অনলাইন ডেস্ক : ভয়াবহ শৈত্যঝড়ের কবলে পড়েছে আমেরিকা। নজিরবিহীন এই ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি। তীব্র তুষার ও হিমশীতল ঠাণ্ডায় এরই মধ্যে দেশটির ৯ রাজ্যে কমপক্ষে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে।

এর মধ্যে কলেরাডোতে মৃতের সংখ্যা চারজন এবং নিউ ইয়র্কে ১২ জনে গিয়ে ঠেকেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউ ইয়র্কের বাফেলো শহর। শুধুমাত্র এই শহরেই মারা গেছেন ৭ জন। পশ্চিম নিউইয়র্কের শহরটি তুষারঝড়ে বিধ্বস্ত। বিদ্যুৎ সংযোগসহ সেখানের জরুরি পরিসেবাগুলো বন্ধ রয়েছে।
সবমিলিয়ে বড়দিনের ছুটিতে উৎসবের বদলে স্থবির হয়ে গেছে আমেরিকার জনজীবন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বড়দিনে ৫৫ মিলিয়নের বেশি আমেরিকান শীতল বায়ু সতর্কতার অধীনে দিন কাটিয়েছে।

এবারের ঝড় বাফেলোর ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ও ভয়াবহ বলে আখ্যা দিয়েছেন হিসেবে নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল।

পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বাফেলোতে আট ফুট (২.৪ মিটার) তুষারপাত হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। খুব বিপজ্জনক জীবন-হুমকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বাফেলোর বাসিন্দারা। এলাকার যে কাউকে বাড়ি থেকে বের না হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২২ এর ঝড়ের ভয়াবহতা ১৯৭৭ সালের তুষারঝড়কেও অতিক্রম করেছে, যা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাফেলোতে তুষারঝড়ে গাড়ির ভেতর আটকা পড়ে মারা গেছেন কয়েকজন এবং তুষারআবৃত রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে কয়েকজনকে। বাফেলো ছাড়াও ভেরমন্ট, ওহাইও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতে ঠাণ্ডা ও ঝড়ে মানুষ মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা পড়েছে পশ্চিম দিকের রাজ্য মন্টানাতে। এ রাজ্যে তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে গেছে।

আমেরিকায় গত পাঁচ দিন ধরে এই তুষারঝড় চলছে। এতে বেশ কয়েকটি রাজ্যের ২ লাখের বেশি মানুষ ক্রিসমাসের সকালে বিদ্যুৎ ছাড়াই জেগে উঠে। অনেকেই ছুটির ভ্রমণের পরিকল্পনা স্থগিত করে বাড়িতেই অবস্থান করছেন। হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

অন্যদিকে একই ঝড় আঘাত হেনেছে কানাডার কিউবেক এবং ওন্টারিও রাজ্যে। সেখানেও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রবিবার কিউবেকের ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন ছিল। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স