অনলাইন ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসা ভাইদের পরিচালিত শ্রীলঙ্কা পিপলস ফ্রন্ট দেশটির সাধারণ নির্বাচনে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয় লাভ করেছে। দেশটির নির্বাচন কমিশন গতকাল এ ঘোষণা দিয়েছে। এই জয় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোথাবায়া রাজাপাকসাকে সংবিধান সংশোধন এবং তার কার্যনির্বাহী ক্ষমতা আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গোথাবায়ার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাড়িয়ে তার ক্ষমতা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় সংসদীয় আসনে ১ শ’ ৫০ টি আসনের মধ্যে ১ শ’ ৪৫ টি লাভ করে এবং তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসার প্রধানমন্ত্রী পদ নিশ্চিত করে। তবে, সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ঘোষণার জন্য ও সংবিধান সংশোধন করার জন্য দলটির অতিরিক্ত ৫ টি আসন প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে তারা সহজেই অন্য দলের সাথে একটি জোট গঠন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৫ সালের নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপাকসাকে হারানোর পর, নতুন সরকার একটি সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করে যা প্রেসিডেন্টের উপর দ্বি-মেয়াদী সীমা আরোপ করে, রাষ্ট্রপক্ষের বিচার থেকে দায়মুক্তি প্রত্যাহার করে এবং প্রেসিডেন্ট নিয়োগকে সংসদীয় তদারকির অধীন করে দেয়।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি এখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এমন এক সময়ে যখন দেশের বিরোধী দল, আন্দোলনকর্মীরা এবং সংবাদমাধ্যম সরকারকে সেন্সরশিপ এবং সমালোচকদের তীব্র ভয় দেখানোর জন্য অভিযুক্ত করছে, রাজাপাকসার সংবিধান সংশোধন এই সংস্কারগুলিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেবে। এর আগে রাজাপাকসার সর্বশেষ শাসনামলে বিরোধীরা তার সরকারের বিরুদ্ধে গভীর দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তামিল টাইগার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার কারণে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনে। জাতিসংঘের অনুমান, সেসময় প্রায় ৪০ হাজার বেসামরিক মানুষ মারা গিয়েছিল। রাজাপাকসা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভ‚ত হত্যাকান্ড এবং মতবিরোধ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের চুপ করিয়ে রাখতে ব্যাপক অত্যাচারেরও অভিযোগ উঠেছিল।
এই নির্বাচনে রাজাপাকসাদের আপাত সাফল্যের কারণ হিসেবে সফলভাবে করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রায় ২১.৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার দ্বীপপুঞ্জ শ্রীলঙ্কাতে কোভিড-১৯ সংক্রমণে এপর্যন্ত মাত্র ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত এপ্রিল মাসে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকার মনোনিবেশ করায় দুবার পিছিয়ে দেওয়া হয়। এবছর দেশব্যাপী নির্বাচন এবং সফল মহামারী নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা মুষ্টিমেয় দেশগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে।