুরু করে। তাঁরা বলেন তাঁদের কাছে তথ্য আছে ঠিকমতো একটি গাড়ি নিয়ম মেনে চলেনি।’
রোজ তখন পরিচয়পত্র দেখান। তবে তাতে মন গলেনি পুলিশের। রোজ মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন কি না সেই পরীক্ষা করে তবেই ছাড়েন তাঁকে।