স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচজুড়ে ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি। লাল কার্ড দেখলেন দু দলের দুই ফুটবলার। দুই দল ১০ জনে পরিণত হলো। ব্রাজিলের গোলরক্ষক এলিসন বেকারও লাল কার্ড দেখলেন। কিন্তু ভিএআরের সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল হয়ে যায়। এরপরও শেষ পর্যন্ত কোনো দলই জিততে পারলো না। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের নানা ঘটনাবহুল এই ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-১ গোলে রুখে দিলো ইকুয়েডর।
ম্যাচের মাত্র ৬ মিনিটে গোল করে সেলেসাওদের এগিয়ে দেন ক্যাসেমিরো। পরে ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে গিয়ে সমতা টানেন ফেলিক্স তোরেস। চোটের কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার। তার জায়গায় সম্প্রতি বার্সেলোনা থেকে ধারে অ্যাস্টন ভিলায় খেলতে যাওয়া কৌতিনিওকে নিয়ে মাঠে নামে সেলেসাওরা।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ৮৫০ মিটার উঁচুতে খেলতে নেমে মোট ৩২টি ফাউল করেছেন দুই দলের ফুটবলাররা। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই মোইজেজ কাইসেদোকে বাজে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের এমারসন। এর রেশ যেন চলে পুরো ম্যাচজুড়ে।
যদিও ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন ক্যাসেমিরো। ফেলিপে কৌতিনিওর বলে হেড করেন ম্যাথিউস কুনহা। সেটা কোনোরকমে বাঁচান ইকুয়েডর গোলরক্ষক। বল পেয়ে ডান পায়ের আলতো টেকায় গোলবারের কাছ থেকে নেওয়া শটে গোল করেন ক্যাসেমিরো।
ম্যাচের ২০তম মিনিটে এমারসন ফাউল করেন আরও একটি। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। এটি হতে পারতো ইকুয়েডরের জন্য আশীর্বাদের। কিন্তু এর পাঁচ মিনিট আগেই লাল কার্ড পায় তারাও।
প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের চ্যালেঞ্জ সামলে এগিয়ে যান ব্রাজিলের কুনহা। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে বল ক্লিয়ার করতে শট নেন আলেকসান্দের ডমিঙ্গেজ। কিন্তু তা পা বলে তো লাগেইনি উল্টো ডি-বক্সের মুখে ছুটে আসা প্রতিপক্ষের গলায় বুট দিয়ে আঘাত করে বসেন তিনি। ভিএআরের সাহায্যে তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
২৬তম মিনিটে ব্রাজিল পড়েছিল আরও বড় বিপদে। ৯ জনের দল হতে বসেছিল তারা। প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ রুখতে ডি-বক্স থেকে বের হয়ে শট নেন এলিসন। কিন্তু একটু পরই তার পা লাগে এনের ভ্যালেন্সিয়ার মাথায়। লাল কার্ড দেখান রেফারি। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে যায় ভিএআরের সাহায্যে।
প্রথমার্ধে আর কোনো গোলের দেখা পায়নি দু দল। কয়েকটি আক্রমণ যদিও তৈরি হয়েছিল। প্রথমার্ধের শেষে ১০ মিনিট সময় যোগ করেন রেফারি। প্রথমার্ধে কিছুটা অগোছালো থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে বেশ ভালো কয়েকটি আক্রমণ করে ইকুয়েডর।
৭৫তম মিনিটে এসে গোলের দেখা পায় তারা। নসালা প্লাতার কর্নারে হেডে গোলটি করেন ফেলিক্স তোরেস। ম্যাচের শেষদিকে আর কেউ উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায়নি। তবে নাটকীয়তা শেষ হয়নি তখনও। পাঁচ মিনিট যোগ করা অতিরিক্ত সময় টানতে হয় ১২ মিনিট পর্যন্ত।
যোগ করা সময়ে এসে ব্রাজিলের গোলরক্ষক বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার প্রেসিয়াদোর মুখে আঘাত করেন। এরপর তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি, ইকুয়েডরকে দেন পেনাল্টি। কিন্তু সিদ্ধান্ত দুটিই পরে বদলে গেছে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিল ১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও তিন ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। ১৫ ম্যাচে সাত জয় ও তিন ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে ইকুয়েডর।