রীনা গুলশান
এখানে অন্ধকার, বড় বেশি ঘন ঘোর আন্ধার লোকালয়।
আলো চাই, চলো রৌদ্রালোকিত কোনো উঠোনে দাঁড়াই,
চলো আলোতে হারাই।
জীবনের গাঢ় তমসায় বিপদে বিপথে বড় বিপন্ন আমি
আমার জটিলতর ছায়াদের কণ্ঠে শুধু হাহাকার ধবনিত এখন
সেখানে জ্যোৎস্না নেই, সূর্যের ঝলমলে আলোর কল্লোল নেই
রামধনু ডুরে শাড়ি নেই, মুক্তি মোক্ষ নেই, নির্বাণ লাভ নেই-
হয়তো কোথাও তারা আজও লুকিয়ে আছে
বহুকাল যেন আমি খুঁজে খুঁজে খুঁজে খুঁজে
খুঁজে আর পাই না তাদের।
জীবনের তমসাবৃত উজ্জ্বল রোদের নিয়নে আমি দেখি-
চলিষ্ণু বাসের হ্যান্ডেল ঝুলে থাকা বিপন্ন যাত্রীর চোখ
হেল্পারের শেষরহিত তারস্বর চিৎকার কোলাহল,
ট্রাকে চাপা পড়া রক্ত-মাংস দলিত মথিত ছাত্রের মৃতদেহ
কোনো এক আধুনিক প্রসাধন বিপণীতে যেন
শোকেসে শেলফে র্যাকে
থরে থরে সাজানো আছে মানুষের ঘৃণা ক্ষোভ,
জ্বরা ও মৃত্যু আর-
সীমাহীন হতাশার ঘোলা ধোয়া।
আমি কি কোনদিন আর এইসব ছাড়া কিছু দেখতে পাবো না?
আমি কি পাবো না আর কখনোই এই ঠোঁটে
পূর্ব-সন্ধ্যার খুব নরম রঙের লাল প্রেমের চুমুটি?
ললাটের ঘাম মুছে দেয়া জননীর স্নেহের আঁচল?
কালোর শরীর, আন্ধারে তাই আমার বড় বেশি হয়-
এখানে অন্ধকার, বড় বেশি ঘন ঘোর আন্ধার লোকালয়।
আলো চাই, চলো রৌদ্রালোকিত কোনো উঠোনে দাঁড়াই,
চলো আলোতে হারাই।